ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
সময়টা ছিল ১৯৬৫ সাল। মাগুরা বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন সেতারা বেগম। যৌথ পরিবারে বড় হলেও সে সবার ছোট বোন। ভাইদের মধ্যে একজন সেনাবাহিনীতে চাকরিরত ছিলেন। সেই ভাইটিই তাকে বেশি ভালোবাসত। যদিও সে তখন পাকিস্তানের করাচিতে চাকরিরত ছিল। তবু বোনকে চিঠি লিখত। সেই চিঠি আসতে দেরি হলে পোস্ট পিয়নের কাছে যেতে হতো। নয়তো পোস্ট অফিসে।
পড়াশোনায় মনোযোগসহ তাঁর ছোট ভাই চিঠিতে লিখতেন বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার কথা। চিঠির পুরোটাই থাকত বহির্বিশ্বের শিল্প সাহিত্য সিনেমা নিয়ে লেখা। উদ্দেশ্য একটাই অজপাড়াগা মাগুরার পারনান্দুয়ালী গ্রামে থেকেও যেন বোনটি চিঠির মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারে। কথাগুলো বলতে গিয়ে সেতারা বেগমের চোখে পানি। ৭১ বছরে বয়সে এসে সেসব চিঠি আর পোস্ট অফিসে অপেক্ষার দিনের কথা মনে পড়ছে।
চিঠি নিয়ে কথা বলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রেজাউল হোসেন। বয়স ৬৭ বছর। ছাত্রজীবন কেটেছে ঢাকায়। মাগুরা সদরের খাটাখাল এলাকায় বাড়ি।
তিনি বলেন, ‘মেসের টাকার জন্য বাড়িতে চিঠি লিখতাম। চিঠি পেয়ে বাবা মানি অর্ডার করতেন। চিঠি উত্তর পেতে এক সপ্তাহ কিংবা দুই সপ্তাহ পেরিয়ে যেত। সেই চিঠিতে মা আর ভাইবোনদের কত কথা লিখতেন বাবা। এ ছাড়া ছোট্ট বোনও নিয়মিত লিখত চিঠি। সেই চিঠিতে লেখা থাকত ‘এবারে বাড়ি এলে যেন ঢাকার নিউমার্কেট থেকে আবারও এক জোড়া স্যান্ডেল আর জামা নিয়ে আসি।’
এ সময় একটা চিঠি আসত বগুড়া থেকে। একে পত্রমিতালি বলা যায়। মেয়েটির সঙ্গে আমার ঢাকায় পরিচয় একটি অনুষ্ঠানে। এরপর ঠিকানা আদান-প্রদান। চিঠি লিখতাম দুজনে। সে নীল খামে ডাক টিকিট লাগিয়ে চিঠি পাঠাত।
সেই চিঠি আমি পকেটে নিয়ে একসময় ঘুরতাম। বলা যায় মেয়েটির প্রেমে পড়েছিলাম। তবে তা সম্ভব হয়েছিল চিঠির কারণে। চিঠির প্রতি অক্ষরে ভাষার জাদু যেন অন্য রকম অনুভূতি। যা এখনকার প্রজন্ম বুঝবে না। আধুনিক প্রযুক্তিতে চিঠি লেখা উঠে গেছে। চিঠিতে মনের অব্যক্ত অনেক কথা বলা যায়। যা টেক্সট দেওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় না।’
চিঠি বিলি সহকারী আলতাফ হোসেন জানান, দুই যুগের বেশি সময় চিঠি বিলি করছি। একসময় নিজের ব্যাগ ভর্তি করে চিঠি বিল করতাম। বেশির ভাগ চিঠি থাকত ব্যক্তিগত চিঠি। বাইসাইকেলে চড়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চিঠি দিয়ে আসতাম। চিঠি পেয়ে কেউ আনন্দিত হতো, কেউ বা আবার বিষণ্ন হয়ে পড়ত। তবে এখন চিঠি বিলি কমে গেছে। আর ব্যক্তিগত চিঠি তেমন চোখে পড়ে না। রেজিস্ট্রি করা চিঠিই এখন বেশি বিলি করতে হয়।
মাগুরা ডাকঘরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর মানুষের ভিড়। প্রায় সবাই সঞ্চয় হিসাবের কাজে এসেছেন। তবে দুঃখের বিষয় চিঠি পোস্ট করতে একজনকেও পাওয়া যায়নি। চিঠি বাছাই করার টেবিল খালি পড়ে রয়েছে।
মাগুরা প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মাহবুবুর রহমান জানান, চিঠি হলো যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। চিঠির মাধ্যমে একজন আরেকজনের অনেক আপন হয়ে উঠে। পরিবারের সুখ দুঃখ প্রকাশ পায় চিঠির মাধ্যমে। আগে প্রযুক্তি এতটা উন্নত ছিল না। তাই মানুষ চিঠিকেই বেছে নিয়েছিল যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে। এখন কেউ ব্যক্তগত চিঠি দিতে পোস্ট অফিসে আসেন না। রেজিস্ট্রি ডাক, অফিশিয়াল চিঠি, সঞ্চয় হিসাব এগুলোই বেশি দেখা যায় পোস্ট অফিসে। এখন পোস্ট অফিসে মোবাইল ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সময়টা ছিল ১৯৬৫ সাল। মাগুরা বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন সেতারা বেগম। যৌথ পরিবারে বড় হলেও সে সবার ছোট বোন। ভাইদের মধ্যে একজন সেনাবাহিনীতে চাকরিরত ছিলেন। সেই ভাইটিই তাকে বেশি ভালোবাসত। যদিও সে তখন পাকিস্তানের করাচিতে চাকরিরত ছিল। তবু বোনকে চিঠি লিখত। সেই চিঠি আসতে দেরি হলে পোস্ট পিয়নের কাছে যেতে হতো। নয়তো পোস্ট অফিসে।
পড়াশোনায় মনোযোগসহ তাঁর ছোট ভাই চিঠিতে লিখতেন বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার কথা। চিঠির পুরোটাই থাকত বহির্বিশ্বের শিল্প সাহিত্য সিনেমা নিয়ে লেখা। উদ্দেশ্য একটাই অজপাড়াগা মাগুরার পারনান্দুয়ালী গ্রামে থেকেও যেন বোনটি চিঠির মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারে। কথাগুলো বলতে গিয়ে সেতারা বেগমের চোখে পানি। ৭১ বছরে বয়সে এসে সেসব চিঠি আর পোস্ট অফিসে অপেক্ষার দিনের কথা মনে পড়ছে।
চিঠি নিয়ে কথা বলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রেজাউল হোসেন। বয়স ৬৭ বছর। ছাত্রজীবন কেটেছে ঢাকায়। মাগুরা সদরের খাটাখাল এলাকায় বাড়ি।
তিনি বলেন, ‘মেসের টাকার জন্য বাড়িতে চিঠি লিখতাম। চিঠি পেয়ে বাবা মানি অর্ডার করতেন। চিঠি উত্তর পেতে এক সপ্তাহ কিংবা দুই সপ্তাহ পেরিয়ে যেত। সেই চিঠিতে মা আর ভাইবোনদের কত কথা লিখতেন বাবা। এ ছাড়া ছোট্ট বোনও নিয়মিত লিখত চিঠি। সেই চিঠিতে লেখা থাকত ‘এবারে বাড়ি এলে যেন ঢাকার নিউমার্কেট থেকে আবারও এক জোড়া স্যান্ডেল আর জামা নিয়ে আসি।’
এ সময় একটা চিঠি আসত বগুড়া থেকে। একে পত্রমিতালি বলা যায়। মেয়েটির সঙ্গে আমার ঢাকায় পরিচয় একটি অনুষ্ঠানে। এরপর ঠিকানা আদান-প্রদান। চিঠি লিখতাম দুজনে। সে নীল খামে ডাক টিকিট লাগিয়ে চিঠি পাঠাত।
সেই চিঠি আমি পকেটে নিয়ে একসময় ঘুরতাম। বলা যায় মেয়েটির প্রেমে পড়েছিলাম। তবে তা সম্ভব হয়েছিল চিঠির কারণে। চিঠির প্রতি অক্ষরে ভাষার জাদু যেন অন্য রকম অনুভূতি। যা এখনকার প্রজন্ম বুঝবে না। আধুনিক প্রযুক্তিতে চিঠি লেখা উঠে গেছে। চিঠিতে মনের অব্যক্ত অনেক কথা বলা যায়। যা টেক্সট দেওয়ার মাধ্যমে প্রকাশ করা যায় না।’
চিঠি বিলি সহকারী আলতাফ হোসেন জানান, দুই যুগের বেশি সময় চিঠি বিলি করছি। একসময় নিজের ব্যাগ ভর্তি করে চিঠি বিল করতাম। বেশির ভাগ চিঠি থাকত ব্যক্তিগত চিঠি। বাইসাইকেলে চড়ে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চিঠি দিয়ে আসতাম। চিঠি পেয়ে কেউ আনন্দিত হতো, কেউ বা আবার বিষণ্ন হয়ে পড়ত। তবে এখন চিঠি বিলি কমে গেছে। আর ব্যক্তিগত চিঠি তেমন চোখে পড়ে না। রেজিস্ট্রি করা চিঠিই এখন বেশি বিলি করতে হয়।
মাগুরা ডাকঘরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর মানুষের ভিড়। প্রায় সবাই সঞ্চয় হিসাবের কাজে এসেছেন। তবে দুঃখের বিষয় চিঠি পোস্ট করতে একজনকেও পাওয়া যায়নি। চিঠি বাছাই করার টেবিল খালি পড়ে রয়েছে।
মাগুরা প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মাহবুবুর রহমান জানান, চিঠি হলো যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। চিঠির মাধ্যমে একজন আরেকজনের অনেক আপন হয়ে উঠে। পরিবারের সুখ দুঃখ প্রকাশ পায় চিঠির মাধ্যমে। আগে প্রযুক্তি এতটা উন্নত ছিল না। তাই মানুষ চিঠিকেই বেছে নিয়েছিল যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে। এখন কেউ ব্যক্তগত চিঠি দিতে পোস্ট অফিসে আসেন না। রেজিস্ট্রি ডাক, অফিশিয়াল চিঠি, সঞ্চয় হিসাব এগুলোই বেশি দেখা যায় পোস্ট অফিসে। এখন পোস্ট অফিসে মোবাইল ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ইঞ্জিনের হেডলাইট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তালশহর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার পথ মোবাইল ফোনের টর্চের আলোতে পাড়ি দিয়েছে তিতাস কমিউটার ট্রেন। গতকাল শনিবার (২১ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
২৭ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাসেম আলী (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ গোড়ের পাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২৯ মিনিট আগেসম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগের বিষয়ে নাহিদ রাব্বি নামের একজন চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ঘুষ লেনদেনের কথা স্পষ্টভাবে উঠে আসে।
৩৬ মিনিট আগেময়মনসিংহের তারাকান্দায় নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি বাসে অটোরিকশা, পিকআপ ভ্যান ও লরিসহ চারটি গাড়ির ধাক্কায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
১ ঘণ্টা আগে