Ajker Patrika

ডলার-সংকট ও শুল্ক বৃদ্ধির জের

মোংলা বন্দরে কমেছে গাড়ি আমদানি

  • বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু ব্যবহার কমছে।
  • তিন বছর ধরে কমছে গাড়ি আমদানি।
  • রেকর্ড ২১,৪৮৪টি আমদানি ২০২১-২২ অর্থবছরে।
  • চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত আমদানি মাত্র ১০,৭৪২টি।
সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট) 
আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ১০: ১১
মোংলা বন্দরে তিন বছর ধরে কমছে গাড়ি আমদানি। ছবি: সংগৃহীত
মোংলা বন্দরে তিন বছর ধরে কমছে গাড়ি আমদানি। ছবি: সংগৃহীত

কয়েক বছর আগেও গাড়ি আমদানিতে দেশের রেকর্ড গড়েছিল মোংলা বন্দর। ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রামকেও ছাড়িয়ে এখানে ঢুকেছিল ২১ হাজারের বেশি গাড়ি। তখন সবাই তাকিয়ে ছিল মোংলার দিকে। কিন্তু সেই গতির ছন্দ এখন অনেকটাই ম্লান। টানা তিন অর্থবছর ধরে কমছে আমদানির সংখ্যা। ডলার-সংকট, দাম বেড়ে যাওয়া আর ক্রেতার আগ্রহ কমে যাওয়াই এই ভাটার মূল কারণ।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা) বলছে, ডলারের উচ্চমূল্য, এলসি খোলায় জটিলতা এবং বাজারে গাড়ির ক্রেতা হ্রাস পাওয়ায় আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে মোংলা বন্দরের গাড়ি আমদানির চিত্রও আগের মতো আর চাঙা নেই।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক বিভাগের তথ্য বলছে, ২০০৯ সালের ৩ জুন হক’স বে অটোমোবাইলস প্রথমবারের মতো মোংলা বন্দরে রিকন্ডিশন্ড ও নতুন মিলিয়ে ২৫৫টি গাড়ি আমদানি করে। ওই সময় বন্দরটির গতি ছিল শ্লথ। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে গাড়ি আমদানি ছিল মাত্র ২৫৫টি, ২০০৯-১০ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ১১৯টিতে। এরপর দীর্ঘ সময়ে উন্নতি অব্যাহত থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে তা সর্বোচ্চে পৌঁছায়।

কিন্তু ২০২২-২৩ অর্থবছরে গাড়ি আমদানি কমে নেমে আসে ১৩,৫৭৬টিতে। পরের অর্থবছর ২০২৩-২৪-এ কিছুটা বৃদ্ধিতে পৌঁছে ১৫ হাজার ৩৪০টি গাড়িতে। আর চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫-এর মে মাস পর্যন্ত মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি হয়েছে ১০ হাজার ৭৪২টি, যা আগের প্রবণতার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক পরিচালক মো. কামাল হোসেন এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমদানির সংখ্যা কমলেও বন্দরের সক্ষমতা বা সুযোগ-সুবিধার কোনো ঘাটতি হয়নি। আমদানিকারকদের জন্য আমরা সময়মতো গাড়ি খালাস, উন্নতমানের শেড ও ইয়ার্ড, নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য সার্বক্ষণিক টহল, সিসি ক্যামেরা মনিটরিংসহ সর্বোচ্চ সহায়তা দিচ্ছি।’

তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। খুলনা কার জোনের স্বত্বাধিকারী পারভেজ হক জানান, গত দুই-তিন বছর ডলার-সংকটে এলসি খোলা যায়নি। তা ছাড়া ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় গাড়ির দাম বেড়েছে। আগে যে এক্সিও গাড়ি ১৫-১৬ লাখে বিক্রি হতো, এখন তা ২৪-২৫ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্রেতা কমেছে, আর আমদানিও হ্রাস পেয়েছে।

বারভিডা সভাপতি ও হক’স বে অটোমোবাইলসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার উৎসাহ দেওয়ার পর প্রথমবার তিনি মোংলা বন্দর ব্যবহার করে গাড়ি আমদানি শুরু করেন। তখনকার চ্যালেঞ্জ ছিল নাব্যতাসংকট ও জাহাজ না আসার অনীহা। ব্যক্তিগতভাবে অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা শুরু করেছিলাম। এরপর অনেকে আগ্রহী হন। তবে গত কয়েক বছরে ডলার-সংকট, মূল্যবৃদ্ধি, শুল্ক বাড়ানো এবং সর্বশেষ গত আগস্টে সরকারের রদবদলের পর অর্থনৈতিক ধীরগতির কারণে গাড়ি আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। যাদের হাতে টাকা ছিল, তারাই বাজার থেকে গায়েব। এখন নতুন করে সক্ষমতা তৈরি হতে সময় লাগবে।’

আব্দুল হক জানান, বর্তমানে গাড়ি বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুতর চাপ তৈরি করছে। সরকারের উচিত একটি চাঁদাবাজি ও হয়রানিমুক্ত ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব মাকরুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর মোংলা দিয়ে গাড়ি এনে মাত্র চার ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। এ কারণে আমদানিকারকেরা মোংলা বন্দরকেই বেছে নিচ্ছিলেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে গাড়ির বিক্রি কমে যাওয়ায় আমদানিতেও ভাটা পড়েছে।

মাকরুজ্জামান জানান, বর্তমানে মোংলা বন্দরের অবকাঠামো ও সক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক উন্নত, যা ভবিষ্যতের চাহিদা মেটানোর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

মোংলায় গাড়ি আমদানির এই ভাটা সাময়িক নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংকেত, তা নির্ভর করছে মূলত দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাজার, ভোক্তাশ্রেণির পুনরুদ্ধার এবং সরকারের নীতিগত সহায়তার ওপর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাস্টমস কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান সাময়িক বরখাস্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজস্ব ভবন। ছবি: আজকে পত্রিকা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজস্ব ভবন। ছবি: আজকে পত্রিকা

কাস্টমস ও আবগারি বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুজ্জামান সরকারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রোববার (২ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) শুল্ক-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এতে সই করেন আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মো. শহিদুজ্জামান সরকারের বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তাঁকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২ (১) অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাজুসের নেতৃত্বে ফের এনামুল হক ও রণজিৎ ঘোষ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাজুস এনামুল রণজিৎ
বাজুস এনামুল রণজিৎ

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) আবারও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাসের এনামুল হক খান। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রণজিৎ ঘোষ।

আজ সোমবার বাজুসের নতুন পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করে বাজুস নির্বাচন বোর্ড। এর পর রাজধানীর মগবাজারে বাজুসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ফলাফল ঘোষণা করেন।

এনামুল হক এর আগে গত ২০১৯ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০২৩ সালে (১১ এপ্রিল) তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সভাপতি ও একজন সিনিয়র সহসভাপতি ছাড়াও তিনজন সহসভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ এবং ২৯ জন পরিচালকসহ ৩৫ জনের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এঁদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দেওয়ায় এখন থেকে এই পদে আর কেউ থাকবেন না। ফলে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সিনিয়র সহসভাপতিই পালন করবেন। বাজুস প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সাধারণ সম্পাদক পদ বিলুপ্ত করা হলো।

সহসভাপতি পদে আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড এন্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্সের অমিত ঘোষ।

পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন—মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগরওয়ালা, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, বাবুল দত্ত, গণেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মণ্ডল, মিনাজুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তাফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহাম্মদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং পলাশ কুমার সাহা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কোনো প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪ (১) ধারা মোতাবেক বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচনযোগ্য পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বাজুসের নতুন নির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, “আমাদের সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সোনা আমদানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু এত কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। ”

তিনি বলেন, “মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারি না। যারা চোরাকারবার করে তারা কোনো দিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনো দিন চোরাকারবারে জড়াবে না। যত দিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, তত দিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসত, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করব। ”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অর্থ পাচার: অনিল আম্বানির ৩,০৮৪ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪০
অনিল আম্বানি। ফাইল ছবি
অনিল আম্বানি। ফাইল ছবি

অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং তদন্তের অংশ হিসেবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রায় ৩ হাজার ৮৪ কোটি মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-এর অধীনে গত ৩১ অক্টোবর এই বাজেয়াপ্তের নির্দেশ জারি করা হয়।

বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে মুম্বাইয়ের পালি হিলের বিলাসবহুল পারিবারিক আবাসন, দিল্লির রিলায়েন্স সেন্টার এবং দেশের অন্তত আটটি শহরের রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি। দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, মুম্বাই, পুণে, থানে, হায়দরাবাদ, চেন্নাই এবং অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জুড়ে এই সম্পত্তিগুলো বিস্তৃত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অফিস, আবাসিক ইউনিট এবং জমির প্লট।

কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির অভিযোগ, রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স লিমিটেড (আরএইচএফএল) এবং রিলায়েন্স কমার্শিয়াল ফাইন্যান্স লিমিটেড (আরসিএফএল)-এর সংগৃহীত জনগণের টাকা বেআইনিভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা এবং পাচার করার অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইডি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাংক আরএইচএফএল-এ ২ হাজর ৯৬৫ কোটি এবং আরসিএফএল-এ ২ হাজার ৪৫ কোটি বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিনিয়োগগুলো খেলাপি সম্পত্তিতে পরিণত হয়।

তদন্তে আরও উঠে আসে, সেবি (এসইবিআই)-এর বিধিনিষেধ এড়ানোর জন্য এই তহবিলগুলো ঘুরপথে ব্যবহার করা হয়েছিল। সংঘাতের স্বার্থ সংক্রান্ত নিয়মের কারণে রিলায়েন্স নিপ্পন মিউচুয়াল ফান্ডের পক্ষে সরাসরি অনিল আম্বানির আর্থিক সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু অভিযোগ, সাধারণ মানুষের মিউচুয়াল ফান্ড থেকে সংগৃহীত অর্থ ইয়েস ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুরপথে আরএইচএফএল এবং আরসিএফএল-এ নেওয়া হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত অনিল আম্বানির কোম্পানিগুলোর কাছে যায়।

ইডি আরও দাবি করেছে, অর্থপাচারের তদন্তে তারা দেখতে পেয়েছে, এই ঋণ দেওয়া ও লেনদেনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ছিল। কোনো রকম যাচাই ছাড়াই ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল, বহু ক্ষেত্রে আবেদন জমা দেওয়ার আগেই অথবা একই দিনে মঞ্জুরি ও বিতরণ করা হয়। কিছু ঋণের নথিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নথি ফাঁকা বা তারিখবিহীন ছিল বলেও অভিযোগ।

এ ছাড়া, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড (আরকম)-এর সঙ্গে যুক্ত ঋণ জালিয়াতি মামলাতেও তদন্ত জোরদার করেছে ইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ কোটি রুপির বেশি অর্থ ‘লোন এভারগ্রিনিং’ (মূল পরিশোধের বাধ্যবাধকতা মওকুফ) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত এই সম্পত্তিগুলোর সন্ধান ও বাজেয়াপ্তের কাজ তারা চালিয়ে যাবে। তাদের দাবি, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণের স্বার্থ এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ সুরক্ষিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬১ হাজার টন গম নিয়ে মার্কিন জাহাজ ভিড়ল চট্টগ্রাম বন্দরে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৭
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৬১ হাজার টন গম একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে নগদ ক্রয় চুক্তির আওতায় ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সরকার—টু—সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি কার্যক্রম শুরু করছে। এই চুক্তির আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে, যার প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম গত ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে দেশে পৌঁছেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত