Ajker Patrika

বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবার আন্দোলনে নেমেছেন প্রকাশকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবার আন্দোলনে নেমেছেন প্রকাশকেরা

দেশের চলমান সংস্কার আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিতে। দেশের অন্যতম বৃহৎ এই সংগঠনের ভেতরে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ প্রকাশকেরা। 

আন্দোলনরত প্রকাশকেরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ প্রকাশকেরা মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন সরকারি প্রজেক্ট একচেটিয়াভাবে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন নিজেদের মধ্যে। 

অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্রেড অর্গানাইজেশন রুলস অনুযায়ী দুই বছর পর পর নির্বাচন হওয়ার নিয়ম থাকলের গত ৮ বছর ধরে কোনো নির্বাচনের আয়োজন করেনি সংগঠনটি। 

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির বর্তমান সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন। তিনি একই সঙ্গে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর। 

প্রকাশকেরা অভিযোগ করছেন, তাঁর এই রাজনৈতিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সমিতিতেও নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও নিজে আত্মগোপনে থেকে নিজস্ব আওয়ামীপন্থী সিন্ডিকেট কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার পাঁয়তারা করছেন বলে দাবি করছেন আন্দোলনরত প্রকাশকেরা। 

বর্তমানে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দাবি করছেন জুপিটার পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী ও পুস্তক প্রকাশক সমিতির পরিচালক কায়সার ই আলম প্রধান। বাংলাবাজারের সাধারণ প্রকাশকেরা বলছেন, তিনি ও আরিফ হোসেন ছোটন ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। 

এদিকে আন্দোলনরত সাধারণ প্রকাশকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সমিতির সকল পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সাবেক দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি আলমগীর সিকদার লোটন। বর্তমানে তিনি সংগঠনের পরিচালক ও রাজধানী শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

তিনি বলেন, ‘আজ যখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে সারা দেশ উত্তাল সেখানে আমাদের প্রাণের সংগঠনে আট বছর ধরে কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। সিন্ডিকেট ও নিজস্ব বলয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সাধারণ প্রকাশকদের সঙ্গে এটাতো সবচেয়ে বড় বৈষম্য। সবচেয়ে বড় প্রহসন। আমরা এর অবসান চাই। তাই আন্দোলনরত প্রকাশকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমি সকল পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।’ 

এ বিষয়ে প্রকাশনা সংস্থা অনন্যা-এর স্বত্বাধিকারী সিনিয়র প্রকাশক মনিরুল হক বলেন, ‘আমরা সংস্কার চাই। একচেটিয়া সিন্ডিকেটের বিলুপ্তি চাই। আমরা চাই আইন অনুযায়ী একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হোক। সারা বাংলাদেশের পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে, তাঁরাই আমাদের নেতৃত্ব দেবেন ৷ সংগঠনের স্বচ্ছতার দাবিতে যারা আন্দোলন করছে আমি তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি।’ 

চলমান আন্দোলন ও সংগঠনের অস্থিরতা সম্পর্কে আরেক পরিচালক ও পারফেক্ট পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী কাজী জহিরুল সলাম বুলবুল বলেন, ‘আমরা আমাদের সংগঠনের সংস্কার চাই। গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাই। স্বচ্ছ একটি নির্বাচন চাই। সাধারণ প্রকাশকেরা যে আন্দোলন করছেন, তাঁকে আমি ন্যায্য মনে করি। তাঁদের সমর্থন জানাই।’ 

বিরাজমান সংকট ও আনীত অভিযোগ সম্পর্কে আত্মগোপনে থাকা সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটনকে ফোন করলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করা কায়সার ই আলম প্রধানকে বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত