নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। তাঁদের ফেরত আনতে সহায়তা করায় দেশে উল্টো মামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের শিকার হচ্ছেন এনজিওকর্মীরা। দালালের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে কাজের বদলে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা এই মানুষদের পাশে দাঁড়ানোও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সহযোগিতা করায় তাঁদের বিরুদ্ধে উল্টো মানব পাচারের মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন এনজিওকর্মীরা।
আজ সোমবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে বিভিন্ন এনজিও এবং সিআইডি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় একাধিক এনজিও কর্মকর্তা এমন অভিযোগ করেন।
‘মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করা: গো এবং এনজিওর ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান।
কর্মশালায় কীভাবে পাচার রোধ করা যায়, মানুষ যাতে পাচারের শিকার না হয়, পাচার হওয়া ব্যক্তিদের ফেরত আনতে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও এ ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করতে পারে, তারা সিআইডিকে কীভাবে সহায়তা করতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে সিআইডির করণীয় কী—এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কর্মশালার শুরুতে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন এনজিওর কর্মকর্তারা তাঁদের অভিব্যক্তি তুলে ধরেন।
২০ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিইও হওয়া যাবে না।
পাচার হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফেরত আনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে ধরে একটি উদাহরণ দিয়ে তাঁরা বলেন, দিনাজপুরের একটি ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ভুক্তভোগীদের ফেরাতে সহায়তা করতে গিয়ে ফেঁসে যান মামলার জালে।
তাঁদের অভিযোগ, ভুক্তভোগীরা তাঁদের ফেরত আনতে এনজিও কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন। কর্মকর্তারা বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অফিসকে অবহিত করেন। কিন্তু সরকারি ওই সংস্থা ও সংস্থার কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীকে ফেরত আনা তো দূরের কথা, কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না। আবার কয়েকটি এনজিও উদ্যোগ নিয়ে পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের ফেরত আনায় উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। পাচারের শিকার অনেক ভুক্তভোগী মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করলেও পুলিশ আদালতে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণাদি জোগাড় করে দিতে পারছে না, দুর্বল অভিযোগপত্র দিচ্ছে। ফলে আদম ব্যবসায়ীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে।
পাচারের শিকার ব্যক্তিদের বিভিন্ন সময় ফেরত আনতে গিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা পোহাতে হয়েছে বিভিন্ন এনজিও সংশ্লিষ্টদের।
‘রাইটস যশোর’-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘প্রলোভনে পড়ে যারা পাচারের শিকার হয়, তারা মূল পাচারকারীকে চিনে না। ক্যারিয়ার ওভারসিজ নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি বিদেশে লোক পাঠানো নিয়ে অনেক অনিয়ম করে। অনৈতিক লেনদেন করে। বায়রা এদের শেল্টার দেয়। আমরা (এনজিও) কিছু বলতে গেলে বায়রা মিলিয়ে দেয়।’
পাচারের শিকার ভুক্তভোগীকে আনতে গিয়ে উল্টো মামলা খেতে হয়েছে জানিয়ে বিনয় কৃষ্ণ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। বর্তমানে দুবাইয়ে দুজন এবং কিরগিজস্তানে দুজন মোট চারজন ব্যক্তি পাচার হয়ে সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারা ও তাদের স্বজনেরা আমাকে অনুরোধ করছে তাদের দেশে ফেরত আনতে। তাদের ফেরত আনতে দূতাবাস, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও পুলিশের আইজি বরাবর আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি। দেড় লাখ টাকা হলে দুবাই থেকে দুজনকে ফেরত আনা সম্ভব, তাও অবৈধভাবে। তাহলে দূতাবাসকে জানিয়ে কী লাভ হলো? মোবারক নামের এক দালালের মারফত এরা সে দেশে গিয়েছে। মোবারকের পাসপোর্ট আছে, তার বাড়ি দিনাজপুর। অথচ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ইশরাত শামীম একটি সংস্থার জন্য সীমান্তে মানবপাচার নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করতে গিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাঁর এনজিও পাচারের শিকার এক ভুক্তভোগীকে দেশে ফেরত আনে। এ ক্ষেত্রে দিনাজপুরের একটি ওয়ার্ডের নারী মেম্বার তাঁদের সহায়তা করেন। কিন্তু কদিন পর সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ওই নারী মেম্বারকে পাচারের মামলার আসামি করে। এতে ভয় পেয়ে যান তিনি।
এই ঘটনা তুলে ধরে ইশরাত শামীম বলেন, ‘পুলিশের ভূমিকা এমন হলে কেউ ভুক্তভোগীকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসবে না। পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে পারলে অনেক ভুক্তভোগী রক্ষা পাবে। তবে ভুক্তভোগীকে উল্টো দোষ দিলে, মানসিক নির্যাতন করলে তা চরম অমানবিক হবে।’
শামীম আরও বলেন, ‘রিক্রুটিং এজেন্সি আবার ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করে। ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে এমন অনেকে পাচারের শিকার হয়। কিন্তু আমাদের টপ লেভেলে যেতে হবে।’ আরেকটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এক শিশুকে পাঁচ বছর বয়সে ভারতে বিক্রি করে দেয় পাচারকারী চক্র। ১৭ বছর বয়সে তাকে দেশে ফেরত আনা হয়। আমাদের দেশে এমন অনেক শিশু নিখোঁজ হয়। থানায় জিডি/মামলাও হয়। কিন্তু উদ্ধার হয় কম। যেসব এলাকায় মানব পাচার বেশি হয়, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর থাকা উচিত।’
এ সময় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেসের (ব্লাস্ট) উপপরিচালক মো. বরকত আলী বলেন, ‘পাচারের শিকার হয়েও অনেক ভুক্তভোগী পাচারকারীর সঙ্গে আপস করে ফেলে। কিন্তু আইনে তাকে সহায়তা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তাকে আইনি সহায়তা যদি নিশ্চিত করা যায় এবং তাকে যদি সচেতন করা যায় যে, আইন ও আমরা তোমার সঙ্গে রয়েছি। তোমার কোনো ভয় নেই। তাহলে কোনো ভুক্তভোগীই পাচারচক্রের সঙ্গে আর আপস করবে না।’
মুক্ত আলোচনায় আরও একাধিক এনজিও কর্মকর্তা তাঁদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন, পুলিশি তদন্ত, অভিযোগপত্র দুর্বল। আদালতে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণাদি হাজির করতে না পারায় পাচারকারী জামিন পেয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। বিচারিক পর্যায়েও ভুক্তভোগীকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্রলোভনে যাতে না পড়ে, তাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাচারের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সেদিকে আরও খেয়াল রাখতে হবে। আবার সরকারিভাবে বিদেশ গিয়েও অনেকে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাকে যে কাজ দেবে বলে বিদেশ নেওয়া হয়েছে, সেখানে নিয়ে সেই কাজ দেওয়া হচ্ছে না। তারা আবার দেশে ফেরত আসতে চাইলেও এজেন্সিগুলো ফেরত আনছে না।’
সভাপতির বক্তব্যে সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পাচারের ক্ষেত্রে প্রধান কাজ হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ করা। তথ্য কিংবা ডকুমেন্টস ছাড়া কারও দায় প্রমাণ করা খুব কঠিন। বাদী ঠিক থাকে না, আপস করে ফেলে। তাহলে আমরা কাকে নিয়ে লড়াই করব! ভুক্তভোগীর টার্গেটই থাকে টাকা ফেরত পাওয়ার। সে ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নামকাওয়াস্তে একটি জিডি করে। পরে টাকা পেয়ে গেলে আর মামলায় যায় না। কিন্তু আমরা যদি দেখি, এখানে একটি চক্র কাজ করেছে। তাহলে সেই চক্রকে ছাড় দেওয়া হয় না। মামলা করাই হয়। আবার ভুক্তভোগীকে দেশে ফেরত আনলেও এসব প্রমাণ করতে হয়।’
দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। তাঁদের ফেরত আনতে সহায়তা করায় দেশে উল্টো মামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের শিকার হচ্ছেন এনজিওকর্মীরা। দালালের মাধ্যমে বিদেশে গিয়ে কাজের বদলে নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা এই মানুষদের পাশে দাঁড়ানোও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সহযোগিতা করায় তাঁদের বিরুদ্ধে উল্টো মানব পাচারের মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন এনজিওকর্মীরা।
আজ সোমবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে বিভিন্ন এনজিও এবং সিআইডি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় একাধিক এনজিও কর্মকর্তা এমন অভিযোগ করেন।
‘মানব পাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করা: গো এবং এনজিওর ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআইডির সিরিয়াস ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান।
কর্মশালায় কীভাবে পাচার রোধ করা যায়, মানুষ যাতে পাচারের শিকার না হয়, পাচার হওয়া ব্যক্তিদের ফেরত আনতে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও এ ক্ষেত্রে কী ভূমিকা পালন করতে পারে, তারা সিআইডিকে কীভাবে সহায়তা করতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে সিআইডির করণীয় কী—এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কর্মশালার শুরুতে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন এনজিওর কর্মকর্তারা তাঁদের অভিব্যক্তি তুলে ধরেন।
২০ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিইও হওয়া যাবে না।
পাচার হওয়া ব্যক্তিদের দেশে ফেরত আনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে ধরে একটি উদাহরণ দিয়ে তাঁরা বলেন, দিনাজপুরের একটি ইউনিয়ন পরিষদের নারী সদস্য ভুক্তভোগীদের ফেরাতে সহায়তা করতে গিয়ে ফেঁসে যান মামলার জালে।
তাঁদের অভিযোগ, ভুক্তভোগীরা তাঁদের ফেরত আনতে এনজিও কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন। কর্মকর্তারা বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অফিসকে অবহিত করেন। কিন্তু সরকারি ওই সংস্থা ও সংস্থার কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীকে ফেরত আনা তো দূরের কথা, কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না। আবার কয়েকটি এনজিও উদ্যোগ নিয়ে পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের ফেরত আনায় উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে। পাচারের শিকার অনেক ভুক্তভোগী মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করলেও পুলিশ আদালতে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণাদি জোগাড় করে দিতে পারছে না, দুর্বল অভিযোগপত্র দিচ্ছে। ফলে আদম ব্যবসায়ীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে।
পাচারের শিকার ব্যক্তিদের বিভিন্ন সময় ফেরত আনতে গিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা পোহাতে হয়েছে বিভিন্ন এনজিও সংশ্লিষ্টদের।
‘রাইটস যশোর’-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘প্রলোভনে পড়ে যারা পাচারের শিকার হয়, তারা মূল পাচারকারীকে চিনে না। ক্যারিয়ার ওভারসিজ নামের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি বিদেশে লোক পাঠানো নিয়ে অনেক অনিয়ম করে। অনৈতিক লেনদেন করে। বায়রা এদের শেল্টার দেয়। আমরা (এনজিও) কিছু বলতে গেলে বায়রা মিলিয়ে দেয়।’
পাচারের শিকার ভুক্তভোগীকে আনতে গিয়ে উল্টো মামলা খেতে হয়েছে জানিয়ে বিনয় কৃষ্ণ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। বর্তমানে দুবাইয়ে দুজন এবং কিরগিজস্তানে দুজন মোট চারজন ব্যক্তি পাচার হয়ে সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারা ও তাদের স্বজনেরা আমাকে অনুরোধ করছে তাদের দেশে ফেরত আনতে। তাদের ফেরত আনতে দূতাবাস, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও পুলিশের আইজি বরাবর আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি। দেড় লাখ টাকা হলে দুবাই থেকে দুজনকে ফেরত আনা সম্ভব, তাও অবৈধভাবে। তাহলে দূতাবাসকে জানিয়ে কী লাভ হলো? মোবারক নামের এক দালালের মারফত এরা সে দেশে গিয়েছে। মোবারকের পাসপোর্ট আছে, তার বাড়ি দিনাজপুর। অথচ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ইশরাত শামীম একটি সংস্থার জন্য সীমান্তে মানবপাচার নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করতে গিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তাঁর এনজিও পাচারের শিকার এক ভুক্তভোগীকে দেশে ফেরত আনে। এ ক্ষেত্রে দিনাজপুরের একটি ওয়ার্ডের নারী মেম্বার তাঁদের সহায়তা করেন। কিন্তু কদিন পর সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ওই নারী মেম্বারকে পাচারের মামলার আসামি করে। এতে ভয় পেয়ে যান তিনি।
এই ঘটনা তুলে ধরে ইশরাত শামীম বলেন, ‘পুলিশের ভূমিকা এমন হলে কেউ ভুক্তভোগীকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসবে না। পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনতে পারলে অনেক ভুক্তভোগী রক্ষা পাবে। তবে ভুক্তভোগীকে উল্টো দোষ দিলে, মানসিক নির্যাতন করলে তা চরম অমানবিক হবে।’
শামীম আরও বলেন, ‘রিক্রুটিং এজেন্সি আবার ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করে। ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে এমন অনেকে পাচারের শিকার হয়। কিন্তু আমাদের টপ লেভেলে যেতে হবে।’ আরেকটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এক শিশুকে পাঁচ বছর বয়সে ভারতে বিক্রি করে দেয় পাচারকারী চক্র। ১৭ বছর বয়সে তাকে দেশে ফেরত আনা হয়। আমাদের দেশে এমন অনেক শিশু নিখোঁজ হয়। থানায় জিডি/মামলাও হয়। কিন্তু উদ্ধার হয় কম। যেসব এলাকায় মানব পাচার বেশি হয়, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর থাকা উচিত।’
এ সময় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেসের (ব্লাস্ট) উপপরিচালক মো. বরকত আলী বলেন, ‘পাচারের শিকার হয়েও অনেক ভুক্তভোগী পাচারকারীর সঙ্গে আপস করে ফেলে। কিন্তু আইনে তাকে সহায়তা দেওয়ার বিধান রয়েছে। তাকে আইনি সহায়তা যদি নিশ্চিত করা যায় এবং তাকে যদি সচেতন করা যায় যে, আইন ও আমরা তোমার সঙ্গে রয়েছি। তোমার কোনো ভয় নেই। তাহলে কোনো ভুক্তভোগীই পাচারচক্রের সঙ্গে আর আপস করবে না।’
মুক্ত আলোচনায় আরও একাধিক এনজিও কর্মকর্তা তাঁদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন, পুলিশি তদন্ত, অভিযোগপত্র দুর্বল। আদালতে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণাদি হাজির করতে না পারায় পাচারকারী জামিন পেয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। বিচারিক পর্যায়েও ভুক্তভোগীকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্রলোভনে যাতে না পড়ে, তাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাচারের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সেদিকে আরও খেয়াল রাখতে হবে। আবার সরকারিভাবে বিদেশ গিয়েও অনেকে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাকে যে কাজ দেবে বলে বিদেশ নেওয়া হয়েছে, সেখানে নিয়ে সেই কাজ দেওয়া হচ্ছে না। তারা আবার দেশে ফেরত আসতে চাইলেও এজেন্সিগুলো ফেরত আনছে না।’
সভাপতির বক্তব্যে সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘পাচারের ক্ষেত্রে প্রধান কাজ হচ্ছে তথ্য সংগ্রহ করা। তথ্য কিংবা ডকুমেন্টস ছাড়া কারও দায় প্রমাণ করা খুব কঠিন। বাদী ঠিক থাকে না, আপস করে ফেলে। তাহলে আমরা কাকে নিয়ে লড়াই করব! ভুক্তভোগীর টার্গেটই থাকে টাকা ফেরত পাওয়ার। সে ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নামকাওয়াস্তে একটি জিডি করে। পরে টাকা পেয়ে গেলে আর মামলায় যায় না। কিন্তু আমরা যদি দেখি, এখানে একটি চক্র কাজ করেছে। তাহলে সেই চক্রকে ছাড় দেওয়া হয় না। মামলা করাই হয়। আবার ভুক্তভোগীকে দেশে ফেরত আনলেও এসব প্রমাণ করতে হয়।’
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মহসিন মিয়াকে (৪৬) দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ইন্টারপোলের রেড নোটিশের ভিত্তিতে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
২০ দিন আগেসবার সামনে পিটিয়ে হত্যা, পাথরে শরীর থেঁতলে দেওয়া, নিজের বাড়ির সামনে গুলি করে পায়ের রগ কেটে হত্যা, অস্ত্র দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাই, চাঁদা না পেয়ে গুলি—এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা কয়েক দিন ধরে বেশ আলোচিত। কিন্তু পুলিশ অনেকটাই নির্বিকার। প্রতিটি ঘটনার সিটিটিভি ফুটেজ থাকলেও সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
১৪ জুলাই ২০২৫এবার রাজধানীর শ্যামলীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মানিব্যাগ, কাঁধের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা এক যুবকের পোশাক ও জুতা খুলে নিয়ে গেছে।
১২ জুলাই ২০২৫মোবাইল চুরির ঘটনায় বোরহান নামের এক তরুণকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ছেলেকে বাঁচাতে বোরহানের বাবা রুবির পরিবারের সাহায্য চান। বসে এক গ্রাম্য সালিস। তবে সেই সালিসে কোনো মীমাংসা হয় না। এরই মধ্য নিখোঁজ হয়ে যান বোরহান। এতে এলাকায় রব পড়ে বোরহানকে হত্যা ও লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। তখন বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দা
০৫ জুলাই ২০২৫