নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের সরকারি হিসেবের চেয়ে অনেক মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এর অন্যতম কারণ গ্রামে কর্মসংস্থানের অভাবে ‘গলা ধাক্কা অভিবাসন’ এর শিকার হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। এ ছাড়া বস্তিতে দারিদ্র্যের হার দিন দিন কমছে—এমন বক্তব্যও বিশ্বাস করা কঠিন।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘নগর দারিদ্র্য: বস্তিবাসী ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ভূমিতে অধিকার এবং নাগরিক সেবায় অধিগম্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন বক্তব্য দেন বক্তারা।
এ সেমিনারের আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এইচডিআরসির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক আবুল বারাকাত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বারাকাত বলেন, এই নগরীতে আমরা যে দারিদ্র্য দেখি তার অন্যতম প্রধান কারণ গ্রামে কর্মসংস্থানের অভাবে পড়ে মানুষ ‘গলা ধাক্কা অভিবাসন’ এর শিকার হয়; যেখানে শহরে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কাজ সে পায় না, যাপন করতে হয় মানবেতর এক জীবন।
জরিপের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, নগরে দারিদ্র্য খানার প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) এমন গলা ধাক্কার শিকার। এমন পরিস্থিতির কারণ কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে লাগামছাড়া খরচ বৃদ্ধি, প্রয়োজনের সময় কৃষি ঋণ না পাওয়া, উৎপাদনের ন্যায্য দাম না পাওয়া।
এই অধ্যাপক মনে করেন, নদীভাঙন গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনের একটি অন্যতম বড় কারণ। কিন্তু, এখানে উল্লেখ না করলেই নয় যে ৬৮ শতাংশ খানা তাদের অতি ক্ষুদ্র আয় থেকেও একটি অংশ নিয়মিত গ্রামে পাঠান নাড়ির টানে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি বারাকাত বলেন, সরকারি হিসেবে ১৯৯১ সালে বস্তি ও স্বল্প আয় অথবা নিম্ন-আয় এলাকার বাসিন্দাদের ৪৯ শতাংশ ছিল দরিদ্র, যা ২০১৬ সালে নেমে দাঁড়িয়েছিল ৩৮ শতাংশে। অর্থাৎ, সরকারি হিসেবে অনুযায়ী, বস্তিতে বাস করা একটি বড় অংশের মানুষ আসলে দরিদ্র নন। বস্তিতে দারিদ্র্যের হার দিন দিন কমছে—এমন বক্তব্য বিশ্বাস করা কঠিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এ চেয়ারম্যান বলেন, যে পদ্ধতিতে দারিদ্র্য মাপা হয়, সেই পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দারিদ্র্য কমছে দেখাতে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে।
ড. আবুল বারকাত বলেন, বস্তিতে থাকা মানুষের মাসিক আয় ১২ হাজার ৭৫০ টাকার বেশি নয়। যদিও তাদের আয় নিয়ে সরকার অন্য কথা বলছেন। এসব বস্তিতে বসবাসকারী অধিকাংশই ভূমিহীন। কারও কারও গ্রামে সামান্য পরিমাণ আছে। এ ছাড়া বস্তুর মালিকদের বস্তিবাসী হিসেবে দেখিয়ে তাদের আয় দেখানো হয়।
বস্তিবাসীর জীবনের চিত্র তুলে ধরে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, অন্য ব্যয় সংকুলান করতে খাদ্য এবং শিক্ষা ব্যয় কমাতে হচ্ছে হচ্ছে বস্তিবাসীকে। স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য, শিক্ষাসহ অন্য বহু দারিদ্র্য বাড়ছে। নগর দরিদ্রদের ব্যাংক ঋণ নেই। অন্যদিকে নগর দরিদ্রদের আমরা অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলে আসছি।
অর্থনীতিবিদ ড. শফিকুজ্জামান বলেন, দেশের সব মানুষ এখন ঢাকা কেন্দ্রিক। শ্রমিক, শিক্ষক, বেকার, ডাক্তার সবাই ঢাকা আসতে চাচ্ছে। কিন্তু শহরে যে শিল্পায়ন হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। এখানে পোশাক শিল্প শুধু কাপড় সেলাই করে। বাকি যে রং, কাপড়, সুতা সেগুলো কিন্তু দেশের না। আবার কৃষির কিন্তু বড় অংশ শিল্পায়নে কাজে আসছে না।
অধ্যাপক ড. জামালউদ্দিন বলেন, দেখা যাচ্ছে এখন বাধ্যতামূলকভাবে অভিবাসন করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। এখানে সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ আছে। এসব মানুষ শহরে এসে বস্তিতে বসবাস করছে। দেশ যখন ১৯৪৭ সালে বিভক্ত হয়েছিলও তখন উচিত ছিল ব্রিটিশদের সব আইন মুছে ফেলা। নতুন করে আইন তৈরি করা। ভিয়েতনামে এটি করা হয়েছে। দেশ এখন রাজনীতিবিদেরা চালায় না। চালায় আমলাতন্ত্র।
এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক ড শামসুল হুদা বলেন, দেশে গরিবেরা বোঝা নয়। বরং বোঝা হচ্ছে অতি ধনীরা। এরা অবৈধ পথে টাকা রোজগার করে না কিন্তু টাকার মালিক হয়। সেই টাকা দেশে না রেখে দেশের বাইরে পাচার করে। এদের অর্ধেক সরকারি ব্যাংক লুট করে প্রাইভেট ব্যাংকের মালিক। সেই টাকাও লুট করে বিদেশ পাড়ি জমায়। দরিদ্র মানুষ বোঝা না। দরিদ্র মানুষ না থাকলে ঢাকা শহর বসবাসের যেটুকু যোগ্য আছে সেটুকু থাকবে না।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুলতানা কামাল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য শেষে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের সরকারি হিসেবের চেয়ে অনেক মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এর অন্যতম কারণ গ্রামে কর্মসংস্থানের অভাবে ‘গলা ধাক্কা অভিবাসন’ এর শিকার হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। এ ছাড়া বস্তিতে দারিদ্র্যের হার দিন দিন কমছে—এমন বক্তব্যও বিশ্বাস করা কঠিন।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘নগর দারিদ্র্য: বস্তিবাসী ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ভূমিতে অধিকার এবং নাগরিক সেবায় অধিগম্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন বক্তব্য দেন বক্তারা।
এ সেমিনারের আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এইচডিআরসির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক আবুল বারাকাত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বারাকাত বলেন, এই নগরীতে আমরা যে দারিদ্র্য দেখি তার অন্যতম প্রধান কারণ গ্রামে কর্মসংস্থানের অভাবে পড়ে মানুষ ‘গলা ধাক্কা অভিবাসন’ এর শিকার হয়; যেখানে শহরে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কাজ সে পায় না, যাপন করতে হয় মানবেতর এক জীবন।
জরিপের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, নগরে দারিদ্র্য খানার প্রায় অর্ধেক (৪৫ শতাংশ) এমন গলা ধাক্কার শিকার। এমন পরিস্থিতির কারণ কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে লাগামছাড়া খরচ বৃদ্ধি, প্রয়োজনের সময় কৃষি ঋণ না পাওয়া, উৎপাদনের ন্যায্য দাম না পাওয়া।
এই অধ্যাপক মনে করেন, নদীভাঙন গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনের একটি অন্যতম বড় কারণ। কিন্তু, এখানে উল্লেখ না করলেই নয় যে ৬৮ শতাংশ খানা তাদের অতি ক্ষুদ্র আয় থেকেও একটি অংশ নিয়মিত গ্রামে পাঠান নাড়ির টানে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি বারাকাত বলেন, সরকারি হিসেবে ১৯৯১ সালে বস্তি ও স্বল্প আয় অথবা নিম্ন-আয় এলাকার বাসিন্দাদের ৪৯ শতাংশ ছিল দরিদ্র, যা ২০১৬ সালে নেমে দাঁড়িয়েছিল ৩৮ শতাংশে। অর্থাৎ, সরকারি হিসেবে অনুযায়ী, বস্তিতে বাস করা একটি বড় অংশের মানুষ আসলে দরিদ্র নন। বস্তিতে দারিদ্র্যের হার দিন দিন কমছে—এমন বক্তব্য বিশ্বাস করা কঠিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক এ চেয়ারম্যান বলেন, যে পদ্ধতিতে দারিদ্র্য মাপা হয়, সেই পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দারিদ্র্য কমছে দেখাতে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে।
ড. আবুল বারকাত বলেন, বস্তিতে থাকা মানুষের মাসিক আয় ১২ হাজার ৭৫০ টাকার বেশি নয়। যদিও তাদের আয় নিয়ে সরকার অন্য কথা বলছেন। এসব বস্তিতে বসবাসকারী অধিকাংশই ভূমিহীন। কারও কারও গ্রামে সামান্য পরিমাণ আছে। এ ছাড়া বস্তুর মালিকদের বস্তিবাসী হিসেবে দেখিয়ে তাদের আয় দেখানো হয়।
বস্তিবাসীর জীবনের চিত্র তুলে ধরে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, অন্য ব্যয় সংকুলান করতে খাদ্য এবং শিক্ষা ব্যয় কমাতে হচ্ছে হচ্ছে বস্তিবাসীকে। স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য, শিক্ষাসহ অন্য বহু দারিদ্র্য বাড়ছে। নগর দরিদ্রদের ব্যাংক ঋণ নেই। অন্যদিকে নগর দরিদ্রদের আমরা অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলে আসছি।
অর্থনীতিবিদ ড. শফিকুজ্জামান বলেন, দেশের সব মানুষ এখন ঢাকা কেন্দ্রিক। শ্রমিক, শিক্ষক, বেকার, ডাক্তার সবাই ঢাকা আসতে চাচ্ছে। কিন্তু শহরে যে শিল্পায়ন হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। এখানে পোশাক শিল্প শুধু কাপড় সেলাই করে। বাকি যে রং, কাপড়, সুতা সেগুলো কিন্তু দেশের না। আবার কৃষির কিন্তু বড় অংশ শিল্পায়নে কাজে আসছে না।
অধ্যাপক ড. জামালউদ্দিন বলেন, দেখা যাচ্ছে এখন বাধ্যতামূলকভাবে অভিবাসন করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। এখানে সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ আছে। এসব মানুষ শহরে এসে বস্তিতে বসবাস করছে। দেশ যখন ১৯৪৭ সালে বিভক্ত হয়েছিলও তখন উচিত ছিল ব্রিটিশদের সব আইন মুছে ফেলা। নতুন করে আইন তৈরি করা। ভিয়েতনামে এটি করা হয়েছে। দেশ এখন রাজনীতিবিদেরা চালায় না। চালায় আমলাতন্ত্র।
এএলআরডি নির্বাহী পরিচালক ড শামসুল হুদা বলেন, দেশে গরিবেরা বোঝা নয়। বরং বোঝা হচ্ছে অতি ধনীরা। এরা অবৈধ পথে টাকা রোজগার করে না কিন্তু টাকার মালিক হয়। সেই টাকা দেশে না রেখে দেশের বাইরে পাচার করে। এদের অর্ধেক সরকারি ব্যাংক লুট করে প্রাইভেট ব্যাংকের মালিক। সেই টাকাও লুট করে বিদেশ পাড়ি জমায়। দরিদ্র মানুষ বোঝা না। দরিদ্র মানুষ না থাকলে ঢাকা শহর বসবাসের যেটুকু যোগ্য আছে সেটুকু থাকবে না।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুলতানা কামাল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য শেষে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের কিস্তি গ্রহণের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেদের মতো বাজেট তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এমন তথ্য জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক...
৩ ঘণ্টা আগেদেশের ভোজ্যতেলের বাজারে এখনো মানের ঘাটতি রয়েছে। ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ সমৃদ্ধ তেল সরবরাহ বাধ্যতামূলক হলেও বাস্তবে তা অনেকটা উপেক্ষিত। সরকারি আইন অনুযায়ী তেলে ভিটামিন এ মেশানো আবশ্যক হলেও বাজারের বিশাল একটি অংশে তা অনুপস্থিত কিংবা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
৩ ঘণ্টা আগেঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত অংশীদার চীনের শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে কমিশন সভাকক্ষে এই বৈঠক...
৩ ঘণ্টা আগেজনসংখ্যায় ক্ষুদ্র, কিন্তু প্রভাবের বিচারে বিশাল নর্ডিক দেশগুলো যেন এক অর্থনৈতিক বিস্ময়। সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড—এই চার দেশের জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক আকার যতই ছোট হোক না কেন, এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে আইকিয়া, লেগো, স্পটিফাই, নোভো নর্ডিস্ক, নোকিয়া ও কার্লসবার্গের মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলো।
১১ ঘণ্টা আগে