Ajker Patrika

ছিনতাইকারীকে ধরতে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিলেন চবি ছাত্রী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ছিনতাইকারীকে ধরতে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিলেন চবি ছাত্রী

আজ রোববার সকাল সোয়া ৮টা। নগরীর বটতলী রেলস্টেশন পেরিয়ে দ্রুতগতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উদ্দেশে ছুটছে শাটল ট্রেন। পেছন থেকে দ্বিতীয় বগিতে বসে মোবাইল ফোনে পড়তে পড়তে ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নন্দিতা দাশ। হঠাৎ বিপত্তি। 

চলন্ত ট্রেনে এক যুবক উঠে ছোঁ-মেরে নন্দিতার মোবাইল নিয়ে লাফ দিয়ে নেমে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছিনতাইকারীকে ধরতে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দেন নন্দিতাও। মারাত্মকভাবে মাথায় ও হাতে আঘাত পান তিনি। 

ছিনতাইকারীকে ধরতে না পারলেও তাঁর এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন অনেকেই। এমন সাহসিকতার জন্য বাহবা পাচ্ছেন নন্দিতা। 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে নন্দিতা দাশ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরীক্ষা ছিল। সে জন্য ৮টার শাটল ট্রেনে ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় আমি মোবাইলে পড়ছিলাম। বটতলী থেকে ট্রেন ছেড়ে কদমতলী রেলক্রসিংয়ে আসা মাত্রই এক যুবক চলন্ত ট্রেনে উঠে পড়েন। হঠাৎ তিনি আমার মোবাইল টান দিয়ে আবার নেমে যান। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতবিহ্বল হয়ে গেলেও ছিনতাইকারীকে ধরতে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিই। তবে তাঁকে ধরতে পারিনি। সে দৌড়ে চলে যায়। এ সময় আমি মাথায় ও হাতে মারাত্মকভাবে আঘাত পাই। পরীক্ষা থাকায় সাতপাঁচ না ভেবে পরীক্ষা দিতে আবার ক্যাম্পাসে চলে যাই। আমি থানায় অভিযোগ করব।’ 

নন্দিতার সাহসিকতার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী সবুজ দাশ বলেন, ‘আপু ছিনতাইকারীকে ধরতে যেভাবে ঝুঁকি নিয়েছেন সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা তাঁর ব্যাগ ও অন্যান্য কাগজপত্র ষোলোশহর পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। তবে আমরা শাটলে নিরাপত্তা চাই। পাথর নিক্ষেপ, যৌন হয়রানি, বহিরাগতদের উৎপাতের পর এবার ছিনতাইও শুরু হলো। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের আর শাটলে চলা লাগবে না!’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ষোলোশহর রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা তাঁর ব্যাগ ও জিনিসপত্র রেলওয়ে থানায় পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে তাঁর ভাই নিয়ে গেছেন।’ 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আমাদের জানানো হয়নি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’ 

শাটল ট্রেনে এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরীক্ষার হলে থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমরা তাঁর ইনস্টিটিউটের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত