Ajker Patrika

মৌ চাষে স্বাবলম্বী হতে চান চাষিরা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৮: ২৪
মৌ চাষে স্বাবলম্বী হতে চান চাষিরা

জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের মাঠে মাঠে মৌমাছির বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা। মৌ চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য তাঁদের এই ব্যস্ততা।

জানা যায়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রশিক্ষণার্থী তাঁরা। 

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকারদের দাবি, সরকার স্বল্প সুদে ঋণ দিলে তাঁরা সহজেই স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

জয়পুরহাট বিসিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৩০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সরিষার ফুল থেকে। তবে জেলায় এ বছর সরিষার চাষ বেশি হয়েছে। তাই অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ হবে বলে আশা করছে বিসিক।

সরেজমিনে জানা যায়, জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল, শালগ্রাম, শ্যামপুর, দস্তপুর, হালট্টি, হাদিগারা, হিলকুণ্ডা, তুরাগ, জলাটুলসহ কয়েকটি সরিষার মাঠে চলছে মৌচাষিদের মধু আহরণের ব্যস্ততা। অধিক মধু আহরণের জন্য তাঁরা ৮ থেকে ১০টি দলে বিভক্ত হয়েছেন। প্রতি দলে থাকছেন চার থেকে ছয়য়জন। প্রতিটি দলে থাকছে ৪৫ থেকে ৯৫টি  মৌ বাক্স। সপ্তাহে প্রতিটি দল আহরণ করছে ৫ থেকে ১০ মণ মধু। আর প্রতি কেজি মধু বিক্রি করা হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে। 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বরত কারিগরি সহকারী হাফিজুর রহমান জানান, ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি মৌ চাষের সঙ্গে জড়িত। সারা দেশে ছড়িয়ে আছে তাঁর অসংখ্য শিক্ষার্থী। সরিষা চাষ করে কৃষকেরা যে পরিমাণ টাকা পাবেন, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা পাবেন মৌচাষিরা। কারণ এক কেজি সরিষার মূল্য ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এক কেজি মধুর মূল্য ৪০০ টাকা। জয়পুরহাটে বর্তমানে যে কয়টা দল মধু সংগ্রহের কাজ করছে, তারা কমপক্ষে ১০০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করবে। 

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘মৌ খামারের জন্য বর্ষাকালে মৌচাষিদের অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। মৌমাছিদের পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য দিতে হয়। পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে প্রশিক্ষিত অনেকেই এটিকে পেশা হিসেবে নিতে পারছেন না। এর জন্য সরকার যদি মৌচাষিদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করেন, তাহলে এই খাত হতে পারে বেকারত্ব দূরীকরণের বাতিঘর।’ 

এ বিষয়ে মৌ চাষের নতুন প্রশিক্ষণার্থী ইউসুফ আলী জানান, তিনি মৌ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এতে তাঁর মনে হয়েছে শিক্ষিত বেকারেরা চাকরির পেছনে না ছুটে অল্প সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বল্প পুঁজিতে মৌ চাষের মাধ্যমে সহজেই বেকারত্ব দূর করতে পারবেন।

মৌ চাষের নতুন প্রশিক্ষণার্থী আমিনুর রশিদ জানান, তাঁর ২৫টি মৌবাক্স আছে। পুঁজির অভাবে তিনি তাঁর খামারের পরিধি বাড়াতে পারছেন না। স্বল্প সুদে ঋণ পেলে তাঁর খামার বাড়াতে পারতেন। 

বিসিক জয়পুরহাটের উপব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘জয়পুরহাটের পুরানাপৈল এলাকা থেকে দিনাজপুরের বাঁশেরহাট এলাকায় একটি মৌ চাষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চলমান আছে। বর্তমানে এই জেলায় মৌ চাষ উন্নয়ন প্রকল্প চলমান না থাকায় অন্যান্য জেলার আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের সরকারি সনদ, নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।’  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরিষা খেতের কাছে মৌবাক্স স্থাপন করলে মৌমাছি প্রাকৃতিকভাবে বিচরণ করে। এতে ফুলের পরাগায়ণ বৃদ্ধি পায়। ফলে সরিষার ফলনও বাড়ে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত