Ajker Patrika

‘সরকারি ভোট আইলে নৌকায় দিমু, এ ভোট দিমু না’

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ০৫
‘সরকারি ভোট আইলে নৌকায় দিমু, এ ভোট দিমু না’

‘সরকারি ভোট আইলে নৌকায় দিমু, এ ভোট দিমু না। আমাদের জাতি ভাই আইলে আমাদের লাভ, আমাদের দাবি আদায় হবে, হাজরি বাড়বে, ছেলেমেয়েরা পড়ালেখার সুযোগ পাবে।’ কথাগুলো বলেন চা-শ্রমিক পুলো হাজরা। 

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদে প্রথমবারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন চা জনগোষ্ঠীর ছেলে প্রেমসাগর হাজরা। শ্রীমঙ্গল চা জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত হওয়ায় ভোটের মাঠে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে তাঁদের। সব সময়ের নৌকার ভোটার চা জনগোষ্ঠীর লোকজন এই নির্বাচনে তাঁদের জনগোষ্ঠীর প্রার্থীকে ভোট দিতে একতাবদ্ধ। তাঁরা জানান, বিভিন্ন প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে তাঁদের প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। 

শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ফাঁড়ি বাগানসহ ৪৬টি চা-বাগান রয়েছে, আদিবাসী পুঞ্জী রয়েছে ১১টি। উপজেলায় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৬ জন ভোটারের মধ্যে আদিবাসী ও চা জনগোষ্ঠীর ভোটার রয়েছেন ৭৫ হাজার। 

শিক্ষার্থী মনতলা হাজরা জানান, ‘আমাদের প্রার্থী সব প্রার্থী থেকে বেশি শিক্ষিত, তিনি স্নাতকোত্তর। আমরা চাই তিনি পাস করলে আমাদের চা জনগোষ্ঠীর উন্নতি হবে। আমাদের পূর্বপুরুষ থেকে এখন পর্যন্ত নৌকায় ভোট দিছি, এখনো দেব। তবে এই নির্বাচন রাজার ভোট নায়, স্থানীয় ভোট। তাই আমরা সবাই আমাদের মানুষকে ভোট দিচ্ছি।’ 

চা-শ্রমিক হরিবল দোশাদ বলেন, ‘আমরা সারা জীবন নৌকার মানুষ। আমাদের বলা হয়েছে নৌকায় ভোট দিতে। আমরা বলেছি, এ ভোট দিতে পারব না। শেখ হাসিনার ভোট আসলে দেব, এখন আমাদের মানুষ আছে। চা-শ্রমিক বৃষ্টিতে ভেজে রোদে পোড়ে, জীবন বদলায় না। আমাদের ভোটের অধিকার যেমন আছে, আমাদের চেয়ারম্যান পাওয়ার অধিকারও আছে।’ 

আজ সকাল ৮টায় ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে শূন্য আসনের উপনির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চা জনগোষ্ঠীর সদস্য শ্রমিক লীগের নেতা আনারস প্রতীক নিয়ে প্রেমসাগর হাজরা, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ভানু লাল রায়। কৃষক লীগের সভাপতি আফজাল হক ঘোড়া প্রতীক এবং জাতীয় পাটি থেকে লাঙল প্রতীক নিয়ে মিজানুর রব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, নির্বাচন ঘিরে যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে একজন করে সাবইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ১৭ জন সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে। তা ছাড়া উপজেলার ৮০টি ভোটকেন্দ্রসহ পুরো উপজেলায় ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দুজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনের আটটি মনিটরিং টিম কাজ করছে। এ ছাড়া পুলিশের পোশাকধারী আটটি স্টাইকিং ফোর্স ও দুটি সাদা পোশাকধারী স্টাইকিং ফোর্স নিয়োজিত আছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিন প্লাটুন বিজিবি সদস্য, র‍্যাবের দুটি স্টাইকিং ফোর্সসহ একাধিক টিম মাঠে মোতায়েন করা করছে। 

শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি পৌরসভা ছাড়াও ৯টি ইউনিয়নের মোট ৮০টি ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৬ জন ভোটার। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ১৯৫ জন এবং নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৭২১ জন। 

উল্লেখ্য, গত ২১ মে শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের টানা তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান রণধীর কুমার দেবের মৃত্যুতে পদটি শূন্য হয়ে যায়। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনে শূন্য পদে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত