Ajker Patrika

ঢাকায় অপহরণ, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে উদ্ধার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৩, ১৯: ৪৯
ঢাকায় অপহরণ, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে উদ্ধার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র

ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদের সামনে থেকে অপহরণের তিন দিন পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি আমবাগান থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মুসলিমপুর বাজারসংলগ্ন আমবাগান থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং পিরোজপুর জেলার সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা। 

ওমর ফারুক আব্দুল্লাহর আত্মীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা মাওলানা আবু সাঈদ আরিফ বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মুসলিমপুর বাজারসংলগ্ন একটি আমবাগানে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশের কাছ থেকে তিনি বাসায় নিয়ে আসেন। 

ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাকরাইল থেকে আমাকে কৌশলে উঠিয়ে নেওয়া হয়। অপহরণকারীরা বিশেষ একধরনের মেডিসিন দিয়ে আমার অনুভূতি শূন্য করে দেয়। আমি কোথায় যাচ্ছি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।’ তিনি আরও বলেন, ‘২৭ ফেব্রুয়ারি আমি কেরানীগঞ্জ থেকে খিলগাঁও যাওয়ার পথে কাকরাইলে নেমেছিলাম। সে সময় এ ঘটনা ঘটে। ওই রাতে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। পরের দিন সকালে বুঝতে পারি আমি কারও কবজায় রয়েছি। প্রথমে ধারণা করেছিলাম, প্রশাসনের লোকজন হতে পারে। তারা সবাই ইংরেজি ও হিন্দিতে কথা বলছিল, বাংলাতে কিছুই বলত না। তখন বুঝতে পারলাম পুলিশ বা ডিবির হাতে পড়ি নাই। ভিন্ন কোনো চক্রের হাতে পড়েছি।’

ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘ঘটনার দ্বিতীয় দিন রাতে আমার পরিবারকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা আনতে বলে। টাকা না পেলে ওপারে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

‘ওপার বলতে তারা কী বোঝাতে চেয়েছে, দুনিয়ার ওপার নাকি বাংলাদেশের ওপার—এটা জানি না। তারা আমার ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস ও ম্যাসেজ দিয়ে টাকা চাইতে বলত। তারা আমাকে যেভাবে বলত, সেভাবে বলতাম। টাকা চাওয়ার জন্য মারধরও করত। উদ্ধার হওয়ার পর বুঝতে পারলাম তারা আমাকে ওপার বলতে কী বুঝিয়ে ছিল। তারা আমাকে চরে বালুর মধ্যেও হাঁটিয়েছে। আমার জুতার মধ্যে বালু লেগেছিল। সব সময় পাঁচ থেকে সাতজন ছিল। আমাকে চার দিন গাড়িতে রেখে ঘোরানো হয়েছে। এর মধ্যে একদিন খেতে দিয়েছিল।’ 
 
জানতে চাইলে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদের সামনে থেকে অপহরণ হন ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ। এ সময় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তার নাকে কাপড় দিয়ে অপহরণ করে। পরে বৃহস্পতিবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মুসলিমপুরে স্থানীয়রা হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ওমর ফারুককে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় নিয়ে আসা হয়। ঘটনার বিস্তারিত শুনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তাঁর চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক পরিচিত লোকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত