Ajker Patrika

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১৩ দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১৩ দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

জামালপুরের মেলান্দহে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিস আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষা। গত ২ নভেম্বর থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন করছেন শিক্ষকেরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিস আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৮১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। 

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন উপাচার্য। স্বজনপ্রীতি করে তিনি নিজের ছেলে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খান মো. অলিয়ার রহমানের মেয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন। নিয়োগ দিয়েছেন স্থানীয় কয়েক জন আওয়ামী লীগ নেতার স্বজনদেরও। নিয়োগ প্রক্রিয়া ছাড়া তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যবহারের জন্য থেকে একটি আলাদা গাড়ি বরাদ্দ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি বাবদ ৪ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে তাতে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা না। ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন খাতে আষাঢ়ে খরচ দেখিয়ে প্রায় ১২ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৪২০ টাকার কাচ্চি বিরিয়ানির প্যাকেট ২৩০ জনকে বিতরণ না করেও খরচ দেখানো, শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বপালন বাবদ টাকা দেওয়া না হলেও লক্ষাধিক টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার পদে উপাচার্যের ছেলে সৈয়দ তাহসিন আহমেদ, সেকশন অফিসার পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খান মো. অলিয়ার রহমানের মেয়ে রওনক আরা আফরিন, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. কামরুজ্জামানের ছেলে ফয়সাল সরকার সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে ফাহমিদা চৌধুরী এবং উপাচার্যের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পদে মেলান্দহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. সোহাগ সরকার নিয়োগ পেয়েছেন। 

এদিকে নিয়োগ নিয়ে শিক্ষকদের তোলা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মেলান্দহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা সবাই দলীয়ভাবেই চাকরি পেয়েছেন। সেখানে কি কোনো বিএনপির নিয়োগ হয়েছে? উপাচার্যও আওয়ামী লীগ করেন বলেই নিয়োগ পেয়েছেন।’ 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য ড. সৈয়দ সামসুদ্দিস আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষকদের কিছু দাবি ছিল। সেসব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে এবং বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আর নিয়ম নীতি মেনেই সব পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডে আমি ছিলাম না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের জন্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য গাড়ি থাকে। কাচ্চি বিরিয়ানির দাম নিয়ে জানতে উপাচার্য ড. সৈয়দ সামসুদ্দিস আহমেদ আরও বলেন, ‘এতে উপাচার্যের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যা করা হয়েছে, সব নিয়মমাফিকই করা হয়েছে। তা ছাড়া এসব কাজের কমিটিতেও আমি ছিলাম না। যে অভিযোগগুলো তোলা হয়েছে সবগুলোই অসত্য ও বানোয়াট। আমার চাকরির মেয়াদের শেষ মুহূর্তে এসব মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতের আবেদন, শুনানি রোববার

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত