রিমন রহমান, রাজশাহী
দূরে পড়ে আছে গুলিতে ঝাঁজরা এক তরুণের লাশ। লাঠি হাতে ঠকঠক করে কাছে আসেন এক বৃদ্ধা। লাশের কাছে গিয়ে তিনি বললেন, ‘অয়, অয় রে বাপ, এমন ঘুমাছু কেনে? উঠ, উঠ। উঠ বাজান, বেলা যায়, উঠ। হঠাৎ চমকে উঠে লাশ। চারদিক দেখে প্রশ্ন করে, কে? কে তুমি? শত্রু, না বন্ধু? বৃদ্ধা বলেন, ‘আমারে চিনতি পারলি না বাজান? তোর মা। গর্ভে ধরেছিলাম তোরে।’
নওগাঁ জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা ঊনমানুষ নাটকের শুরুর দৃশ্য এটি। হত্যাকাণ্ডের শিকার এক সাধারণ মানুষের লাশ নিয়ে নাটকের কাহিনি আবর্তিত। লাশটি পড়ে থাকে, কিন্তু সৎকার হয় না। পচে গলতে শুরু করা লাশের দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মহানন্দে লাশটি খেতে চায় শেয়াল-শকুনের দল। লাশটির একমাত্র বাসনা তার বুলেটবিদ্ধ শরীরের সম্মানজনক সমাপ্তি বা অন্তিম সৎকার। শাসক-শোষিতের ব্যবচ্ছেদ এ নাটকের মূল বিষয়।
বিভাগীয় পর্যায়ে মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসবের প্রথম দিন রোববার রাতে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। অনেক আগেই মারা যাওয়া মাকে লাশ প্রশ্ন করে, ‘ঘুম ভাঙালে কেনে? কোনো কালে শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। এত আওয়াজ-কেওয়াজ মানুষে মানুষে! এখন কী শান্তির ঘুম!’
মা বলেন, ‘এখনো পইড়ে পইড়ে ঘুমানোর সময় হয়নি রে বাপ! এখনো যে তোর সৎকার হয়নি। বারোটা ছোট্ট বুলেট তোর পিঠ ফুঁড়ে ঢুকে বুক ফেড়ে বারো দিকে বেরিয়ে গেছে। তুই সামনে হয়তো দেখাইছিলি বুকচেতা বড়াই। পেছনে তোরে দেখতেছিল মরণ। এত নড়াই বড়াই কইরি কি লাভ হলো তোর? সেই তো একই পরিণতি।’
লাশ কেঁদে কেঁদে বলে, ‘তাহলে আমি ক্যান মরলাম মা?’ মা বলেন, ‘তা তো জানি নে বাপ! ধর, জন্মিছিস তাই মরছিস। জন্মাইলে মরতি অয়। ঘোড়া মরে, হাতি মরে, বাঘ মরে, শিয়াল মরে, পিপীলিকা মরে, হরিণ মরে, মশা মরে, মাছি মরে, সব মরে। মইরে ভূত হয়্যা যায়।’
এভাবেই নাটকের কাহিনি এগিয়ে যায়। কবরের জন্য একটু মাটি না মেলায় আর্তনাদ করে লাশ বলে, ‘বিরামে মরলেও ভালা ছিল। তখন মরলে তো ঠিকঠাক মাটি হইতো। অহন তো এত বড় পৃথিবীর কোত্থাও একটু মাটি জুটছে না রে মা! আমার জন্য এত্ত বড় পৃথিবীর কোনো জমিন নাই। আমি কি শেয়াল-শকুনের প্যাটেই থাকমু? আসার আগে তর প্যাটে ছিলাম। শ্যাষে যাব শেয়াল-শকুনের প্যাটে। ক্যান আনছিলি দুনিয়ায়? তুইও একটা শেয়াল, তুইও একটা শকুন। তোরা সক্কলে পশু।’ মৃত ছেলের কথা শুনে হু হু করে কাঁদেন বৃদ্ধা।
নাটকটির পাণ্ডুলিপি নির্মাণ করেছেন তামান্না জাহান নেলী। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন ড. আমির জামান। অভিনয় করেন নিমাই চন্দ্র সরকার, অসীম কুমার মহন্ত, মৃণাল কান্তি সরকার, মাগফুরুল হাসান বিদ্যুৎ, নওরীন আখতার শারমিন, মুনিরা সুলতানা, নাবিলা তাবাচ্ছুম বর্ষা প্রমুখ।
এর আগে সন্ধ্যা থেকে একই মঞ্চে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা লাশের ইশতেহার মঞ্চস্থ হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এই নাটকের মূল উপজীব্য। জুলাই আন্দোলন, হত্যাযজ্ঞ এবং গণমাধ্যমে সংবাদ চেপে রাখার প্রবণতা ফুটিয়ে তোলা হয় এ নাটকে। এতে অভিনয় করেন তন্ময় কুমার, ফজলে রাব্বী সিয়াম, ওয়াসিকুল ইসলাম রমিত, ইফতিখার আদদীন, রাফিয়া ইসলাম তমা, হিমালয় রায়, খন্দকার উমামা নূর, অনন্যা সেন, সাদেক রহমান প্রমুখ।
সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিভাগীয় পর্যায়ের এ নাট্যোৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আখতার জামীল। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহিনুল হাসান।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার শাহাদাৎ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।
আগামী বুধবার পর্যন্ত এই নাট্যোৎসব চলবে। আজ সোমবার জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ; আগামীকাল মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ ও পাবনা এবং বুধবার বগুড়া ও নাটোরের নাটক মঞ্চস্থ হবে।
দূরে পড়ে আছে গুলিতে ঝাঁজরা এক তরুণের লাশ। লাঠি হাতে ঠকঠক করে কাছে আসেন এক বৃদ্ধা। লাশের কাছে গিয়ে তিনি বললেন, ‘অয়, অয় রে বাপ, এমন ঘুমাছু কেনে? উঠ, উঠ। উঠ বাজান, বেলা যায়, উঠ। হঠাৎ চমকে উঠে লাশ। চারদিক দেখে প্রশ্ন করে, কে? কে তুমি? শত্রু, না বন্ধু? বৃদ্ধা বলেন, ‘আমারে চিনতি পারলি না বাজান? তোর মা। গর্ভে ধরেছিলাম তোরে।’
নওগাঁ জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা ঊনমানুষ নাটকের শুরুর দৃশ্য এটি। হত্যাকাণ্ডের শিকার এক সাধারণ মানুষের লাশ নিয়ে নাটকের কাহিনি আবর্তিত। লাশটি পড়ে থাকে, কিন্তু সৎকার হয় না। পচে গলতে শুরু করা লাশের দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মহানন্দে লাশটি খেতে চায় শেয়াল-শকুনের দল। লাশটির একমাত্র বাসনা তার বুলেটবিদ্ধ শরীরের সম্মানজনক সমাপ্তি বা অন্তিম সৎকার। শাসক-শোষিতের ব্যবচ্ছেদ এ নাটকের মূল বিষয়।
বিভাগীয় পর্যায়ে মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসবের প্রথম দিন রোববার রাতে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। অনেক আগেই মারা যাওয়া মাকে লাশ প্রশ্ন করে, ‘ঘুম ভাঙালে কেনে? কোনো কালে শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। এত আওয়াজ-কেওয়াজ মানুষে মানুষে! এখন কী শান্তির ঘুম!’
মা বলেন, ‘এখনো পইড়ে পইড়ে ঘুমানোর সময় হয়নি রে বাপ! এখনো যে তোর সৎকার হয়নি। বারোটা ছোট্ট বুলেট তোর পিঠ ফুঁড়ে ঢুকে বুক ফেড়ে বারো দিকে বেরিয়ে গেছে। তুই সামনে হয়তো দেখাইছিলি বুকচেতা বড়াই। পেছনে তোরে দেখতেছিল মরণ। এত নড়াই বড়াই কইরি কি লাভ হলো তোর? সেই তো একই পরিণতি।’
লাশ কেঁদে কেঁদে বলে, ‘তাহলে আমি ক্যান মরলাম মা?’ মা বলেন, ‘তা তো জানি নে বাপ! ধর, জন্মিছিস তাই মরছিস। জন্মাইলে মরতি অয়। ঘোড়া মরে, হাতি মরে, বাঘ মরে, শিয়াল মরে, পিপীলিকা মরে, হরিণ মরে, মশা মরে, মাছি মরে, সব মরে। মইরে ভূত হয়্যা যায়।’
এভাবেই নাটকের কাহিনি এগিয়ে যায়। কবরের জন্য একটু মাটি না মেলায় আর্তনাদ করে লাশ বলে, ‘বিরামে মরলেও ভালা ছিল। তখন মরলে তো ঠিকঠাক মাটি হইতো। অহন তো এত বড় পৃথিবীর কোত্থাও একটু মাটি জুটছে না রে মা! আমার জন্য এত্ত বড় পৃথিবীর কোনো জমিন নাই। আমি কি শেয়াল-শকুনের প্যাটেই থাকমু? আসার আগে তর প্যাটে ছিলাম। শ্যাষে যাব শেয়াল-শকুনের প্যাটে। ক্যান আনছিলি দুনিয়ায়? তুইও একটা শেয়াল, তুইও একটা শকুন। তোরা সক্কলে পশু।’ মৃত ছেলের কথা শুনে হু হু করে কাঁদেন বৃদ্ধা।
নাটকটির পাণ্ডুলিপি নির্মাণ করেছেন তামান্না জাহান নেলী। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন ড. আমির জামান। অভিনয় করেন নিমাই চন্দ্র সরকার, অসীম কুমার মহন্ত, মৃণাল কান্তি সরকার, মাগফুরুল হাসান বিদ্যুৎ, নওরীন আখতার শারমিন, মুনিরা সুলতানা, নাবিলা তাবাচ্ছুম বর্ষা প্রমুখ।
এর আগে সন্ধ্যা থেকে একই মঞ্চে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা লাশের ইশতেহার মঞ্চস্থ হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান এই নাটকের মূল উপজীব্য। জুলাই আন্দোলন, হত্যাযজ্ঞ এবং গণমাধ্যমে সংবাদ চেপে রাখার প্রবণতা ফুটিয়ে তোলা হয় এ নাটকে। এতে অভিনয় করেন তন্ময় কুমার, ফজলে রাব্বী সিয়াম, ওয়াসিকুল ইসলাম রমিত, ইফতিখার আদদীন, রাফিয়া ইসলাম তমা, হিমালয় রায়, খন্দকার উমামা নূর, অনন্যা সেন, সাদেক রহমান প্রমুখ।
সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিভাগীয় পর্যায়ের এ নাট্যোৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আখতার জামীল। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহিনুল হাসান।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার শাহাদাৎ হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।
আগামী বুধবার পর্যন্ত এই নাট্যোৎসব চলবে। আজ সোমবার জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ; আগামীকাল মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ ও পাবনা এবং বুধবার বগুড়া ও নাটোরের নাটক মঞ্চস্থ হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ফের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এবার বাস বন্ধ করে দিয়েছেন খোদ মালিকেরাই। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বজলুর রহমান রতন।
৪০ মিনিট আগেএকপর্যায়ে চালক পেছনের দুই যাত্রীকে ‘বস বস’ বলে কী যেন বলতে থাকেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার পার হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে থাকা দুই যাত্রী হঠাৎ মোকসেদ আলীর চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলেন। তখন তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা আদতে অপহরণকারী চক্রের সদস্য।
১ ঘণ্টা আগেনওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুল হককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপসচিব তানিয়া ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগেপটুয়াখালীর বাউফলে একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিপুলসংখ্যক নতুন ও পুরোনো পাঠ্যবই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা বইগুলো উদ্ধার করে স্কুলে জমা দিয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে