Ajker Patrika

নওগাঁর ঘটনার নেপথ্যে দ্বন্দ্ব, প্রহারকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থার সুপারিশ: তদন্ত প্রতিবেদন

নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর ঘটনার নেপথ্যে দ্বন্দ্ব, প্রহারকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থার সুপারিশ: তদন্ত প্রতিবেদন

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘হিজাব পরায়’ শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে হামলার ঘটনা তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। প্রতিবেদনে হিজাব পড়ার কারণে শিক্ষার্থীদের পেটানোর সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গুজব ছড়িয়ে শিক্ষক আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনকে উসকে দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। 

আজ সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান। 

এর আগে সন্ধ্যার দিকে তদন্ত কমিটির প্রধান মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেকসহ কমিটির তিন সদস্য ইউএনওর কাছে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। 

ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন গত ৬ এপ্রিল দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পাল হিজাবের কারণে নয়; নির্ধারিত স্কুলড্রেস না পরার কারণে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী ও শরীরচর্চা শিক্ষক বদিউল আলম কয়েকজন ছেলে শিক্ষার্থীকে প্রহার করেন। স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষক আমোদিনী পালকে ফাঁসানোর জন্য ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। যাঁরা এই গুজব ছড়িয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।’ 

এ ছাড়া গত ৭ এপ্রিল বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন ব্যক্তি হামলা চালিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন ইউএনও। 

ইউএনও আরও বলেন, ‘স্কুলড্রেস না পরে আসায় শিক্ষক আমোদিনী পাল ও আরেক শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের প্রহার করেন। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ শুধু আমোদিনী পালকে শোকজ করেন। এই ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। শুধু শিক্ষক আমোদিনী পালকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের প্রহার করায় শিক্ষক আমোদিনী পাল ও বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে।’ 

গুজব যাঁরা ছড়িয়েছে তদন্ত কমিটি তাঁদের চিহ্নিত করতে পেরেছে কি না জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ‘কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গেছে। তবে এই মুহূর্তে নাম বলা যাচ্ছে না।’ 

তদন্ত কমিটি যেসব পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছে সেগুলো আমলে নিয়ে এই ঘটনায় যেখানে যেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন তা করা হবে বলে জানান ইউএনও। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসী সবাইকে আমরা ডেকেছি। সবার কাছ থেকে সবকিছু শুনেছি এবং তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করেছি। ইউএনও মহোদয় প্রতিবেদন গ্রহণ করেছেন।’ 

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে স্কুলড্রেস না পরায় শিক্ষার্থীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এক দিন পর হিজাব পরায় মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত