Ajker Patrika

১ টাকায় লালনের চা-পান! 

আব্দুল আওয়াল, বাগাতিপাড়া (নাটোর)
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৫৯
১ টাকায় লালনের চা-পান! 

বর্তমানে এক কাপ চা ও মসলা যুক্ত একটি পানের সর্বনিম্ন মূল্য ৫ টাকা। কিন্তু নাটোরের বাগাতিপাড়ার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের ‘এক টাকার মোড়ে’ রজব ব্যাপারী লালনের দোকানে এখনো পাওয়া যায় ১ টাকা দামের চা-পান। এক কাপ আদা ও চিনি যুক্ত চা এবং মসলা যুক্ত একটি পান লালন বিক্রি করেন ১ টাকায়।

এত কম দামে চা ও পান বিক্রি করে এরই মধ্যে তিনি পুরো দেশেই সাড়া ফেলেছেন। কৌতূহল থেকেই ছুটির দিনগুলোতে বিকেলে লালনের দোকানে ভিড় জমান বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মানুষ। বর্তমানে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা আরও বেড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯১ সালে লালন ৫০ পয়সায় ১টি চা ও সমপরিমাণ অর্থে ১টি পান বিক্রি শুরু করেন। তখন ওই মোড়ের নাম ছিল নওপাড়া মোড়। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে তা বাড়িয়ে ১ টাকা করেন। তাঁর এই ১ টাকায় চা ও পান বিক্রির সুবাদে মোড়টি ‘১ টাকার মোড়’ নামে পরিচিত। এখন সারা দেশের মানুষ এই ‘এক টাকার মোড়’ সম্পর্কে জানে। এমনকি ‘এক টাকার মোড়ের’ নাম গুগল ম্যাপেও পাওয়া যায়। 

চা বিক্রেতা রজব ব্যাপারী লালন বলেন, ‘৩০ বছরের ব্যবসায় মানুষের যে ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি তাতে বেঁচে থাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানোর আর ইচ্ছা নেই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৫ বিঘা জমি আর এই ব্যবসা দিয়ে দুই সন্তানের পরিবার খেয়ে পরে চলে যায়।’ 

লালন আরও বলেন, এই চা ও পান খেতে বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলা থেকেই মানুষ এসেছে। এমনকি সুইজারল্যান্ডের পর্যটকরাও এই চা ও পান খেয়ে গেছেন। 

৮ কিলোমিটার দূর থেকে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৮ আটজন এসেছি। প্রতি মাসে আমরা এভাবেই দল বেঁধে অন্তত ৪ থেকে ৫ দিন আসি। অন্য দোকানে যে চায়ের দাম ৫ টাকা ঠিক একই মানের চা এখানে ১ টাকা।’

নিজ হাতে চা বিতরণ করছেন লালনজামনগর থেকে আসা সজীব হাসান বলেন, ‘আমরা শুধু ১ টাকার মোড়ের নামই শুনেছিলাম। তাই ৫ জন মিলে ঘুরতে এসেছি।’ 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অনেক মানুষ সেই চা ও পান খাচ্ছেন। তাই এই প্রতিবেদক নিজেও একটি চা খেয়ে দেখেন। অন্য দোকানের ৫ টাকার চায়ের থেকে এই চা কোন অংশেই কম নয়।

গাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াংকা দেবী পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘ দিন থেকে ১ টাকায় চা ও পান বিক্রি করাতে সারা দেশে বাগাতিপাড়ার নামটি পরিচিতি লাভ করেছে। সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শুভকামনা রইল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত