Ajker Patrika

বাজেটে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা

আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ১৮: ২৮
বাজেটে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বেড়েছে ৩ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা। আর্থিক পরিমাণের দিক বিবেচনায় স্বাস্থ্য বাজেটের আকার বেড়েছে ৩ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা। 

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ ঘোষণা দেন। 

বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় কোভিড মহামারির সময় থেকে সরকার যে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে আসছে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের ঝুঁকি মোকাবিলায় দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। 

এ ছাড়া সমন্বিত স্বাস্থ্য-বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিলে বিগত অর্থবছরের মতো এবারও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

ঘোষিত স্বাস্থ্য বাজেট প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসিচব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যয় কমাতে হলে বাজাটে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। 

ঘোষিত বাজেট মঞ্জুরি ও বরাদ্দের দাবিসমূহ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাদ্দের টাকা দিয়ে ১৫টি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা হবে। সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন করা হবে। 

আটটি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজে ১০০ শয্যার ক্যানসার ইউনিট স্থাপন এবং জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। 

তবে বাজেটের বড় অংশই ব্যয় হবে মজুরি ও বেতন, প্রশাসনিক ব্যয় পেশাগত সেবা ও সম্মানী ভাতা বাবদ। 

এদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত দুটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ফিল্টার ও সার্কিটের আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে ইঙ্গিত রয়েছে। ফলে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত ডায়ালাইসিস নেওয়া রোগীদের জন্য সুখবর আসছে। 

জানা গেছে, দেশে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। যারা ডায়ালাইসিস নেয়, বাজেট আনুষ্ঠানিকভাবে পাস হওয়ার পর তাদের খরচ কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ডায়ালাইসিসে ব্যবহৃত দুটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হলো ফিল্টার ও সার্কিট। এই দুটি প্রয়োজনীয় উপকরণের আমদানি শুল্ক কমানো হতে পারে। বর্তমানে ফিল্টার ও সার্কিটের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ রয়েছে, যা ৯ শতাংশ কমিয়ে ১ শতাংশ নির্ধারণ করার সুপারিশ করা হতে পারে এ বাজেটে। যার কারণে খরচ কমবে ডায়ালাইসিসের। 

আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য–সম্পর্কিত এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হার ২০০৭ সালে ছিল প্রতি লাখে ৩৫১, যা বর্তমানে হ্রাস পেয়ে ১৩৬ হয়েছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার ২০০৭ সালে ছিল প্রতি হাজারে ৬০, যা বর্তমানে হ্রাস পেয়ে ৩৩-এ নেমে এসেছে। 

তিনি বলেন, প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ২০০৭ সালে ছিল ৬৬.৬, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে ৭২.৩–এ উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। 

এক বছর বয়সের নিচের শিশুর পূর্ণ টিকা প্রাপ্তির হার ৭৫ শতাংশ থেকে ৯৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত