Ajker Patrika

টিকার কথা বলে ডেকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা

প্রতিনিধি, রায়পুরা (নরসিংদী) 
টিকার কথা বলে ডেকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা

নরসিংদীর রায়পুরায় এক নারীকে টিকা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার উত্তরবাখর নগর ইউনিয়নের লোচনপুর দেবর ও ননদদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন অগ্নিদগ্ধ পারভিন বেগম (৩০)। 

পারভিন বেগম জানায়, উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের সোবানপুর গ্রামে দানা মিয়ার মেয়ে পারভিন বেগমের সঙ্গে মরজাল ইউনিয়নের পাহাড় মরজাল এলাকার প্রবাসী জাকির হোসেনের হয়। প্রায় ২ বছর আগে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

জাকির হোসেন ও পারভীন আক্তার দম্পতি ১২ বছর বয়সী জেমি নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মেয়েকে নিয়ে পারভীন তাঁর বাপের বাড়ি উপজেলার বাঁশগাড়ি এলাকায় থাকতেন। 

পারভিন বেগম অভিযোগ করে বলেন, গতকাল শনিবার দুপুরে টিকা দেওয়ার কথা বলে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন সাবেক শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে সন্ধ্যার পর তাঁর মুখ বেঁধে রায়পুরার লোচনপুর এলাকার একটি নির্জন বাঁশঝাড়ের নিচে ধর্ষণ করা হয়। পরে গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। চিৎকার শুনে স্থানীয় এলাকাবাসী রাত ১০টায় তাঁকে উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। 

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রেফার্ড করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক। কিন্তু তাঁর স্বজনদের কেউ সেখানে উপস্থিত না থাকায় পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। 

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত ডা: এ. কে. এম. রেজাউল ইসলাম খান জানায় পারভিন বেগমের শরীরে পায়ের আঙুল থেকে গলা পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে। 

এই ঘটনায় আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে রায়পুরা থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই নারীর ছোট ভাই আকরাম হোসেন। মামলা হওয়ার আগেই এই ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করে রায়পুরা থানার পুলিশ। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, রায়পুরার মরজাল এলাকার হাফিজ উদ্দিন মুন্সীর ছেলে আলী হোসেন (৩২) এবং তাঁর ভাগনে কাজী আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. শাহরিয়ার (১৮)। 

এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আলী হোসেনের মা হাজেরা বেগম আজকের পত্রিকাকে তিনি জানান, পারভীনের সঙ্গে আমার ছেলের ২ বছর আগেই ডিভোর্স হয়ে গেছে। আমার ছেলের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর সঙ্গে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল আমরা এর কিছুই জানি না। তবে আমার ছেলে ও নাতিকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাঁরা নির্দোষ। সুষ্ঠু তদন্তের মধ্যমে সঠিক বিচার করার দাবি জানাচ্ছি। 

জাকিরের বড় ভাবি রহিমা বলেন, সে এখানে থাকা কালীন সময়ই অনৈতিক কাজে লিপ্ত ছিল। এ জন্য গ্রাম থেকে তাঁকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। আমাদের ফাঁসানো জন্য তাঁর এই সাজানো নাটক। 
 
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার বলেন, মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলী হোসেন ও শাহরিয়ার নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সত্য ঘটনা উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। 

রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক দেব দুলাল দে জানান, গতকাল রাত একটার দিকে ওই নারীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা রাজধানী ঢাকায় পাঠিয়েছি। এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই নারীর ছোট ভাই আকরাম হোসেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে উদ্বেগ শশী থারুরের, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

‘বেয়াদবি ছুটায় দেব’: সরি বলতে অসুবিধা নেই, বললেন সেই জামায়াত নেতা

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির হোতা মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু গ্রেপ্তার

নতুন ট্রেন্ড ন্যানো ব্যানানা, নিজের থ্রিডি ফিগারিন বানাবেন যেভাবে

ইসরায়েলের হামলার কী জবাব হবে—আরব-ইসলামিক সম্মেলন ডাকল কাতার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত