Ajker Patrika

২১ মাস ধরে ২ নারীর ভিজিডি ‘চাল খাচ্ছিলেন’ মেম্বার-চৌকিদার

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২২, ১১: ৪৭
২১ মাস ধরে ২ নারীর ভিজিডি ‘চাল খাচ্ছিলেন’ মেম্বার-চৌকিদার

নাটোরের বড়াইগ্রামে ভিজিডি কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত দুই দুস্থ নারীর জন্য বরাদ্দ চাল ২১ মাস ধরে এক মেম্বার ও চৌকিদার তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এঘটনায় বড়াইগ্রাম সদর ইউনিয়নের চৌকিদার (গ্রামপুলিশ) বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। আর মাঝগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।  

ভুক্তভোগী নারীরা হলেন- উপজেলার উপলশহর আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী শমসের প্রামাণিকের স্ত্রী আছিয়া বেগম (৩১) ও মাঝগাঁও ইউনিয়নের চুলকাটি গ্রামের লোকমান হোসেনের স্ত্রী মমতাজ বেগম।

আছিয়ার স্বামী শমসের প্রামাণিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর স্ত্রীর নামে ভিজিডি কার্ডের জন্য আবেদন করা হলেও অনুমোদন মেলেনি বলে ইউপি কার্যালয় থেকে জানানো হয়। কয়েক দিন আগে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তাঁর স্ত্রীর নাম আছে বলে তিনি জানতে পারেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজ নিয়েও দেখেন সেখানে তার স্ত্রীর নাম আছে। 

ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তাকে কার্ড ও ৩০ কেজি চাল দিয়ে বিষয়টি ‘কাউকে জানাতে নিষেধ’ করে দেন বলেও জানান শমসের।

তবে ইউপি চেয়ারম্যান মমিন আলী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। ইউএনও অফিস থেকে জানানোর পরে ভুক্তভোগী নারীকে কার্ড ও ৩০ কেজি চাল দিয়েছি। পরে তাঁকে ইউএনও অফিসে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আর অভিযোগের মুখে থাকা বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়ে কিছুই জানি না।’

ভিজিডি কর্মসূচির তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাল না পাওয়ায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আছিয়া বেগম। ছবি: আজকের পত্রিকা মাঝগাঁও ইউনিয়নের চুলকাটি গ্রামের মমতাজ বেগমও জানতেন না ২১ মাস ধরে তার চাল অন্য কেউ খেয়ে ফেলছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিসে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পারেন ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার ২১ মাস ধরে তা চাল অন্য একজনকে দিচ্ছেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করার পর গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে যান আব্দুল জব্বার।

‘আমি এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।’

মমতাজ বেগমের কার্ডের চাল তুলে নেওয়া ও ২০ হাজার টাকা দিয়ে তা চাপা দেওয়া অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য জব্বার হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এবিষয়ে মাঝগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা রয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

দুই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বড়াইগ্রামের ইউএনও মারিয়াম খাতুন বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত