Ajker Patrika

তিন বছরে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ৫৯১ জন: সিজিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২২, ১৩: ৪৩
তিন বছরে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ৫৯১ জন: সিজিএস

গত তিন বছরে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু, কথিত বন্ধুকযুদ্ধ ও ক্রসফায়ারসহ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৫৬টি জেলার ৫৯১ জন। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সিজিএস বলছে, এই ৫৯১ জনের মধ্যে ৮৬ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে কথিত বন্ধুকযুদ্ধে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যরা সরাসরি এসব ঘটনায় জড়িত ছিল বলে মন্তব্য করেছে সিজিএস।

‘নির্বিচার প্রাণনাশ? বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে আজ শনিবার সকালে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং সিজিএসের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য ড. আলী রীয়াজ। সাতটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের আলোকে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যার ক্ষেত্রে ২৫৯টি হত্যাকাণ্ডে পুলিশ এবং ১৬২টি হত্যাকাণ্ডে র‍্যাব জড়িত ছিল। আর বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ব্যক্তির সংখ্যা কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি, ২৩৮ জন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত বছরের ডিসেম্বরে পর্যন্ত দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ৫৯১ ব্যক্তি। এর মধ্যে ২০২০ সালের জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি ৪৯ জন মারা গেছেন। এসব বিচারবহির্ভূত হত্যার ৮৬ দশমিক ৬৩ শতাংশই ছিল বন্ধুকযুদ্ধে। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৬টিতে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় মারা গেছে সবচেয়ে বেশি ২৩৮ জন। আর ঢাকায় এরকম ঘটনা ঘটেছে ৫৮ জনের সঙ্গে। 

সিজিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ৪৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ ঘটনায় পুলিশ এবং ২৭ দশমিক ৪১ শতাংশ ঘটনায় র‍্যাব জড়িত ছিল। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২১২ জন, র‍্যাবের সঙ্গে ১৬৫ জন, বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ২০১৯ সালে বন্ধুকযুদ্ধে মারা যান ৩০৬ জন। গবেষণার এই সময়ে সর্বশেষ গত বছরের ১২ ডিসেম্বরে সাতক্ষীরায় পুলিশি হেফাজতে বাবলু সরকার নামে এক ব্যক্তি মারা যান। আর সর্বপ্রথম ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি কুমিল্লা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান সাইফুল নামের এক ব্যক্তি। 

প্রতিবেদনে এই সংকট মোকাবিলায় স্বাধীন কমিশন গঠন করে গত এক দশক ধরে চলা এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার প্রবণতা বন্ধসহ ৫ দফা সুপারিশ করা হয়। 

ওয়েবিনিয়ারে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘বোঝাই যায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। শুধু নির্বাচনই নয় বিভিন্ন উৎসবের সময়েও লোকদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত তাঁরা পদক, পদোন্নতি পান। তাই তাঁরা আরও বেশি এ কাজটা করেন।’ 

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ওয়েবিনারে বলেন, ‘এসব ঘটনায় র‍্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়ছে। নিষেধাজ্ঞার পর দুজন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। তবে রাষ্ট্র ও সমাজ টিকে থাকলে এগুলোর বিচার করতেই হবে।’ 

সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দনবাস চান পুতিন—ন্যাটো তো নয়ই, পশ্চিমা সেনাও থাকবে না ইউক্রেনে

তথ্য যাচাইয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করবেন—ইউটিউব চ্যানেলে সিইসির বার্তা

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেবা বন্ধের ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত