Ajker Patrika

সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় প্রতিবেশীর নামে অভিযোগ, ঘাতক আটক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পর থানায় প্রতিবেশীর নামে অভিযোগ, ঘাতক আটক

সাবেক স্ত্রীকে হত্যার পর দায় প্রতিবেশী একজনের ওপর চাপাতে থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন আব্দুল মজিদ নামে এক ব্যক্তি। কৌশলী পুলিশ বিষয়টা আঁচ করতে পেরে তাকে থানায় বসিয়ে রেখে লাশ উদ্ধারে যায়। লাশ উদ্ধার শেষে ঘটনা জেনে আব্দুল মজিদকে আটক করে পুলিশ। 

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ রোববার সকালে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। 

হত্যার শিকার আম্বিয়া খাতুন (৪০) উপজেলার একই ইউনিয়নের উত্তর গোঁড়াগাও গ্রামের মো. নূরুল ইসলামের মেয়ে। হত্যার অভিযোগে আটক আব্দুল মজিদ (৪৫) লেংগুরা ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামের আবুল কাসেম ওরফে খোকা মিয়ার ছেলে। 

এলাকাবাসী জানায়, আম্বিয়া খাতুনের প্রথম বিয়ে হয়েছিল আব্দুল মজিদের বড় ভাই হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তাদের সংসারে তিন ছেলে রয়েছে। তিন বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় হাবিবুর রহমানের মৃত্যু হয়। পরে দেবর আব্দুল মজিদের সঙ্গে বিয়ে হয় আম্বিয়ার। তবে পূর্বের স্বামী হাবিবুর রহমানের ঘরে ৩ ছেলেসহ বসবাস করতে থাকে আম্বিয়া। এদিকে আব্দুল মজিদ বখাটে ও নেশাগ্রস্ত হওয়ায় প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতো। পরে ঢাকা গিয়ে মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ নেন আম্বিয়া। দুই ছেলে তার সঙ্গে ঢাকা গিয়ে কাজ শুরু করে। ছোট ছেলে ময়মনসিংহে একটি মাদরাসায় ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করে। মজিদের অত্যাচার বেড়ে যাওয়ায় একপর্যায়ে অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে কয়েক মাস আগে আব্দুল মজিদকে ডিভোর্স দেন আম্বিয়া। এতে ক্ষিপ্ত হয়েছিল মজিদ। 

এলাকাবাসী আরও জানায়, গত শুক্রবার বাড়ি ফেরে আম্বিয়া। সুযোগ বুঝে শনিবার রাতে বাসায় গিয়ে কুপিয়ে ও মাথায় আঘাত করে আম্বিয়াকে হত্যা করে মজিদ। হত্যার দায় প্রতিবেশির ওপর চাপাতে কৌশল হিসেবে ভোরে থানায় গিয়ে জানায়-তার সাবেক স্ত্রীকে হত্যা করেছে প্রতিবেশী আরশাদুল আলী। পুলিশ মজিদের কৌশল বুঝতে পেরে তাকে থানায় বসিয়ে রেখে লাশ উদ্ধারে যায়। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে পরে মজিদকে আটক করে পুলিশ। 

আম্বিয়া খাতুনের বড়ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আব্দুল মজিদ নেশাগ্রস্ত ও বখাটে। সড়ক দুর্ঘটনায় আগের স্বামী নিহত হওয়ার পর মজিদকে বিয়ে করতে না করেছি। এমনকি আমার বোনও মজিদকে বিয়ে করতে চায় নাই। প্রাণনাশের হুমকিসহ নানান ভয়ভীতি দেখিয়ে বিয়েতে বাধ্য করে মজিদ। বিয়ের পর থেকে আম্বিয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল মজিদ। এনিয়ে সামাজিকভাবে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শালিস করে দেন। একপর্যায়ে মজিদকে তালাক দেন আম্বিয়া। এর জন্য আমাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিলো মজিদ। এখন আমার বোনটাকে নির্মমভাবে খুন করেছে মজিদসহ তার পরিবারের লোকজন। আমরা এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার চাই। 

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফুর রহমান বলেন, আম্বিয়ার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার সাবেক স্বামী আব্দুল মজিদকে আটক করা হয়েছে। এখনো থানায় মামলা হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত