Ajker Patrika

৩ বছর পর মালিকানা ফেরত

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৫
৩ বছর পর মালিকানা ফেরত

দেবহাটায় জবরদখলের তিন বছর পর ৩৬ বিঘার মৎস্যঘের ফিরে পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ হোসেন আশু। তবে অভিযুক্ত কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল রায়ের বিরুদ্ধে ঘের ছেড়ে দেওয়ার পূর্বে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মাছ বিক্রি ও ঘেরের ২৫ লাখ টাকার সম্পদ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত বৃহস্পতিবার ৩৬ বিঘা ওই সম্পত্তির মূল মালিক দেবহাটার কুলিয়ার আশু মার্কেটের মালিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ হোসেন আশুর পক্ষে জমির দখল বুঝে নিয়েছেন তাঁর আত্মীয় সাজ্জাদুল ইসলাম।

ঘের দখলের ঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ হোসেন আশু বাদী হয়ে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলে প্রায় দুই মাস আগে অভিযুক্ত অমল রায়কে কোর্ট ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত রয়েছেন।

টানা তিন বছর পর সম্প্রতি প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও ওই সম্পত্তির মালিকপক্ষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা সদর ও দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত লাগোয়া চরবালিথা গ্রামে জবরদখলকৃত ৩৬ বিঘা সম্পত্তি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তবে দখল ছাড়ার আগে অমল রায় ও তাঁর লোকজন ৩৬ বিঘা জমিতে শেষবারের মতো জাল টেনে কয়েক লাখ টাকার মাছ এবং সেখানে থাকা ২৫ লাখ টাকার মাছের পোনা উৎপাদনে ব্যবহৃত মালামাল ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ মালিকপক্ষের। এমনকি তাঁরা দখল ছাড়ার পূর্বে প্রজেক্টটির প্রায় প্রত্যেকটি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন সাবেক কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল রায়ের বিরুদ্ধে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ হোসেন আশু জানান, ২০১৬ সালে তার মালিকানাধীন চরবালিথা মৌজার ৩৬ বিঘা জমি মৎস্য প্রোজেক্ট নির্মাণের জন্য বার্ষিক ৮ লাখ টাকা চুক্তিতে খুলনার ব্যবসায়ী তৈয়বুর রহমানের কাছে ৫ বছরের জন্য লিজ দেন তিনি। পরবর্তীতে সেখানে লিজগ্রহীতা খুলনার তৈয়বুর রহমাসহ কয়েকজন মিলে সেখানে একটি মৎস্য প্রজেক্ট স্থাপন করেন। ২০১৯ সালে ওই প্রজেক্টটি থেকে লিজগ্রহীতাদের বিতাড়িত করে কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল রায় ওই মৎস্য প্রজেক্ট দখল করে নেন এবং জোর করে গত কয়েক বছর ধরে সেখানে উৎপাদিত মাছ ও অন্যান্য সম্পদ ভোগদখল করে আসছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আশু।

জমির লিজগ্রহীতাদের এক অংশীদার শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, ‘প্রোজেক্টটি তৈরি ও সেখানে মাছ ছাড়ার পর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল রায় শৌখিন মাছ শিকারের কথা বলে সেখানে যান। মাছ শিকার শেষে তিনি ওই প্রোজেক্টের বিষয়ে সবকিছু শুনে সেখানে পার্টনারশিপ হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন। এরপর দেড় কোটি টাকা মূল্যের প্রোজেক্টে তিনি ৭০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন এবং বাকি টাকা পর্যায়ক্রমে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক মাস যেতে না যেতেই জেলার বিভিন্ন দাগি আসামিদের দিয়ে আমাদের প্রজেক্ট থেকে চলে যেতে হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বারবার তিনি মিথ্যা মামলা ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিতে থাকলে বাধ্য হয়ে প্রাণভয়ে আমরা প্রজেক্টটি থেকে চলে আসি।’ এ ঘটনায় তাঁরা অমল রায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক কোর্ট ইন্সপেক্টর অমল রায়ের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত