Ajker Patrika

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রয়োজন: আসকের সভায় বক্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রয়োজন: আসকের সভায় বক্তারা

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইনের সংশোধন ও পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। আইনে তদন্ত প্রক্রিয়া কত দিনে, কি প্রক্রিয়ায় করা হবে ও তদন্ত প্রতিবেদন কত দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়াসহ অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে সে অনুযায়ী শাস্তি নির্ধারণ করতে হবে। 

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) আয়োজনে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকারে প্রয়োজনীয়তা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন আসকের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আসকের অগ্নি প্রকল্পের সমন্বয়কারী আসমা খানম রুবা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৫৪ ধারায় নারীর শালীনতা নষ্টের কথা উল্লেখ থাকলেও এই শব্দের কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশে ৭৫ ও ৭৬ ধারায় যৌন হয়রানির কথা উল্লেখ থাকলেও শাস্তি যথাক্রমে তিন মাস ও এবং জরিমানা যথাক্রমে ৫০০ ও ২ হাজার টাকা। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এ অভিযুক্তের শাস্তির পরিধি বৃদ্ধি পেলেও নারীর অঙ্গ স্পর্শ করার কথা বলা হয়েছে যা সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশ শ্রম আইনে মহিলা শব্দের ব্যবহার রয়েছে যা লিঙ্গনিরপেক্ষ নয়। এছাড়া ৭ আগস্ট ২০০৮ সালের উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় শুধুমাত্র কর্মস্থল এবং শিক্ষাঙ্গনের কথা বলা হয়েছে। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোনো আইন প্রণীত হয়নি। যার কারণে আইন ও সালিশ কেন্দ্র ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

ব্র‍্যাকের সোশ্যাল কমপ্লায়েন্সের পরিচালক ব্যারিস্টার জেনেফা জব্বার বলেন, কমিটিতে যারা তদন্ত করে, তাঁদের দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। দক্ষতা বলতে এখানে তাদের চিন্তা ও মানসিকতার কথা বলছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষার্থীর দ্বন্দ্ব হলে সেখানে আপনি কি করবেন মধ্যস্থতা করবেন নাকি অন্য কিছু করবেন সিদ্ধান্ত আপনার নিতে হবে। যেমন প্রেম থাকতেই পারে কিন্তু কারও ইচ্ছে ছাড়া অন্যরকম কোনো আচরণ করা যাবে না। এই ইচ্ছার বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এই জিনিসগুলোকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে দেখে সেটা একটা বড় বিষয়। 

মহিলা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সমন্বয় ও সচেতনতা) নার্গিস সুলতানা বলেন, ‘আমাদের কমিটি আছে বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু কাজ যদি ঠিকমতো না হয় তাহলেতো সমস্যা। উপজেলা পর্যায়ে যে কমিটিগুলো আছে সেখানে তেমন অভিযোগ পড়ে না। তারা যৌন হয়রানি বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে উঠান বৈঠক করেন। একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, আমরা আমাদের পরিবার থেকেই বেশি হয়রানির শিকার হই। পরিবারে ছেলে সন্তানকে ছোটবেলা থেকেই শেখাতে হবে কোনটা অনুচিত।’ 

অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, বিশেষ আইন বিশেষভাবে কাজ করে, কত দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন হবে সেটা নির্দিষ্ট করাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিধানসমূহ সুনির্দিষ্ট করা থাকলে ভুক্তভোগীর ন্যায় বিচার প্রাপ্তি ত্বরান্বিত হয়। বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে কমিটি আছে তবে সেগুলো সক্রিয় না। চাকরি হারানোর ভয়ে সাহস করে কর্মীরা হয়রানির কথা সামনে বলেন না। তারা সামাজিক প্রতিকূলতা, চাকরি হারানোর শঙ্কা, চারিত্রিক অসম্মান হওয়ার ভয়সহ নানা ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতে মনোবল পান না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত