Ajker Patrika

নারায়ণগঞ্জে আসন বদল: বন্দর ভাগে ভোগান্তির শঙ্কা

  • নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব এনেছে নির্বাচন কমিশন।
  • বন্দর থানা এলাকা ভাগ হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ সংসদীয় এলাকায় পড়তে যাচ্ছে।
  • এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী নেতারা।
সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ 
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৭: ২৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের তিনটি আসনের সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব এনেছে নির্বাচন কমিশন। এর মাধ্যমে বন্দর থানা এলাকা ভাগাভাগি হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ এবং নারায়ণগঞ্জ-৫ সংসদীয় এলাকায় পড়তে যাচ্ছে। এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী নেতারা। তাঁরা বলছেন, একই এলাকায় দুজন সংসদ সদস্য থাকলে দাপ্তরিক কাজ থেকে শুরু করে স্থানীয় বিচার-সালিসের মতো বিষয়গুলো বাধাগ্রস্ত হবে।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বর্তমানে আছে সিটি করপোরেশনের ১৭টি ওয়ার্ড (যাতে আছে বন্দর থানাধীন ৯টি ওয়ার্ড) এবং বন্দর উপজেলার পাঁচটি ও সদরের দুটি ইউনিয়ন। এটি নতুন করে শুধু সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠনের প্রস্তাব এনেছে ইসি। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩

আসন বর্তমানে শুধু সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত। নতুন প্রস্তাবে সোনারগাঁ উপজেলার সঙ্গে এই আসনে যুক্ত করা হয়েছে বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সীমানাও পরিবর্তন করতে চাচ্ছে ইসি। এই আসন গঠিত ফতুল্লা থানার পাঁচটি ইউনিয়ন এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সিটি করপোরেশনের ১০টি ওয়ার্ড নিয়ে। এখন তা ফতুল্লা থানার পাঁচটি ও সদর থানার দুটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা এবং নির্বাচন করতে আগ্রহীদের আপত্তির স্থান হিসেবে উঠে এসেছে পাঁচ ইউনিয়ন এবং সিটি করপোরেশনের ৯ ওয়ার্ড মিলিয়ে গড়া বন্দর থানাকে দুই সংসদীয় আসনে বিভক্ত করা নিয়ে। এই বিভক্তির ফলে একই থানার মানুষ পাবেন দুজন সংসদ সদস্য। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিগত সময়ের জনপ্রতিনিধি ও সামনে প্রার্থী হতে চাওয়া নেতাদের মধ্যে প্রবল আপত্তি দেখা গেছে। তাঁরা এটি রুখতে অচিরেই আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম বলেন, ‘বন্দরকে দুই ভাগ করা উচিত হয়নি। এটা সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত। বন্দরে সিটি করপোরেশন ও উপজেলা প্রশাসন থাকলেও এখানে বিগত সময়ে একজন এমপি ছিলেন। এখন দুজন এমপি হবেন। অথচ থানা হচ্ছে একটি। এতে মানুষের অসুবিধা বাড়বে। আমরা এই বিষয়ে আপত্তি জানাব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে।’

একই কথা বলেছেন এই আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে আগ্রহী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তিনি বলেন, ‘বন্দরের পাঁচটি ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। এই বন্দর দুই ভাগে ভাগ করা হলে স্বাভাবিকভাবেই সোনারগাঁ বড় উপজেলা হিসেবে প্রভাব রাখবে। বন্দর উপজেলা অবহেলার শিকার হবে। যেখানে বাড়তি উন্নয়নের প্রয়োজন, সেখানে বিভাজনের মতো বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না।’

তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য জানায়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। এ নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের পর মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা আমির মমিনুল হক সরকার।

এই আসনের প্রার্থী ও গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন বলেন, ‘বন্দর উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের অংশটিকে দুই ভাগ করে ফেললে বৈষম্যের শিকার হবে বন্দরবাসী। যেকোনো সমস্যার সমাধানে বন্দরবাসীকে শহর অথবা সোনারগাঁয়ের জনপ্রতিনিধির ওপর নির্ভর করতে হবে। আমরা বন্দরবাসীর সঙ্গে এই বৈষম্যের বিরোধিতা করি। দাবি জানাই, বন্দরের সিটি করপোরেশন এলাকা এবং বন্দর উপজেলাকে একই সঙ্গে রাখতে হবে।’

এ নিয়ে কথা হলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী বলেন, ‘বন্দর উপজেলা ও সিটির ৯টি ওয়ার্ড দুই আসনে ভাগ করা দেওয়ার ফলে কিছুটা সমস্যা হবে বন্দরের মানুষদের। যেমন বিচার-সালিসের জন্য দুই এমপির প্রভাব এখানে বিদ্যমান থাকবে। এ ছাড়া থানা-পুলিশ ঠিকভাবে কাজ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। এ ছাড়া উন্নয়নকাজের ক্ষেত্রে বন্দর পিছিয়ে যাবে। দীর্ঘদিন ধরে এখানকার বাসিন্দারা নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত। হঠাৎ তাদের সোনারগাঁয়ের দিকে মুখাপেক্ষী করাটা সঠিক হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঢাবিতে ‘তুর্কি এনজিও সমর্থিত’ সংগঠনের ‘বৃহত্তর বাংলাদেশ’ মানচিত্রে ভারতের অংশ, বললেন জয়শঙ্কর

কালো জাদুর অভিযোগে মবের তাণ্ডব, এক পরিবারে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

অদৃশ্য শর্তে বাংলাদেশের জন্য ট্রাম্পের ১৫% শুল্ক ছাড়

নারী আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত হচ্ছে নারীদের ছাড়াই

সাপের বিষে তৈরি যে মদ পাওয়া যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত