ফারুক মেহেদী

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।
ফারুক মেহেদী

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

ঢাকা: কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়! অথচ তিনি সেরা করদাতাদের তালিকায় নেই। দামি বাড়ি-গাড়ি, বিদেশভ্রমণসহ বিলাসে তিনি যতটা উদার, কর দেওয়ায় ততটাই কৃপণ।
এনবিআরের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের এমন তারকা ব্যবসায়ীরা আসলে কাগুজে গরিব। কর না দিতে বা কম দেওয়ার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কৌশল বের করেন। বছরে হাজার কোটি টাকার লেনদেন। অনেকের নামে-বেনামে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইতে বিলাসবহুল বাড়ি আছে। তবে নিজের কাগুজে আয় তার তুলনায় কিছুই নয়। এ টাকায় আর কতটুকুই বা আয়কর হয়?
আবার এমন মানুষও আছেন, যাঁকে আপনি ঠিকমতো চেনেন না, জানেন না। নাম-ডাক কম, পত্রিকায় কখনো ছবি ছাপা হয় না, শোরগোলও কম। অথচ তিনি প্রায় ছয় দশক ধরে টানা কর দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমে-ঘামে যেভাবে তিল তিল করে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন, তা থেকে নিজের যেটুকু আয় ও সম্পদ গড়েছেন, তা অকপটে সরকারের কাছে স্বীকার করেছেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কর দিয়েছেন। তিনি হলেন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়া, যিনি টানা ১৪ বছর ধরে দেশসেরা করদাতা। নিজের আয় ও সম্পদের বিপরীতে বছরে ৪০–৫০ কোটি টাকা শুধু করই দেন!
অল্প পুঁজি থেকে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছেন। এখন প্রায় ৪০-৫০ ধরনের ব্যবসা। সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সবই নিজের নামে। এর জন্য কোনো ফাঁকি বা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেননি তিনি। ব্যবসা থেকে আয় বাড়লে সরকারকে কর দিতে হবে। এই ভাবনা থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন। এরপর আর থামেননি। গেল প্রায় ছয় দশক ধরে কর দিয়ে যাচ্ছেন। এই মুজিব শতবর্ষেও তিনি এককভাবে সেরা করদাতা হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা ওয়েলথ এক্সের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বাড়ার দিক থেকে বিশ্বে শীর্ষে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, জাপান, হংকং, চীন কিংবা ভারতসহ পৃথিবীতে এমন আর একটি দেশও নেই; যেখানে এত দ্রুত ধনিক শ্রেণি তৈরি হয়! গত এক দশকে বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ধনী ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে; যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ ডলারের (৪২ কোটি টাকা) বেশি। সংস্থাটি গত বছরের মার্চে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাউছ মিয়ারা সততার পুরস্কার শুধু এনবিআর থেকেই পাচ্ছেন না; তাঁর এই সততার ফলই হলো ১টি থেকে অন্তত ৫৬ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সাফল্য। আর আমাদের পরিচিত বিখ্যাত সব প্রতিষ্ঠান বা শিল্প গ্রুপের মালিকেরা কর না দিয়ে কীভাবে ফাঁকি দেওয়া যায় সেই চিন্তা করেন। তাঁদের সেরা করদাতা হওয়ার শখ নেই। কর কম দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য।’ তিনি বলেন, ধনীদের উচিত বেশি হারে কর দেওয়া। অথচ দিনদিন তাঁদের কর–সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অবারিতভাবে। এবারের বাজেটেও তাঁদেরই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, `ধনীরা নানাভাবে কর না দিয়ে বেঁচে যান। মূল কারণ হলো সরকারের কাছে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। কারা নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, কার কয়টা গাড়ি আছে, কার সন্তান ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ে, কার কয়টা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমি কতটুকু, কয়টা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক ইত্যাদি তথ্য নিয়ে একটি ডেটাবেইস করা হলে কারও কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। তা ছাড়া, ধনীরা জমিসহ যেসব খাতে কর হয় না, ওই সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকেন। ফলে তাঁদের সম্পদ বাড়ে, কর দিতে হয় না। আমি মনে করি, জমি বা সম্পদ থাকলেই আয় হোক বা না হোক, কর দিতে হবে।’
এনবিআরের কর বিভাগ বলছে, যখন করের হিসাব হয়, ধনীদের অনেকের নথিপত্র ফাঁকা থাকে! টাকা, বাড়ি, গাড়ি কিছু নেই! এঁদের কেউ আবার শীর্ষ ধনীর আন্তর্জাতিক তালিকায় নাম ওঠান। বাংলাদেশের উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি, চারদিকে বেসরকারি খাতের জয়জয়কার, মাথাপিছু আয়ে আশপাশের অনেক দেশকে পেছনে ফেলে যখন নেতৃত্বে; তখন পুরান ঢাকার জর্দা ব্যবসায়ী কাউছ মিয়ার মতো সাধারণ করদাতারা সেরা করদাতার তালিকায়।
এনবিআর সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশে সম্পদের বড় অংশ ৫ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছে তেমন টাকা নেই। তাঁদের বেশির ভাগ হন সাধারণ চাকুরে, সরকারি কর্মচারী, না হয় বেসরকারি পেশাজীবী। বেতনই তাঁদের আয়ের মূল উৎস। অথচ এই ৯৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকেই সরকার কর আদায় করে। ৫ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে যথাযথ কর আদায় করা গেলে ঘাটতি করতে হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ধনী বাড়ার তথ্য থাকলেও করের খাতায় এর প্রতিফলন নেই। এনবিআর জানায়, গেল এক দশকে মাত্র ৮ লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছেন। তাঁরাও বেশির ভাগ সাধারণ করদাতা। অথচ দেশে কমবেশি ৪৬ লাখ টিআইএনধারী (ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর) করদাতা রয়েছেন, যাঁদের মাত্র ২১-২২ লাখ রিটার্ন জমা দেন। সবাই আবার কর দেন না, শুধু রিটার্ন দেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ কর দেন।
ধনীদের কম কর দেওয়ার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ কথা সত্য যে অর্থনীতি বড় হচ্ছে, ধনীদের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। তবে করের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ধনীরা মূলত কর অবকাশ, কর রেয়াতসহ নানা ছাড় নেওয়ায় তাঁদের কম হারে কর দিতে হয়। পাশাপাশি করের ক্ষেত্রে নীতির জটিলতায় দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কিছু অসাধু কর্মকর্তা করদাতার সঙ্গে যোগসাজশ করে নিজেদের পকেট ভারী করেন ঠিকই, ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেন সরকারকে।
বিশ্বব্যাংকের ২০০৫ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ২০০২-০৩ সালে বাংলাদেশে কালোটাকার পরিমাণ ছিল মোট জিডিপির ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এনবিআরের হিসাবে, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জরিমানা দিয়ে বৈধ করার মোট টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে মাত্র ছয় মাসে ১০ হাজার ২২০ কোটি কালোটাকা সাদা হয়েছে। এই সময়ে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কালোটাকার মালিক তাঁদের টাকা বৈধ করেছেন।
ধনীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় কর দেন না; আবার টাকাও দেশে রাখেন না। বিপুল অঙ্কের মুদ্রা পাচারের তথ্যই এর প্রমাণ। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির-জিএফআইয়ের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকার পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর সংস্থাটির হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে গড়ে পাচার হয় প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২০’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ধনীরা শুধু ওই দেশে প্রায় ৫ হাজর ২০৩ কোটি টাকা সরিয়েছেন। অঙ্কের হিসাবে সুইস ব্যাংকে টাকা পাচার কমলেও বিকল্প গন্তব্যে ঠিকই তা অব্যাহত রয়েছে। এর বাইরে কেইম্যান আইল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, কানাডা, সিঙ্গাপুর, হংকংয়েও অফিস খুলে বিভিন্ন উপায়ে টাকা বিদেশে পাঠাচ্ছেন অনেকে। প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপারসসহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে বাংলাদেশিদের নাম রয়েছে।
ধনীদের কর ফাঁকির প্রবণতা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা আসলে রাজস্ব কর্মকর্তা ও বড় করদাতাদের যোগসাজশের ফল। এটাই বাংলাদেশের কর সংস্কৃতির অন্যতম দিক। সৎ করদাতারা এখানে কষ্ট করে আয় করে ন্যায্য কর দেন। আর ধনীরা এর সুবিধা নেন। তিনি বলেন, ধনীদের কর ফাঁকির বিষয়টি সরকারের অজানা নয়। ডেটাবেইস করে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শেয়ারিং পদ্ধতিতে সহজেই তাঁদের ধরা সম্ভব। তবে এর জন্য সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন।

দেশের সবগুলো ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
৭ ঘণ্টা আগে
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
৯ ঘণ্টা আগে
এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের সব ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১২টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি ছেলেদের ও তিনটি মেয়েদের জন্য। ইতিমধ্যে এসব ক্যাডেট কলেজের ভর্তি আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সব ক্যাডেট কলেজে যেকোনো আবেদনকারী নগদের মাধ্যমে ভর্তি আবেদন ফি দিতে পারবে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই। তা ছাড়া নগদের এই ভর্তি ফির চার্জবিহীন পেমেন্ট সুবিধার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ভর্তিপ্রক্রিয়া এখন আরও সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে।
আবেদনকারী বা অভিভাবকেরা ক্যাডেট কলেজের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট
অথবা https://cadetcollegeadmission.army.mil.bd/ -এ গিয়ে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন
করে ফি পরিশোধ করতে পারবে।
‘Apply Now/Sign Up’-এ ক্লিক করে নাম, মোবাইল নম্বর, পাসওয়ার্ড, ই-মেইল অ্যাড্রেস, জন্মতারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। এরপর ‘User ID’ ও ‘Password’ দিয়ে লগইন করে ‘Payment’ অপশন থেকে ‘Nagad’ নির্বাচন করে দুই হাজার টাকা আবেদন ফি তাৎক্ষণিক পরিশোধ করা যাবে। নগদ ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে এই ফি প্রদানে কোনো সার্ভিস চার্জ বা ট্রানজেকশন ফি প্রযোজ্য হবে না। পেমেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হলে আবেদনকারীর মোবাইলে সঙ্গে সঙ্গে একটি এসএমএস নিশ্চিতকরণ বার্তা পাঠানো হবে।
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি ফি সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত করার বিষয়ে নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সরওয়ার ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা নগদের মাধ্যমে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি ফি প্রদান সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত করেছি, যাতে সারা দেশের যেকোনো স্থান থেকে অভিভাবকেরা সহজে, দ্রুত ও সবচেয়ে কম খরচে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারে। শিক্ষাসংক্রান্ত যেকোনো ডিজিটাল পেমেন্ট আরও সহজ করতে নগদ বরাবরই কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখবে।’
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা নগদের মাধ্যমে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ও টিউশন ফি দিচ্ছে। এই সুবিধা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য দ্রুত, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট সলিউশন হিসেবে কাজ করছে।

দেশের সব ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১২টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে, যার মধ্যে ৯টি ছেলেদের ও তিনটি মেয়েদের জন্য। ইতিমধ্যে এসব ক্যাডেট কলেজের ভর্তি আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া চলবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সব ক্যাডেট কলেজে যেকোনো আবেদনকারী নগদের মাধ্যমে ভর্তি আবেদন ফি দিতে পারবে কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই। তা ছাড়া নগদের এই ভর্তি ফির চার্জবিহীন পেমেন্ট সুবিধার ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ভর্তিপ্রক্রিয়া এখন আরও সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে।
আবেদনকারী বা অভিভাবকেরা ক্যাডেট কলেজের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট
অথবা https://cadetcollegeadmission.army.mil.bd/ -এ গিয়ে অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন
করে ফি পরিশোধ করতে পারবে।
‘Apply Now/Sign Up’-এ ক্লিক করে নাম, মোবাইল নম্বর, পাসওয়ার্ড, ই-মেইল অ্যাড্রেস, জন্মতারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে। এরপর ‘User ID’ ও ‘Password’ দিয়ে লগইন করে ‘Payment’ অপশন থেকে ‘Nagad’ নির্বাচন করে দুই হাজার টাকা আবেদন ফি তাৎক্ষণিক পরিশোধ করা যাবে। নগদ ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে এই ফি প্রদানে কোনো সার্ভিস চার্জ বা ট্রানজেকশন ফি প্রযোজ্য হবে না। পেমেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হলে আবেদনকারীর মোবাইলে সঙ্গে সঙ্গে একটি এসএমএস নিশ্চিতকরণ বার্তা পাঠানো হবে।
ক্যাডেট কলেজ ভর্তি ফি সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত করার বিষয়ে নগদের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মোহাম্মদ শাহীন সরওয়ার ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা নগদের মাধ্যমে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি ফি প্রদান সম্পূর্ণ চার্জমুক্ত করেছি, যাতে সারা দেশের যেকোনো স্থান থেকে অভিভাবকেরা সহজে, দ্রুত ও সবচেয়ে কম খরচে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারে। শিক্ষাসংক্রান্ত যেকোনো ডিজিটাল পেমেন্ট আরও সহজ করতে নগদ বরাবরই কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখবে।’
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল আর্থিক সেবা নগদের মাধ্যমে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি ও টিউশন ফি দিচ্ছে। এই সুবিধা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য দ্রুত, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পেমেন্ট সলিউশন হিসেবে কাজ করছে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
৭ ঘণ্টা আগে
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
৯ ঘণ্টা আগে
এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প আটটি, সংশোধিত প্রকল্প দুটি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির দুটি প্রকল্প রয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প, যার মধ্যে রয়েছে ‘মানিকগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ‘সাতক্ষীরা জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকার ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ (তৃতীয় সংশোধন)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প—‘গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ এবং ‘চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন’ (দ্বিতীয় সংশোধিত)।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (তৃতীয় পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত)। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প—‘সমাপ্ত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির অত্যাবশ্যকীয় পরিবার পরিকল্পনা, মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার অসমাপ্ত কার্যাবলি বাস্তবায়ন’ প্রকল্প, ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উন্নয়ন’ এবং ‘পিএফডি, এইচইএফ, আইএফএম, এইচআরডি এবং এসডব্লিউপিএমএমের অত্যাবশ্যকীয় অসমাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন’ প্রকল্প।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘ঢাকা সেনানিবাসে নির্ঝর আবাসিক এলাকায় ‘বি’ টাইপ অফিসার্স বাসস্থান নির্মাণ’। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামের স্থানে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণের (দ্বিতীয় সংশোধিত) চতুর্থবার মেয়াদ বৃদ্ধি’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘বিসিক শিল্পপার্ক, টাঙ্গাইল’ (তৃতীয় সংশোধিত)।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প আটটি, সংশোধিত প্রকল্প দুটি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির দুটি প্রকল্প রয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প, যার মধ্যে রয়েছে ‘মানিকগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ‘সাতক্ষীরা জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার হাওর এলাকার ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ (তৃতীয় সংশোধন)। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প—‘গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ এবং ‘চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন’ (দ্বিতীয় সংশোধিত)।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ’ (তৃতীয় পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত)। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প—‘সমাপ্ত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির অত্যাবশ্যকীয় পরিবার পরিকল্পনা, মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার অসমাপ্ত কার্যাবলি বাস্তবায়ন’ প্রকল্প, ‘স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত উন্নয়ন’ এবং ‘পিএফডি, এইচইএফ, আইএফএম, এইচআরডি এবং এসডব্লিউপিএমএমের অত্যাবশ্যকীয় অসমাপ্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন’ প্রকল্প।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘ঢাকা সেনানিবাসে নির্ঝর আবাসিক এলাকায় ‘বি’ টাইপ অফিসার্স বাসস্থান নির্মাণ’। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘নড়াইল-কালিয়া জেলা মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে কালিয়া নামের স্থানে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণের (দ্বিতীয় সংশোধিত) চতুর্থবার মেয়াদ বৃদ্ধি’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প—‘বিসিক শিল্পপার্ক, টাঙ্গাইল’ (তৃতীয় সংশোধিত)।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ; অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ; আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল; স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; শিল্প এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
দেশের সবগুলো ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
৯ ঘণ্টা আগে
এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এনবিআর জানায়, করদাতারা এখন থেকে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল, যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন সম্পন্ন করে সরাসরি ব্যাংক হিসাবে রিফান্ডের অর্থ পেতে পারবেন। এ জন্য অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু করা হয়েছে।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমের (আইভাস) সঙ্গে অর্থ বিভাগের আইবাস প্লাস প্লাস (iBAS++) সিস্টেমের আন্তসংযোগ স্থাপন করা হবে। এতে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে রিফান্ডের অর্থ সরাসরি করদাতার নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা হবে।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউলের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে সব কার্যক্রম ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে।
অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া
নতুন মডিউলের মাধ্যমে করদাতারা অনলাইনে মূসক রিটার্ন দাখিলের সময় রিফান্ডের আবেদন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ স্থানান্তর করবে।
এতে রিফান্ডের আবেদন বা চেক গ্রহণের জন্য করদাতাকে আর ভ্যাট অফিসে যেতে হবে না। ফলে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এরই মধ্যে অনিষ্পন্ন রিফান্ড আবেদনকারীদের নতুন মডিউলে মূসক-৯.১ ফরমের মাধ্যমে পুনরায় অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভ্যাট কমিশনারেট পর্যায়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। করদাতারা প্রয়োজনে স্থানীয় কমিশনারেটে যোগাযোগ করে অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া সম্পর্কে সহায়তা নিতে পারবেন।
গত আগস্টে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট রিটার্ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি অটোমেশনে চলে যাবে। কাগজে রিটার্ন নেওয়া হবে না।
যখন কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কাঁচামাল বা সেবা কেনে, তখন ইনপুট ভ্যাট দেয়। আবার সেই পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে গ্রাহকের কাছ থেকে আউটপুট ভ্যাট নেয়। যদি ইনপুট ভ্যাটের পরিমাণ আউটপুট ভ্যাটের চেয়ে বেশি হয়, তখন অতিরিক্ত ভ্যাট রিফান্ড হিসেবে দাবি করতে পারে। তবে এত দিন এই ভ্যাট রিফান্ড না পাওয়ার অভিযোগ করতেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ভ্যাট রিফান্ডের দাবিও তুলতেন তাঁরা।
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ()। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
এনবিআর জানায়, করদাতারা এখন থেকে অনলাইনে ভ্যাট রিফান্ডের আবেদন দাখিল, যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন সম্পন্ন করে সরাসরি ব্যাংক হিসাবে রিফান্ডের অর্থ পেতে পারবেন। এ জন্য অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউল চালু করা হয়েছে।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান ইন্টিগ্রেটেড ভ্যাট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেমের (আইভাস) সঙ্গে অর্থ বিভাগের আইবাস প্লাস প্লাস (iBAS++) সিস্টেমের আন্তসংযোগ স্থাপন করা হবে। এতে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের (বিইএফটিএন) মাধ্যমে রিফান্ডের অর্থ সরাসরি করদাতার নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা হবে।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ বলেন, অনলাইন ভ্যাট রিফান্ড মডিউলের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের লক্ষ্যে সব কার্যক্রম ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে।
অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া
নতুন মডিউলের মাধ্যমে করদাতারা অনলাইনে মূসক রিটার্ন দাখিলের সময় রিফান্ডের আবেদন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ স্থানান্তর করবে।
এতে রিফান্ডের আবেদন বা চেক গ্রহণের জন্য করদাতাকে আর ভ্যাট অফিসে যেতে হবে না। ফলে সময় ও ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এরই মধ্যে অনিষ্পন্ন রিফান্ড আবেদনকারীদের নতুন মডিউলে মূসক-৯.১ ফরমের মাধ্যমে পুনরায় অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভ্যাট কমিশনারেট পর্যায়ে প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে। করদাতারা প্রয়োজনে স্থানীয় কমিশনারেটে যোগাযোগ করে অনলাইন রিফান্ড প্রক্রিয়া সম্পর্কে সহায়তা নিতে পারবেন।
গত আগস্টে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট রিটার্ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি অটোমেশনে চলে যাবে। কাগজে রিটার্ন নেওয়া হবে না।
যখন কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কাঁচামাল বা সেবা কেনে, তখন ইনপুট ভ্যাট দেয়। আবার সেই পণ্য বা সেবা বিক্রি করলে গ্রাহকের কাছ থেকে আউটপুট ভ্যাট নেয়। যদি ইনপুট ভ্যাটের পরিমাণ আউটপুট ভ্যাটের চেয়ে বেশি হয়, তখন অতিরিক্ত ভ্যাট রিফান্ড হিসেবে দাবি করতে পারে। তবে এত দিন এই ভ্যাট রিফান্ড না পাওয়ার অভিযোগ করতেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ভ্যাট রিফান্ডের দাবিও তুলতেন তাঁরা।
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ()। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
দেশের সবগুলো ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
৭ ঘণ্টা আগে
এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে কলমানিতে এক দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ব্যাংকগুলো ধার করেছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা; যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮০ হাজার ২৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কলমানিতে ধার বেড়েছে ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইটে ধার ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, যা তার আগের বছরের অক্টোবরে ছিল ৭২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, পলিসি রেট (নীতি সুদহার) বাড়ার প্রভাব কলমানি মার্কেটে পড়েছে। এখন ঋণের খরচ বেড়েছে। অনেক ব্যাংক নগদ টাকার চাপ সামলাতে চড়া সুদে ঋণ করে ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে। ফলে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অক্টোবরে ২ থেকে ১৪ দিনের জন্য শর্ট নোটিশে ধারের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। একইভাবে ১৫ দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য টার্ম কল ঋণ গত অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে ৩৯৪ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে নগদ টাকার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংকট রয়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় ব্যাংকে তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। তারল্যসংকটের মোকাবিলা করতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে চড়া সুদেও টাকা ধার নিচ্ছে। কারণ বাজারে খুব বেশি তারল্য নেই। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকও রেপোর নিলাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো খুব বেশি টাকা ধার করতে পারছে। সব মিলিয়ে কলমানি বাজারে চড়া সুদে যেসব ব্যাংক টাকা ধার নিয়েছে তারা ধার পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কলমানিতে সুদহার বেশি হলেও নিরুপায় হয়ে কলমানিতে লেনদেন করে অস্বস্তিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অক্টোবরে কলমানির মধ্যে ওভারনাইটের গড় সুদহার (ডব্লিইএআর) ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ, শর্ট নোটিশের গড় সুদহার ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং টার্ম কলে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর আন্তব্যাংক রেপোতে সুদের গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে আন্তব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ৩২ কোটি টাকা। সে হিসাবে আন্তব্যাংক লেনদেন বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখন কিছু ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। তবে অন্য ব্যাংকগুলো দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তারাই ধার নিচ্ছে। এখন যেসব ব্যাংকের ধার প্রয়োজন, তাদের বেশির ভাগেরই পর্যাপ্ত জামানত নেই। তারা কলমানির ধারের টাকায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ডলারের দর বেড়েছে, এতে টাকার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে কিছু ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো তারল্যসুবিধা নিচ্ছে, স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ করতে কলমানিতে ধার করছে। চাহিদা বাড়লে ধার বাড়ে, আবার চাহিদা কমলে ধার কমে।

এক বছরের ব্যবধানে (অক্টোবর থেকে অক্টোবর) দেশের ব্যাংকগুলোর স্বল্পকালীন (কলমানি) ঋণ বিপুল হারে বেড়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত কলমানি ঋণ প্রায় দ্বিগুণ বা ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা আর আন্তব্যাংক রেপোতে ধার বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে কলমানিতে এক দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ব্যাংকগুলো ধার করেছে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা; যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮০ হাজার ২৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কলমানিতে ধার বেড়েছে ৬৩ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক দিনের জন্য ওভারনাইটে ধার ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা, যা তার আগের বছরের অক্টোবরে ছিল ৭২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে ওভারনাইট ধার বেড়েছে ৪৯ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, পলিসি রেট (নীতি সুদহার) বাড়ার প্রভাব কলমানি মার্কেটে পড়েছে। এখন ঋণের খরচ বেড়েছে। অনেক ব্যাংক নগদ টাকার চাপ সামলাতে চড়া সুদে ঋণ করে ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে। ফলে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অক্টোবরে ২ থেকে ১৪ দিনের জন্য শর্ট নোটিশে ধারের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ১২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। একইভাবে ১৫ দিন থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য টার্ম কল ঋণ গত অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ছিল ১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ বেড়েছে ৩৯৪ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, বর্তমানে ব্যাংক খাতে নগদ টাকার ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংকট রয়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় ব্যাংকে তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। তারল্যসংকটের মোকাবিলা করতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে চড়া সুদেও টাকা ধার নিচ্ছে। কারণ বাজারে খুব বেশি তারল্য নেই। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকও রেপোর নিলাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো খুব বেশি টাকা ধার করতে পারছে। সব মিলিয়ে কলমানি বাজারে চড়া সুদে যেসব ব্যাংক টাকা ধার নিয়েছে তারা ধার পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কলমানিতে সুদহার বেশি হলেও নিরুপায় হয়ে কলমানিতে লেনদেন করে অস্বস্তিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত অক্টোবরে কলমানির মধ্যে ওভারনাইটের গড় সুদহার (ডব্লিইএআর) ছিল ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ, শর্ট নোটিশের গড় সুদহার ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং টার্ম কলে সুদহার ছিল ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর আন্তব্যাংক রেপোতে সুদের গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে আন্তব্যাংক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৩ হাজার ৩২ কোটি টাকা। সে হিসাবে আন্তব্যাংক লেনদেন বেড়েছে ৫৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এখন কিছু ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। তবে অন্য ব্যাংকগুলো দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, তারাই ধার নিচ্ছে। এখন যেসব ব্যাংকের ধার প্রয়োজন, তাদের বেশির ভাগেরই পর্যাপ্ত জামানত নেই। তারা কলমানির ধারের টাকায় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ডলারের দর বেড়েছে, এতে টাকার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে কিছু ব্যাংক তারল্যসংকটে পড়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো তারল্যসুবিধা নিচ্ছে, স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ করতে কলমানিতে ধার করছে। চাহিদা বাড়লে ধার বাড়ে, আবার চাহিদা কমলে ধার কমে।

কোনো তারকা রপ্তানিকারক, উদ্যোক্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ীর কথা ভাবুন। আপনি তাঁকে হয়তো চেনেন! প্রায়ই টিভিতে দেখেন। সফল জীবনের সংগ্রামী গল্প শুনে পুলকিত হন। বিভিন্ন সভা–সেমিনারে তাঁর দেওয়া ‘অনুপ্রেরণাদায়ী’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখা যায়!
২৮ জুন ২০২১
দেশের সবগুলো ক্যাডেট কলেজে ভর্তি আবেদন ফি সহজেই দেওয়া যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। বরাবরের মতো এবারও এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ প্রয়োজন হবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ৭ হাজার ১৫০ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর সম্পূর্ণ ব্যয় সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে।
৭ ঘণ্টা আগে
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির পর অনলাইনে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফেরত বা ভ্যাট রিফান্ড প্রক্রিয়া চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
৯ ঘণ্টা আগে