Ajker Patrika

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে হত্যা, আদালতে ছেলের স্বীকারোক্তি

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে হত্যা, আদালতে ছেলের স্বীকারোক্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামে বৃদ্ধা জোহরা খাতুন হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছেন পুলিশ। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য বৃদ্ধা মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন ছেলে জমির খাঁ। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এসব কথা জানিয়েছে অভিযুক্ত ছেলে। 

গতকাল সোমবার দুপুরে থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল ইসলামের আদালতে মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জমির। স্বীকারোক্তি শেষে জমির খাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে পাঠানো হয়। 

আখাউড়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। 

ওসি আজকের পত্রিকাকে জানান, আখাউড়া পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামে বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ জমির খাঁর সঙ্গে তাঁর চাচা প্রতিবেশী বজলু খাঁ দুই পক্ষের মাঝে বিরোধ চলে আসছে। আদালতের রায়ে জমির খার পক্ষকে বাড়ির সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সম্পত্তির দখল বুঝে পেলেও প্রতিপক্ষ বজলু খাঁ ও তাঁর লোকজন সম্পত্তি ফিরে পেতে জমির খাঁকে মিথ্যা মামলা হামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। ওই সব কারণে প্রতিপক্ষ বজলু খাঁকে ফাঁসাতে পরিকল্পনা করেন জমির খাঁ। 

গত রোববার সকাল থেকে সম্পত্তির জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। দুপুরের দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে জমির খাঁ তাঁর বৃদ্ধা মাকে দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় হত্যার পর রক্তমাখা দা ঘরের সিলিংয়ের ওপর রেখে দেন জমির খা। নিহতের রক্তাক্ত মরদেহ ওই ঘরের এক কোণে পড়ে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। মরদেহ দেখে পুলিশসহ স্থানীয় লোকজনের হত্যা নিয়ে সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে। 

রোববার সন্ধ্যায় নিহত জোহরার ছেলে জমির খাঁসহ প্রতিপক্ষের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের কথাবার্তায় গরমিল থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জমির খাঁ সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তাঁর বৃদ্ধা মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। 

পরে গতকাল সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল ইসলামের আদালতে ঘাতক জমির খাঁ তাঁর মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তি শেষে জমির খাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ ঈশান জানান, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ দেখে অনেকেই সন্দেহ করেছিল। পুলিশ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করায় অনেক নিরীহ মানুষ হয়রানি থেকে বেঁচে গেল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত