Ajker Patrika

সাজার নীতিমালা আজও হয়নি

এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০: ১৯
সাজার নীতিমালা আজও হয়নি

ফৌজদারি অপরাধে সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে স্পষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। ফলে একই অপরাধে ভিন্ন ভিন্ন সাজা হয়। রায় প্রদানের ক্ষেত্রে বিচারককে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিচারক অনিশ্চিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাজা প্রদানে পরিচালিত হতে পারেন বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি এ ধরনের রায়ের কারণে ন্যায়বিচারবঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বলে মত দেন তাঁরা।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (খ) ধারা অনুযায়ী, চোরাকারবারির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। তবে দুই বছরের কম নয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২) ধারা অনুযায়ী, মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা, সহায়তা বা ষড়যন্ত্র করলে ৪ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। দণ্ডবিধির ৩৯৫ ধারায় ডাকাতির সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ড। শুধু তিনটি ঘটনাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাজা কেবল একটিতে নির্দিষ্ট না করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে আইনে। অর্থাৎ একই অপরাধে চাইলে ভিন্ন ভিন্ন বিচারক ভিন্ন ভিন্ন সাজা দিতে পারেন।

দেশে যাবজ্জীবন সাজা বলতে ঠিক কত বছর, তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে আপিল বিভাগ বিষয়টি স্পষ্ট করে দেন। আপিল বিভাগ রায়ে বলেন, দণ্ডবিধির ৪৫,৫৩, ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (ক) ধারা একসঙ্গে মিলিয়ে পড়লে এটা স্পষ্ট, ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ ৩০ বছর’; যা ‘রেয়াতের’ কারণে সাড়ে ২২ বছর হয়। তবে অন্যান্য উন্নত দেশে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা ৮ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত সাজা ভোগ করে প্যারোল সুবিধা পান। এ ক্ষেত্রে মুক্তির পর দণ্ডপ্রাপ্তদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। আচরণ সন্তোষজনক মনে হলে অনেক ক্ষেত্রেই স্থায়ী মুক্তি মেলে।

উন্নত দেশগুলোতে সাজার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। সেখানে অপরাধীর বয়স, অপরাধের ধরন, অতীত জীবন, সামাজিক অবস্থান, অপরাধের কারণে সমাজে প্রভাব, সংশোধন হওয়ার সম্ভাবনা, মানসিক অবস্থা, অভ্যাসগত নাকি প্রথমবার অপরাধ—এমন নানা বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নীতিমালাই হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি নীতিমালা দিয়ে আবদ্ধ করার বিষয় নয়। অপরাধের ধরন, অপরাধের সংশ্লিষ্টতার ওপর নির্ভর করেই বিচারক সাজা দেন। এটা বিচারকের স্বাধীনতা।’ যদিও ‘আতাউর রহমান মৃধা বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয় গত বছরের জুলাইতে। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সাজার বিষয়ে একটি নীতিমালা বা আইনি কাঠামো থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় সামঞ্জস্য রাখা সম্ভব নয়।

আপিল বিভাগের এমন রায়ের পর অভিন্ন সাজা প্রদানে নীতিমালা করতে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে অভিন্ন ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সাজার চর্চা নিশ্চিতে সাজা প্রদানে নীতিমালা প্রণয়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ওই রুল জারি করা হয়। তবে এখনো কোনো জবাব দেননি সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজকের পত্রিকাকে বলেন, নীতিমালা না থাকায় বিচারককে অনিশ্চিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাজা প্রদানে পরিচালিত করে, যা সংবিধানের ২৭,৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশেই সাজার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সে দেশের আইন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন, কমিশন এই বিষয়ে কাজ করছে। নীতিমালা হলে সাজার তারতম্য কমবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।

এদিকে অভিন্ন সাজার বিষয়ে নীতিমালা করার জন্য আইন কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান কমিশনের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদ ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, দ্বিবার্ষিক কর্মপরিকল্পনা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর। যেখানে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় সাজাবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নে সম্ভাব্যতা যাচাই ও সুপারিশমালা তৈরি করতে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হলে একজন কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান মোরশেদ ইমতিয়াজ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত