Ajker Patrika

টিএসসিতে ফেলে যাওয়া সেই তরুণী বিয়ের আশ্বাসে পটুয়াখালী থেকে আসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টিএসসিতে ফেলে যাওয়া সেই তরুণী বিয়ের আশ্বাসে পটুয়াখালী থেকে আসেন

দলবদ্ধ ধর্ষণের পর তরুণীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ফেলে যাওয়ার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাঁদের মধ্যে মনির হোসেন শুভ নামে একজনকে ওয়ারি থেকে আটক করেছে র‍্যাব। রাজধানীর বাসাবো এলাকায় অভিযান চালিয়ে আল আমিন ওরফে বিল্লাল ও সবুজকে আটক করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। এই ঘটনায় আরও দুজনকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। 

মনির হোসেন শুভকে গ্রেপ্তারের পর র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে লালবাগ কেল্লার মোড়ে শুভ ও আল আমিন ওই তরুণীর মুখে রুমাল চেপে রিকশায় তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। সেখানে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে চার দিন আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন। পরে গতকাল বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে অসুস্থ অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যান। একজন পথচারী তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।’ 

তবে পুলিশের বর্ণনায় ঘটনাটি আলাদা। অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের ভারপ্রাপ্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেন শাহ সাংবাদিকদের জানান, ফেসবুকে মনির হোসেন শুভর সঙ্গে তরুণীর পরিচয়। এক মাসের সম্পর্কের পর বিয়ের আশ্বাসে ঢাকায় আসেন তিনি। এসেই দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার। চিকিৎসাধীন ওই তরুণী জানিয়েছেন, পটুয়াখালী থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকায় এসেছেন। এর আগে বাবা-মায়ের সঙ্গে হাজারীবাগ এলাকায় থেকেছেন। শুভর ডাকেই আসেন। সদরঘাট থেকে লালবাগের একটি বাসায় নিয়ে যান শুভ। এটাই তাঁদের প্রথম দেখা। সেখানে তাঁদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর শুভর সঙ্গে ওই বাসায় তাঁর বন্ধু বিল্লাল আসেন। শুভ তাঁকে আল আমিন নামে পরিচয় করিয়ে দেন। তরুণীকে শুভ বলেন, তাঁরা আল আমিনের বাসায় গিয়ে থাকবেন। এরপর বিল্লালের হাতে তাঁকে তুলে দেন। বিল্লাল তাঁকে গুলিস্তান নিয়ে যান। সেখান থেকে বাসাবোতে মেসে নিয়ে যান। পুরো বাসাটিই মেস। সেখানে আল আমিন ওরফে বিল্লাল মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। পরে সে বাসায় সবুজ নামে একজন আসেন। সবুজও তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শারীরিকভাবে আহত করেন। এরপর বিল্লালের আরও দুই বন্ধু আসেন। তাঁরাও মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বাধার কারণে তাঁরাও ব্যর্থ হন। তবে ওই তরুণী এই যুবকদের নাম বলতে পারেননি। এরপর ১৩ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি শুভ বিল্লালের বাসায় আসেন। মেয়েটিকে বাড়ি ফিরে যেতে চাপ দেন। কিন্তু বিয়ের আশ্বাসে ডেকে এনে ধর্ষণের প্রতিবাদ করেন তিনি। তখন শুভ ও বিল্লাল তাঁকে মারধর করেন। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ফেলে চলে যান বিল্লাল। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করে। 

এ ঘটনায় ডিএমপির তিন বিভাগের পাঁচটি থানা কাজ করছে জানিয়ে শাহেন শাহ জানান, পুলিশের হাতে আটক দুই যুবক দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন জড়িত। তাঁদের আটক করতে কাজ করছে পুলিশ। আটক সবাই নানা কাজ করে। তাঁদের নির্দিষ্ট পেশা নেই।। বিগত দিনে কোনো অপরাধ করেছি কি না খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত