Ajker Patrika

মেসির ভূমিকায় তারেক রহমান, গোল এবার হবেই: দুলু

রংপুর প্রতিনিধি
মেসির ভূমিকায় তারেক রহমান, গোল এবার হবেই: দুলু

সরকার বিএনপির সঙ্গে ‘ডিফেন্সিভ’ খেলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। আজ শনিবার দুপুরে রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্বরের বটতলায় পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ পদযাত্রার আয়োজন করে রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানা বিএনপি।

বিএনপি নেতা আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সরকার বিএনপির সঙ্গে ডিফেন্সিভ খেলছে। যখন যে দল গোল খায়, সেই দল কিন্তু গোলবারের সামনে দাঁড়ায়, প্রোটেকশন দেওয়ার জন্য, যাতে গোল না হয়। কিন্তু আর উপায় নেই, কারণ তারেক রহমান মেসির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। গোল এবার হবেই হবে। যতই আওয়ামী লীগ গোলবারে প্রোটেকশন দেন, কোনো লাভ হবে না।’

খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা প্রসঙ্গে আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা এখন হঠাৎ কেন উল্টো পথে আসছেন। তারা এখন বলছেন খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো আপত্তি নেই। এর মানে তারা ভয়ে ভীত হয়েছেন। কিন্তু আমরা সরকারকে বিশ্বাস করি না। এই সরকারের এমনই কারসাজি, তাদের কথার সাথে কাজের কোনো মিল নেই। আমরা জানি শয়তান মানুষকে কু-বুদ্ধি দেয়, আর আওয়ামী লীগ শয়তানকে বুদ্ধি দেয়। সুতরাং আওয়ামী লীগের কথা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।’

বিএনপি নেতা দুলু বলেন, ‘সমুদ্রে যেমন নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়ে আস্তে আস্তে ভূমিকম্প-ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, বিএনপিও সেই ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার মনে করছে এই ধরনের পদযাত্রা দিয়ে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। কিন্তু আমরা সরকারকে বলছি, অপেক্ষা করেন নিম্নচাপ শুরু হয়েছে, শিগগিরই ঘূর্ণিঝড় হবে বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। এই দানব সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত আমরা কেউ ঘরে ফিরে যাব না।’

আসাদুল হাবিব বলেন, ‘সরকার যদি দ্রব্যমূল্য কমিয়ে, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে, বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করে এবং বিদ্যুতের দাম কমিয়ে দেয়, তাহলে মানুষের মনে শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু তা না করে সরকার শান্তির নামে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায়। আমাদের পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করতে চায়। এটি সরকারের জন্য ভালো হবে না। আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের কথা মনে হলে একাত্তর সালের শান্তি কমিটির কথা মনে হয়। পাক হানাদার বাহিনীরা যখন আর বাংলাদেশের মানুষকে মোকাবিলা করতে পারছিল না, তখন তারা শান্তি কমিটি গঠন করেছিল। আজ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন নাভিশ্বাস উঠেছে। সবকিছুর দাম বাড়িয়ে আমাদের জীবন দুর্বিষহ করছে সরকার।’

বিএনপির সাংগঠনিক নেতা আসাদুল হাবিব বলেন, ‘এখন প্রতিদিন, প্রতি মাসে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেদিকে সরকারের কোনো দুঃখ নেই। কারণ সরকারের যারা রয়েছেন, তারা অবৈধ টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তারা বাংলাদেশের বাইরে কানাডায় বেগমপাড়ায় বাড়ি বানিয়েছেন। তারা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমে বাড়ি বানিয়েছেন। আর বাংলাদেশের মানুষ আজকে না খেয়ে কষ্টের মধ্যে আছে। অথচ মানুষদের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে সরকার পরিহাস করে বলছে দেশে নাকি কিছুই হয়নি।’

এর আগে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোড থেকে পদযাত্রা নিয়ে বের হন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পদযাত্রাটি পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়, প্রেসক্লাব চত্বর, গ্র্যান্ড হোটেল মোড় হয়ে শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচিতে বিএনপি ছাড়াও ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, জাসাস, ওলামা দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

সমাবেশে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন—বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোন্নাফ মুন্নাফ, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ নেওয়াজ লাবু, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজেকা সুলতানা ফেন্সি প্রমুখ।

একই দিনে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, দমন-পীড়ন বন্ধ, খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতা–কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে রংপুর মহানগরীর তাজহাট, মাহীগঞ্জ, পরশুরাম, হাজিরহাট ও হারাগাছ থানা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কারণে এক্সে তোপের মুখে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ও তাঁর মেয়ে

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত