এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
ফৌজদারি অপরাধে সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে স্পষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। ফলে একই অপরাধে ভিন্ন ভিন্ন সাজা হয়। রায় প্রদানের ক্ষেত্রে বিচারককে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিচারক অনিশ্চিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাজা প্রদানে পরিচালিত হতে পারেন বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি এ ধরনের রায়ের কারণে ন্যায়বিচারবঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বলে মত দেন তাঁরা।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (খ) ধারা অনুযায়ী, চোরাকারবারির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। তবে দুই বছরের কম নয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২) ধারা অনুযায়ী, মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা, সহায়তা বা ষড়যন্ত্র করলে ৪ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। দণ্ডবিধির ৩৯৫ ধারায় ডাকাতির সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ড। শুধু তিনটি ঘটনাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাজা কেবল একটিতে নির্দিষ্ট না করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে আইনে। অর্থাৎ একই অপরাধে চাইলে ভিন্ন ভিন্ন বিচারক ভিন্ন ভিন্ন সাজা দিতে পারেন।
দেশে যাবজ্জীবন সাজা বলতে ঠিক কত বছর, তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে আপিল বিভাগ বিষয়টি স্পষ্ট করে দেন। আপিল বিভাগ রায়ে বলেন, দণ্ডবিধির ৪৫,৫৩, ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (ক) ধারা একসঙ্গে মিলিয়ে পড়লে এটা স্পষ্ট, ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ ৩০ বছর’; যা ‘রেয়াতের’ কারণে সাড়ে ২২ বছর হয়। তবে অন্যান্য উন্নত দেশে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা ৮ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত সাজা ভোগ করে প্যারোল সুবিধা পান। এ ক্ষেত্রে মুক্তির পর দণ্ডপ্রাপ্তদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। আচরণ সন্তোষজনক মনে হলে অনেক ক্ষেত্রেই স্থায়ী মুক্তি মেলে।
উন্নত দেশগুলোতে সাজার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। সেখানে অপরাধীর বয়স, অপরাধের ধরন, অতীত জীবন, সামাজিক অবস্থান, অপরাধের কারণে সমাজে প্রভাব, সংশোধন হওয়ার সম্ভাবনা, মানসিক অবস্থা, অভ্যাসগত নাকি প্রথমবার অপরাধ—এমন নানা বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নীতিমালাই হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি নীতিমালা দিয়ে আবদ্ধ করার বিষয় নয়। অপরাধের ধরন, অপরাধের সংশ্লিষ্টতার ওপর নির্ভর করেই বিচারক সাজা দেন। এটা বিচারকের স্বাধীনতা।’ যদিও ‘আতাউর রহমান মৃধা বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয় গত বছরের জুলাইতে। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সাজার বিষয়ে একটি নীতিমালা বা আইনি কাঠামো থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় সামঞ্জস্য রাখা সম্ভব নয়।
আপিল বিভাগের এমন রায়ের পর অভিন্ন সাজা প্রদানে নীতিমালা করতে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে অভিন্ন ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সাজার চর্চা নিশ্চিতে সাজা প্রদানে নীতিমালা প্রণয়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ওই রুল জারি করা হয়। তবে এখনো কোনো জবাব দেননি সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজকের পত্রিকাকে বলেন, নীতিমালা না থাকায় বিচারককে অনিশ্চিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাজা প্রদানে পরিচালিত করে, যা সংবিধানের ২৭,৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশেই সাজার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সে দেশের আইন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন, কমিশন এই বিষয়ে কাজ করছে। নীতিমালা হলে সাজার তারতম্য কমবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
এদিকে অভিন্ন সাজার বিষয়ে নীতিমালা করার জন্য আইন কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান কমিশনের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদ ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, দ্বিবার্ষিক কর্মপরিকল্পনা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর। যেখানে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় সাজাবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নে সম্ভাব্যতা যাচাই ও সুপারিশমালা তৈরি করতে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হলে একজন কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান মোরশেদ ইমতিয়াজ।
ফৌজদারি অপরাধে সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে স্পষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। ফলে একই অপরাধে ভিন্ন ভিন্ন সাজা হয়। রায় প্রদানের ক্ষেত্রে বিচারককে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিচারক অনিশ্চিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাজা প্রদানে পরিচালিত হতে পারেন বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি এ ধরনের রায়ের কারণে ন্যায়বিচারবঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বলে মত দেন তাঁরা।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (খ) ধারা অনুযায়ী, চোরাকারবারির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড। তবে দুই বছরের কম নয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ (২) ধারা অনুযায়ী, মানি লন্ডারিং অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা, সহায়তা বা ষড়যন্ত্র করলে ৪ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। দণ্ডবিধির ৩৯৫ ধারায় ডাকাতির সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের কারাদণ্ড। শুধু তিনটি ঘটনাই নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাজা কেবল একটিতে নির্দিষ্ট না করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে আইনে। অর্থাৎ একই অপরাধে চাইলে ভিন্ন ভিন্ন বিচারক ভিন্ন ভিন্ন সাজা দিতে পারেন।
দেশে যাবজ্জীবন সাজা বলতে ঠিক কত বছর, তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পরে আপিল বিভাগ বিষয়টি স্পষ্ট করে দেন। আপিল বিভাগ রায়ে বলেন, দণ্ডবিধির ৪৫,৫৩, ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (ক) ধারা একসঙ্গে মিলিয়ে পড়লে এটা স্পষ্ট, ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অর্থ ৩০ বছর’; যা ‘রেয়াতের’ কারণে সাড়ে ২২ বছর হয়। তবে অন্যান্য উন্নত দেশে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা ৮ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত সাজা ভোগ করে প্যারোল সুবিধা পান। এ ক্ষেত্রে মুক্তির পর দণ্ডপ্রাপ্তদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। আচরণ সন্তোষজনক মনে হলে অনেক ক্ষেত্রেই স্থায়ী মুক্তি মেলে।
উন্নত দেশগুলোতে সাজার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। সেখানে অপরাধীর বয়স, অপরাধের ধরন, অতীত জীবন, সামাজিক অবস্থান, অপরাধের কারণে সমাজে প্রভাব, সংশোধন হওয়ার সম্ভাবনা, মানসিক অবস্থা, অভ্যাসগত নাকি প্রথমবার অপরাধ—এমন নানা বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নীতিমালাই হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি নীতিমালা দিয়ে আবদ্ধ করার বিষয় নয়। অপরাধের ধরন, অপরাধের সংশ্লিষ্টতার ওপর নির্ভর করেই বিচারক সাজা দেন। এটা বিচারকের স্বাধীনতা।’ যদিও ‘আতাউর রহমান মৃধা বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয় গত বছরের জুলাইতে। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সাজার বিষয়ে একটি নীতিমালা বা আইনি কাঠামো থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় সামঞ্জস্য রাখা সম্ভব নয়।
আপিল বিভাগের এমন রায়ের পর অভিন্ন সাজা প্রদানে নীতিমালা করতে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগের রায়ের আলোকে অভিন্ন ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সাজার চর্চা নিশ্চিতে সাজা প্রদানে নীতিমালা প্রণয়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ওই রুল জারি করা হয়। তবে এখনো কোনো জবাব দেননি সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির আজকের পত্রিকাকে বলেন, নীতিমালা না থাকায় বিচারককে অনিশ্চিত ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ সাজা প্রদানে পরিচালিত করে, যা সংবিধানের ২৭,৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশেই সাজার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সে দেশের আইন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন, কমিশন এই বিষয়ে কাজ করছে। নীতিমালা হলে সাজার তারতম্য কমবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
এদিকে অভিন্ন সাজার বিষয়ে নীতিমালা করার জন্য আইন কমিশন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান কমিশনের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদ ইমতিয়াজ। তিনি বলেন, দ্বিবার্ষিক কর্মপরিকল্পনা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর। যেখানে ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় সাজাবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নে সম্ভাব্যতা যাচাই ও সুপারিশমালা তৈরি করতে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হলে একজন কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান মোরশেদ ইমতিয়াজ।
রাজধানীর মিরপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইমরান খান সাকিব ওরফে শাকিল (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা-পুলিশ। ডিএমপি জানায়, শাকিল পেশাদার ছিনতাইকারী। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে গাজীপুরের পুবাইল থানার কুদাব পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়...
১৫ দিন আগেরাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলায় ‘আপন কফি হাউসে’ তরুণীকে মারধরের ঘটনায় কফি হাউসের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান এ আদেশ দেন।
১৮ দিন আগেক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ল অমানবিক দৃশ্য— মেয়েটিকে বেশ কিছুক্ষণ ধমকানো হলো। এরপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে যেন মানুষ নয়, পথের ধুলো। এর মধ্যেই এক কর্মচারী হঠাৎ মোটা লাঠি নিয়ে আঘাত করে তাঁর ছোট্ট পায়ে। শিশুটি কাতরাতে কাতরাতে পাশের দুটি গাড়ির ফাঁকে আশ্রয় নেয়। কিন্তু নির্যাতন থামে না, সেই লাঠি আব
১৯ দিন আগেটিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘ধর্ষণ’ শব্দ ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন। তিনি এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অপরাধকে লঘু করার কোনো...
১৬ মার্চ ২০২৫