Ajker Patrika

হবিগঞ্জে ৫১ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জে ৫১ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

হবিগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও কয়েকটি এলাকা। আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেলার আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ সদর ও মাধবপুর উপজেলার ৫১টি ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫ লাখ মানুষ। 

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, জেলার ২২৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে ২৩ হাজার ২৩৫টি পরিবারের। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৭৯ হাজার ৭২০ জন। তবে সরকারি এই তথ্যটি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। স্থানীয়রা বলছে, ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি। 

এদিকে রাস্তা-ঘাট ভাঙন ও তলিয়ে যাওয়ায় গ্রাম থেকে বের হতে পারছেন না অনেক মানুষ। চুলা তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে রান্নাবান্না। গত কয়েক দিন ধরে শুকনো খাবার খেয়েই দিন কাটছে অসহায় মানুষদের। আবার না খেয়ে থাকা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন সীমাহীন দুর্ভোগে। 

আশ্রয় কেন্দ্রের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ৪ দিন ধরে শুকনো খাবার ছাড়া কিছুই মেলেনি তাঁদের। আবার অনেক জায়গায় এখনো পৌঁছায়নি খাদ্য সহায়তা। 

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার পর্যন্ত সরকারিভাবে ১০ লাখ টাকা, ২০০ মেট্রিক টন চাল এবং ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া আরও ৫০০ মেট্রিকটন চাল বন্যার্তদের জন্য মজুত রয়েছে। জেলায় বন্যার্তদের চিকিৎসার জন্য মাঠে কাজ করছে ৩০টি মেডিকেল টিম। 

ঘরে পানি, তাই রাতে ঘুমানোর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে অন্যত্র যাচ্ছে এক শিশু। ছবি: আজকের পত্রিকাকৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বন্যার পানিতে ১৫ হাজার ৭১০ হেক্টর আউশ, ১৪ হাজার ৬৩০ হেক্টর বোনা আমন, এক হাজার ৫৯৭ হেক্টর শাকসবজি এবং অন্যান্য ৫০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত। 

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মিনহাজ আহমেদ শোভন জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি স্থির ছিল। মাঝে মধ্যে এক সেন্টিমিটার বাড়লেও আবার কমে যাচ্ছে। তবে নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার লোকালয়ে বন্যার পানি আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। হবিগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদীর পানি ছিল বিপৎসীমার নিচে। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, বন্যার্তদের জন্য এরই মধ্যে ৭০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোও বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বন্যার্তদের। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত