Ajker Patrika

তেল আমদানি ৩৫ শতাংশ বাড়ার পরও বাজারে সংকট

  • কিছু বাজারে মেঘনা গ্রুপের কোনো তেলই পাওয়া যায়নি।
  • সিটি ও অন্যান্য কোম্পানির সরবরাহও সীমিত।
অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭: ৩৬
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কয়েক সপ্তাহ ধরে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থির। সংকট এখনো কাটেনি। বোতলজাত তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কোম্পানির প্রতিনিধি কিংবা সরবরাহকারীরা পর্যাপ্ত তেল দিতে পারছেন না, ফলে তাঁরাও বাজারে ভোক্তার চাহিদা মেটাতে পারছেন না।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) পর্যবেক্ষণ বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে এবং দেশে শুল্কছাড়ের সুবিধাও রয়েছে। তাই বাজারে সংকট থাকার কথা নয়। অর্থাৎ বাজারে ভোজ্যতেল নিয়ে চলমান সংকটটি কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা। তবে দেশীয় পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করছে, গত মাসে তারা আগের তুলনায় বেশি পরিমাণ তেল বিক্রি করেছে। তাহলে সংকট কোথায়?

বাজার তদারকিতে ভিন্ন চিত্র

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি) বলছে, বেশ কিছু কোম্পানি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। কিছু বাজারে মেঘনা গ্রুপের কোনো তেলই পাওয়া যায়নি, সিটি ও অন্যান্য কোম্পানির সরবরাহও সীমিত। এমনকি কিছু ডিলারের তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে, যার ফলে তেল কেনার সামর্থ্য কমে যাচ্ছে। এতে খুচরা বাজারেও সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

আমদানি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ

কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) একই হারে বেড়েছে। বৈশ্বিক বাজারও স্থিতিশীল। তাহলে এত আমদানি হওয়ার পরও সরবরাহ কমে গেল কেন?

কৃত্রিম সংকট ও পাচারের সন্দেহ

বিটিটিসি ও মিলমালিকেরা মনে করছেন, বাজারে প্রকৃত সংকট নেই, বরং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। সরবরাহ চেইনে কোথাও অসংগতি রয়েছে।

গত রোববার এ-বিষয়ক এক বৈঠকে বিটিটিসি ও মিলমালিকেরা ধারণা করছেন, প্রতিবেশী দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেশি হওয়ায় অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের মাধ্যমে তেল পাচার হচ্ছে। বৈঠক থেকে এ বিষয়ে সীমান্তবর্তী জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযানে কী ধরা পড়েছে

গতকাল সোমবার রাজধানীতে বাজার অভিযান চালিয়ে দেখা গেছে, কিছু পাইকারি ব্যবসায়ী নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে তেলের ডিও বিক্রি করছেন। মৌলভীবাজারে এক ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগের দিন, কেরানীগঞ্জ ও নয়াবাজারে অভিযান চালিয়ে ছয় প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তেলের সঙ্গে চিনি, ময়দা, আটা, চা-পাতা কিনতে বাধ্য করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

অতিরিক্ত মজুতের আশঙ্কা

বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় বোতলজাত তেল খোলা তেলে পরিণত করে বিক্রি করতে পারেন। এ ছাড়া অতিরিক্ত মজুত রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

এই অস্থিরতা কত দিন চলবে

বিটিটিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৩-২৪ লাখ টন। তবে রমজান মাসে চাহিদা বাড়ে, যা ১ দশমিক ৮ থেকে ৩ লাখ টন পর্যন্ত হতে পারে। বাজার তদারকি জোরদার না হলে সংকট আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। সরকারি সংস্থাগুলো কড়া নজরদারি ও বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না নিলে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। সংকটের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও সমাধান না হলে ভোক্তাদের দুর্ভোগ অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত