Ajker Patrika

বিধবা ভাতার কার্ড ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন লাজিনা

প্রতিনিধি, বগুড়া
বিধবা ভাতার কার্ড ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন লাজিনা

সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসায় বিধবা ভাতার কার্ড ফেরত দিয়েছেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার লাজিনা বেওয়া। উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে গত ৭ জুন তিনি ভাতার কার্ডটি ফেরত দেন। তাঁর ছেলে মামুনুর রশিদ মামুন কার্ডটি ফেরত দিয়ে আসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশংসায় ভাসছেন লাজিনা।

লাজিনার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮২ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে বিধবা হন তিনি। দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে দুঃখ দুর্দশার জীবন ছিল তাঁর। মাত্র ১০ শতাংশ জমি রেখে স্বামী হাদিস আলী মারা যান। ছোট দুটি মেয়ে ও ছয় মাস বয়সী ছেলে মামুনকে আঁকড়ে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। 

 ১৯৯৮ সালে তিনি বিধবা ভাতার তালিকাভুক্ত হন। অনেক কষ্টের মেয়ে দুটিকে বড় করেন, বিয়ে দেন। ছেলে পড়াশোনা শেষ করে ২০১৪ সালে ৩৩ হাজার টাকার বিনিময়ে সরকারিভাবে (জি টু জি পদ্ধতিতে) মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। দুই বছর পর দেশে ফিরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি পান। এতে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আসে। 

লাজিনা বেগম আজকের পত্রিকা বলেন, ‘যখন বিধবা ভাতা তালিকাভুক্ত হয়েছিলাম, তখনই সিদ্ধান্ত নিই যে, সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসলে ভাতার কার্ডটি ফেরত দিব। আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমার ছেলে এখন চাকরি করে। এ কারণে আমি কার্ডটি ফেরত দিয়েছি। তবে কষ্টের দিনে এই কার্ডটি আমাকে অনেক সহায়তা করেছে।’ 

লাজিনার ছেলে মামুন উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের সরকারি চকসোনার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মা আমাদের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলেছেন। মায়ের কথা অনুযায়ী গত ৭ জুন উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়ে বিধবা ভাতার কার্ড ফেরত দিয়ে এসেছি। আমরা এখন অনেক ভালো আছি।’ 

জানতে চাইলে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা শরিফ উদ্দীন বলেন, লাজিনা বিধবা ভাতার কার্ড ফেরত দিয়ে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। করোনা পরিস্থিতি শেষে লাজিনাকে সম্মাননা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কোনো কিছু নেওয়া ঠিক নয়, এটা সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন লাজিনা। 

এদিকে, বিধবা ভাতার কার্ড ফেরত দেওয়া লাজিনাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল জাহাঙ্গীর আলম। 

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লাজিনার এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাতে আমরা তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করেছিলাম। তাঁকে দেখে সবারই শিক্ষা নেওয়া উচিত–প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত কোনো কিছু নেওয়া ঠিক নয়। লাজিনা পুরো উপজেলায় প্রশংসা পাচ্ছেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

অস্থিরতার সামান্য ইঙ্গিত পেলেই আমরা চলে যাব

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত