Ajker Patrika

অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় সড়ক যেন মৃত্যুকূপ

  • হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রম ও সড়কবাতি নেই
  • অবৈধ স্ট্যান্ড ও পার্কিংয়ে সড়ক সরু হয়ে যায়
  • নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করে বেপরোয়া গতিতে
  • আন্দোলন করেও অনিয়মের প্রতিকার মিলছে না
লবীব আহমদ, সিলেট 
অবৈধ পার্কিংয়ে সরু হয়ে গেছে সিলেট-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া সাকেরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
অবৈধ পার্কিংয়ে সরু হয়ে গেছে সিলেট-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জের পাড়ুয়া সাকেরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় সিলেট-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক যেন মৃত্যুকূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সড়কে নেই সড়কবাতি। হাইওয়ে পুলিশের কোনো কার্যক্রমও নেই। অবৈধ পার্কিংয়ে সড়ক সরু হওয়া, নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল, লাইসেন্সবিহীন চালকের বেপরোয়া গতি ইত্যাদি কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে, পঙ্গু হচ্ছে কেউ কেউ।

মানুষ রাস্তায় আন্দোলন করেও এসব অনিয়মের কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।

সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক দিয়েই যেতে হয় পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথরে। তাই এ সড়ক ব্যবহার করে বিপুলসংখ্যক পর্যটক। এরই মধ্যে দুর্ঘটনায় অনেক পর্যটক প্রাণ হারিয়েছে।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) জানিয়েছে, সিলেট জেলায় ২০২৪ সালে ১৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫৭ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে জেলার সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কে সর্বোচ্চ ২২টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছে। চলতি মাসের প্রথমার্ধে এই সড়কে দুর্ঘটনায় ৪ জন প্রাণ হারিয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল আরোহী এক পল্লিচিকিৎসক নিহত হন। ১২ ফেব্রুয়ারি ট্রাকের ধাক্কায় পর্যটক এক শিশু প্রাণ হারায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি দুই ট্রাকের সংঘর্ষ এক ট্রাকচালকের মৃত্যু হয় এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার আরোহী ২ বছরের এক শিশু নিহত হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে ট্রাক, টমটম ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড। ফলে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। আর এই সড়কের বেশির ভাগ জায়গায় অবৈধভাবে গাড়ি পার্ক করা হয়। সড়কের ধোপাগুল, থানা বাজার, টুকের বাজার এবং পাড়োয়া এলাকায় অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে রাস্তা দিয়ে মাত্র একটি গাড়ি চলাচল করতে পারে।

মহাসড়কে টমটম-ইজিবাইক চলার কথা না থাকলেও চলছে বেপরোয়াভাবে। কোম্পানীগঞ্জের থানাবাজার থেকে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত রয়েছে এই টমটম-ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য। এসব যানবাহন ডান-বাম না দেখে মুহূর্তে সড়কে উঠে পড়ছে; আবার হঠাৎ গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলছে। এসব বাহনের বেশির ভাগ চালক শিশু-কিশোর। যাদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স। অনেক গাড়িরও নিবন্ধন নেই।

এত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের কোথাও নেই স্পিড ব্রেকার। তাই চালকেরা নিজেদের ইচ্ছেমতো বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে। এ ছাড়া মহাসড়কের কোথাও কোনো সড়কবাতি নেই। ফলে রাত নামলে সড়ক অন্ধকারে ডুবে যায়।

তা ছাড়া হাইওয়ে পুলিশের কোনো কার্যক্রম নেই এই সড়কে। কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সড়কের যত্রতত্র রাখা গাড়ি সরাতে থানা-পুলিশকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না এলাকাবাসী। এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার তাঁর অফিসে গিয়ে বক্তব্য নিতে বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি।

১৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলার গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সড়কে অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদ এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা স্থানীয় বাসিন্দা কবির আহমদ বলেন, ‘আমরা বাড়ি থেকে বের হলে অনেকটা আশঙ্কা নিয়ে বের হই যে সড়কে কখন না জানি কী হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই সড়কে নজর দিলে দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা সম্ভব।’

নিসচা জানায়, এই সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের (তদারকি) অভাব, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং, লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, সিট বেল্ট ব্যবহার না করা, বিরতি ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানো, চালকের মাদকের আসক্তি, মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বেড়ে যাওয়া, মোটরসাইকেলচালকদের মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা, রোড মার্কিং পর্যাপ্ত না থাকা, রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট বসানো দুর্ঘটনার কারণ। এ সড়কে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মধ্যে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সড়ক করলেও কোনো লেন দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন পাম্প থেকে গাড়ি সড়কে ওঠারও কোনো আলাদা লেন নেই। তাই এ রকম স্থানে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। পার্কিং লেন আলাদা করতে হবে, আর এতে রিফ্লেক্টিং আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।

সড়কের নিরাপত্তায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিলেটের সাংবাদিক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম জানান, এই সড়কের নানা অব্যবস্থাপনার সমাধান না করলে দুর্ঘটনা রোধ করা অসম্ভব। এসব ব্যাপারে চালক ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করাসহ আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।

হাইওয়ে পুলিশের সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি খায়রুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে সড়ক ব্যবস্থাটাই ঠিক নয়। মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি যেখানে ওঠারই কথা নয়, সেখানে সব ধরনের গাড়ি চলছে। এখন অন্যান্য গাড়ি বা মানুষের চলাচলের জন্য আলাদা কোনো রাস্তাও নেই। যার কারণে সবাই মহাসড়ক ব্যবহার করছে; আর এতে করে নানা সময়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। এ জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে আমাদের লোকবল কম থাকায় সব জায়গায় পাঠাতে পারি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ শঙ্কামুক্ত, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সরওয়ার বাবলা নামে আরেকজন নিহত হয়েছেন। শান্ত নামে এক বিএনপি কর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হতাহত তিনজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনজনের মধ্যে সরওয়ার বাবলা মারা গেছেন। বাকি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনাস্থলে গুলিতে লুটিয়ে পড়া সরওয়ার বাবলার একটি ছবি আজকের পত্রিকার সংগ্রহে এসেছে। বুধবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাঁচলাইশের হামজার বাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, মনোনয়ন পেয়ে হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন এরশাদ উল্লাহ। সময়টা ছিল মাগরিবের নামাজের পরপরই। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরশাদ উল্লাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করে।

ঘটনাস্থলে এরশাদ উল্লাহর কাছাকাছি থাকা বিএনপি নেতা মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমি এরশাদ ভাইয়ের খুব কাছেই ছিলাম। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়া শুরু করে। হুড়োহুড়িতে আমি নিজেও পায়ে আঘাত পেয়েছি।’ বর্তমানে তিনিও এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল।

বিষয়টি জানতে বায়েজিদ থানারি ওসিকে বারবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় মুজিবুর রহমান শেখ (৪৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে মোড়লডাঙ্গা এলাকার একটি বাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

মুজিবুর উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের মোড়লডাঙ্গা গ্রামের গোলাপ শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ সকালে মোড়লডাঙ্গায় নিজাম শেখের বাগানের একটি মেহগনিগাছে মুজিবুরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।

মৃতের ভাই জিল্লাল শেখ ও হাবি শেখের দাবি, তাঁদের ভাইকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। তাঁরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কে বা কারা মুজিবুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজজাক মীর বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে সঠিকভাবে জানা যাবে আসলে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ইয়াছিনের সমর্থকদের বিক্ষোভ, অগ্রভাগে নারীরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা নারীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়।

নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূবালী চত্বরে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইয়াছিনকে কুমিল্লা-৬ আসনে দলের প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন তাঁর অনুসারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের মিছিলে প্রায় ৮ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ‘ইয়াছিন ভাইয়ের মনোনয়ন ফেরত চাই’, ‘৮-এর প্রার্থী ৬-এ কেন—মানিনা, মানব না’, ‘আমি কে, তুমি কে, ইয়াছিন ভাই, ইয়াছিন ভাই’, ‘জেল-জুলুম, কারাগারে ইয়াছিন ভাই’ স্লোগান দেন।

ইয়াছিনের সমর্থকেরা বলছেন, ইয়াছিন দীর্ঘদিন ধরে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সহায়তায় নেতা-কর্মীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা খরচ, পারিবারিক সহায়তা, ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, রাজনৈতিক অবদান ও তৃণমূলের সঙ্গে সংযুক্তি বিবেচনা করে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলে হাজি ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকা কলা ঘুষ নেওয়া সেই কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

­যশোর প্রতিনিধি
পাকা কলা, আলমগীর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
পাকা কলা, আলমগীর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কাজ করে দেওয়ার কথা বলে পাকা কলা ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করা যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জানা গেছে, জেলা পরিষদের জমি ইজারার নামে উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে গত ২৬ অক্টোবর যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি হয়। গণশুনানিতে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পাকা কলা ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন আলমগীর হোসেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। দুদক কমিশনারের নির্দেশনার ১০ দিন পর আজ আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

জেলা পরিষদের আদেশে বলা হয়, গত ২৬ অক্টোবর যশোরে দুদকের গণশুনানিতে রুস্তম আলীসহ আরও চার ব্যক্তির জমি ইজারা প্রদানসংক্রান্ত যশোর জিলা পরিষদে কর্মরত উচ্চমান সহকারী মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক গণশুনানি অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী যশোর জেলা পরিষদে কর্মরত উচ্চমান সহকারী মো. আলমগীর হোসেনকে অন্যত্র বদলিসহ সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনা দেন। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে এই দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন বলেন, উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হবে। মামলার তদন্তে প্রমাণিত হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক ছুটিতে থাকায় আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করতে দেরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত