Ajker Patrika

‘উন্নত দেশ হয়েও উদীয়মান বাজারের মতো আচরণ করছে যুক্তরাষ্ট্র’

অনলাইন ডেস্ক
গত ১৮ মার্চ প্যারিসে ইউরোনেক্সট-এর ১৩ তম বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতারত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী স্টিফেন বৌজনাহ। ছবি: এএফপি
গত ১৮ মার্চ প্যারিসে ইউরোনেক্সট-এর ১৩ তম বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতারত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী স্টিফেন বৌজনাহ। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র এখন অনেকটা উদীয়মান বাজারের মতো আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপের শেয়ারবাজার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউরোনেক্সট-এর প্রধান নির্বাহী স্টিফেন বৌজনাহ। গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্স ইন্টার রেডিওতে স্টিফেন বলেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের প্রভাবে বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমেই উন্নত দেশের পরিবর্তে উদীয়মান বাজারে পরিণত হচ্ছে।

স্টিফেন আরও বলেন, ‘চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে এখন চিনতেই কষ্ট হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে যেন শোক পালন করা হচ্ছে। আমরা যে যুক্তরাষ্ট্রকে চিনি একটি প্রভাবশালী জাতি হিসেবে, তাকে আজ চেনাই যাচ্ছে না। যে দেশ ইউরোপীয় মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, তারা এখন অনেকটা উদীয়মান বাজারের মতো হয়ে যাচ্ছে।’

গত জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন বলে মনে করেন ইউরোনেক্সট প্রধান। তিনি বলেন, ‘এই অস্থির সময়ে মানুষ কি সিদ্ধান্ত নেবে বুঝতে পারছে না। তাদের এই দুশ্চিন্তা অমূলক নয়। যে অস্থির ও উদ্বেগের পরিবেশ বিরাজ করছে তা পুরো বিশ্ববাজার ব্যবস্থায় ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আগানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

স্টিফেন আরও বলেন, বিশ্ববাজারে বিনিয়োগকারীরা এখন তাদের সম্পদ পুনর্বিন্যাস করছে এবং তারা এমন এক যুক্তরাষ্ট্রকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে যেটি তাদের অচেনা। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর বিশ্বব্যাপী শুল্ক ঘোষণার পর থেকে এমন অবস্থায় পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তারা এই শুল্ককে স্বীকৃতি দিতে চান না।’

যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর অন্তত ১০ শতাংশ এবং কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দেশের শিল্প ভিত্তি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করা যাবে বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, কয়েক দশকের বাণিজ্য উদারনীতির কারণে ধ্বংসের পথে গেছে মার্কিন শিল্প ভিত্তি।

উদীয়মান বাজারগুলো প্রায়ই নিজস্ব শিল্প খাতকে সুরক্ষা দিতে শুল্ক খাতকে ব্যবহার করে, যতক্ষণ না তারা নিজেদের উৎপাদন ও প্রযুক্তি শক্তিশালী করতে পারে।

স্টিফেন বলেন, তবে এর কিছু ইতিবাচক প্রভাবও পড়েছে। বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমেছে। কমেছে দীর্ঘমেয়াদি সুদের হারও। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে টাকা বেরিয়ে ইউরোপে পুনরায় বিনিয়োগ হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছিল ইউরোপীয় কমিশন। এর একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরুতে ইউরোপীয় শেয়ারবাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে দেখা যায়। গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে যাওয়ার পর টানা চার দিন ব্যাপক বিক্রির ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হয় বাজার। তবে বিনিয়োগকারীরা এখনো শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে ভীত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত