Ajker Patrika

বেশি দামে ব্রয়লার বিক্রির দায়ে কাজী ফার্ম ও সগুনাকে আট কোটি টাকা জরিমানা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ২২: ৩২
বেশি দামে ব্রয়লার বিক্রির দায়ে কাজী ফার্ম ও সগুনাকে আট কোটি টাকা জরিমানা 

অস্বাভাবিক দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রির দায়ে কাজী ফার্ম লিমিটেড ও সগুনা ফুড অ্যান্ড ফিডস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। 

আজ সোমবার দুটি মামলায় কমিশন এই রায় দেয়। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের এক খুদে বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়। 

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ব্রয়লার মুরগির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি-সংক্রান্ত দুটি মামলার রায় দেয়। রায়ে কাজী ফার্মস লিমিটেডকে ৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া সাগুনা ফুড অ্যান্ড ফিডস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রতিযোগিতা আইন-২০১২-এর ধারা ১৫ লঙ্ঘনের অপরাধে দুটি প্রতিষ্ঠানকে এই জরিমানা করা হয়েছে। গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা দুটি করেছিল। 

কমিশন আরও জানায়, গত বছর জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে বাড়ানোয় রাতারাতি সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। ব্রয়লার মুরগির দামও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেন। 

দাম বাড়ানোর পেছনে বড় কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপ রয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয় ভোক্তা-অধিদপ্তর। এরপর বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে। 

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের এই রায়ের কারণে দেশে পোলট্রি ব্যবসায় সিন্ডিকেট বন্ধ হবে। সিন্ডিকেট বন্ধ হলে দেশের প্রান্তিক খামারিরা লাভবান হবেন।’ 

জানতে চাইলে কাজী ফার্ম লিমিটেডের কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জরিমানার বিষয়টি আমি জানি না। এই বিষয়টি মালিকপক্ষ ও পরিচালকেরা বলতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দরিদ্র নারীর বরাদ্দের চাল আত্মসাতের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
ফারুক আহমেদ মিয়াজি। ছবি: সংগৃহীত
ফারুক আহমেদ মিয়াজি। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির (ভিডব্লিউভি) কার্ডের ছবি বদলিয়ে এক দরিদ্র নারীর বরাদ্দের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কাছে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। চাল আত্মসাতের এমন অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হলেন ফারুক আহমেদ মিয়াজি। তিনি উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। অন্যদিকে অভিযোগকারী নারী আয়েশা আক্তার একই ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের মাইনুদ্দিন খানের স্ত্রী।

ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর আয়েশা আক্তার ভিডব্লিউভির কার্ডের জন্য আবেদন করেন। সংশ্লিষ্টদের যাচাই-বাছাই শেষে আয়েশা আক্তারের নামে ভিডব্লিউভি কার্ড নম্বর ২৫ নিবন্ধিত করা হয়। কিন্তু ফারুক আহমেদ মিয়াজি নিজের প্রভাব ব্যবহার করে আয়েশা আক্তারের কার্ড সংগ্রহ করেন এবং তাতে অন্য নারীর ছবি বসিয়ে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে গত তিন মাসে ৯০ কেজি চাল আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার নিজের সব কাগজপত্র নিয়ে চ্যালেঞ্জ করলে চলতি মাসে ৩০ কেজি চাল পান। পরে তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কাছে এ ঘটনা বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সাঈদ খান ও সাধারণ সম্পাদক মোক্তার খন্দকার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আয়েশা আক্তারের কাছে থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হয়ে দলীয় শৃঙ্খলার বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অভিযুক্ত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমেদ মিয়াজি বলেন, ‘ঘটনাটির আমি কিছুই জানি না। আমি মনে করি, আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র চলছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারী চক্রের সব সদস্যের বিচার চাই।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন মোহাম্মদ রাজন বলেন, ‘ভিডব্লিউভি কার্ড পরিষদে গত মে মাসে এসেছে ১২২টি। সেখান থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে ১৯টি কার্ডের নাম তাঁদের দিতে বলি। ওনারা যে নাম দিয়েছেন, তাঁদের নামে কার্ড হয়েছে। তাঁরা কার্ড কী করেছেন, সে ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ট্যাগ কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মাকছুদা আক্তার বলেন, ‘এমন একটি বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তদন্ত করে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেটু কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধী যে-ই হোক তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাকের নিচে অটোরিকশা: ছেলের জন্য পাত্রী দেখে বাড়ি ফেরা হলো না মা-বাবার

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
ট্রাকের নিচে চাপা পড়া সিএনজি অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ট্রাকের নিচে চাপা পড়া সিএনজি অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় এসেছিলেন আবুল বাশার ও তাঁর স্ত্রী মোরশেদা বেগম। সেখান থেকে নাঙ্গলকোট উপজেলায় বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে তাঁদের বহনকারী সিএনজি অটোরিকশাটি। এতে ঘটনাস্থলেই এই দম্পতি নিহত হন। অটোরিকশাচালকও মারা গেছেন।

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ট্রাক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা-ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। উপজেলার লাকসাম-চৌদ্দগ্রাম আঞ্চলিক সড়কের ফেলনা কাজী বাড়ি ইউটার্নে তিন যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার মৌকরা ইউনিয়নের মহেশ্বর গ্রামের আবুল বাশার, তাঁর স্ত্রী মোরশেদা বেগম ও সিএনজি অটোরিকশার চালক চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার নাটাপাড়ার কালা মিয়ার ছেলে মমতাজ।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন নিহত দম্পতির ছেলে আবু তৈয়ব (২৬), একই উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের গান্দাচী গ্রামের আব্দুর রহমান (২৭), আগুনশাইন গ্রামের রাজমিস্ত্রি কবির হোসেন (৪০), শ্যামপুর গ্রামের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মাহবুবুল হক ও মাহিনী গ্রামের আনোয়ারা বেগম (৪২)।

নিহত আবুল বাশারের ভাই মোস্তফা বলেন, ‘আমার ভাই-ভাবি তাঁদের ছেলে তৈয়বের জন্য চৌদ্দগ্রামের একটি এলাকায় পাত্রী দেখতে আসেন। পাত্রী দেখা শেষে সিএনজি অটোরিকশায় বাড়ি ফেরার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই আমার ভাই ও ভাবির মৃত্যু হয়।’

চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মেহেদী হাসান বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মশারি নিতে কেউ না আসায় নাসিকের অনুষ্ঠান বাতিল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নাসিকের মশারি বিতরণ কর্মসূচি বাতিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাসিকের মশারি বিতরণ কর্মসূচি বাতিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

কেউ না আসায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মশারি বিতরণ কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকার নগর ভবন প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে নাসিক প্রশাসক ড. আবু নছর মোহাম্মদ আবদুল্লাহর প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল।

দুপুরে সভাস্থলে কয়েকজন কর্মচারীকে মাইক নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। এ সময় তাঁরা অনুষ্ঠানস্থলে সাধারণ মানুষকে আসার আহ্বান জানাতে থাকেন। কয়েকজন নারী এলেও অধিকাংশ চেয়ারই ছিল ফাঁকা।

তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগত নারীরা নগর ভবনের আশপাশের বাড়ির বাসিন্দা। স্থানীয় ওয়ার্ডসচিবের অনুরোধে তাঁরা এসেছিলেন মশারি নিতে। কিন্তু মানুষজন না থাকায় অনুষ্ঠান বাতিল করা হলে খালি হাতেই ফিরে যেতে হয় তাঁদের।

মাসুদ রানা নামের একটি ওয়ার্ডের সচিব বলেন, ‘আমাকে কয়েকজন দরিদ্র বাসিন্দাকে নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল মশারি দেবে বলে। আমি দুজন নারীকে নিয়ে এসেছিলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনাও আমাকে করতে বলা হয়। পরে জানানো হয়, অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে নাসিকের মেডিকেল অফিসার নাফিয়া ইসলাম বলেন, ‘কী কারণে অনুষ্ঠান হয়নি, তা বলতে পারছি না। প্রথমে শুনেছি অনুষ্ঠান হবে, পরে বলা হলো, আজ অনুষ্ঠান হবে না।’

এ বিষয়ে নাসিকের প্রশাসক ড. আবু নছর মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আওয়ামী লীগ ছাড়া আমি গামছা নিয়ে নির্বাচন করতে যাব না: কাদের সিদ্দিকী

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
বহেড়াতৈল গণ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জনসভায় বক্তব্য দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ছবি: আজকের পত্রিকা
বহেড়াতৈল গণ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জনসভায় বক্তব্য দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ, মাওলানা ভাসানীর আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের মানুষের আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের ভোটাররা যদি ভোট দিতে না পারে, আমি গামছা (তাঁর দলের প্রতীক) নিয়ে নির্বাচন করতে যাব না। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল, তারা যদি ভোট দিতে না পারে, আমি নির্বাচনে যাব না।’

আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈল গণ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে বহেড়াতৈল ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এই জনসভার আয়োজন করে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা জনগণের অধিকার চাই। ভোটাধিকার চাই। যখন সবাই পাকিস্তান চেয়েছিল, তখন জামায়াত ব্রিটিশদের গোলামি করেছে। যখন আমরা সবাই বাংলাদেশ স্বাধীন করতে চেয়েছি, তখন এই জামায়াত পাকিস্তানের পক্ষে ছিল, খুনখারাবি করেছে। সেই জামায়াত, তাকে নিয়ে ইলেকশন করলে আমি ইলেকশন করব?’

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এখনো হিসাব করলে দেখা যায়, ৪৩ পার্সেন্ট ভোট আওয়ামী লীগের আছে। ১৪ পার্সেন্ট জাতীয় পার্টির আছে, আমাদেরও তিন পার্সেন্টের মতো ভোট হয়েছে। এখন ইউনূস সরকার যাদের নিয়ে মিটিং করে, সেখানে তো আমাদের ডাকে নাই! আর এখন আমাদের ডাকলেই যাব? আর না।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘ইউনূস সাহেব, আপনাকে আমি অনেক বড় মানুষ মনে করেছিলাম। শেখ হাসিনা যখন আপনাকে সুদখোর বলত, আমি আপনার পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। যদি আমি পাশে না দাঁড়াতাম, তবে আপনার গ্রামীণ ব্যাংক মাটির সঙ্গে মিশে যেত। আপনার গ্রামীণ ব্যাংক না শুধু, গ্রামীণ নামে যা বানিয়েছেন, সবকিছুর বিপদ আছে। আপনার কান্না শেষ হবে না। আপনি বাংলার মানুষকে চেনেন না। এনজিও চালানো আর দেশ চালানো এক কথা না। সে জন্য বলছি, এখনো সময় আছে, আপনি যদি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নিরপেক্ষ ও সন্তোষজনক একটা নির্বাচন করতে পারেন, এত কিছুর পরও আপনার নাম থাকবে, আপনাকে মানুষ সম্মান করবে। আর যদি মীরজাফর হতে চান, ঘসেটি বেগম হতে চান, তাহলে যা করছেন, তা করেন, বেশি দিন লাগবে না।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ করি না। আমি বঙ্গবন্ধু করি, আমি মুক্তিযুদ্ধ করি, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাই। আমি জয় বাংলা করি। সরকার বাহাদুরকে বলে গেলাম, জয় বাংলা বলা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আমাকে প্রথম গ্রেপ্তার করেন। সেখানেও আমি বলব, আমি জয় বাংলা বলে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, জয় বাংলা বলেই আমার জীবন দিয়ে যেতে চাই। আমার নেতা বঙ্গবন্ধু, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ আমার ধ্যান, মুক্তিযুদ্ধ আমার চেতনা, বঙ্গবন্ধু আমার চৈতন্য।’

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ এনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘কম বিরক্ত হয়ে শেখ হাসিনাকে তাড়ায় নাই। মানুষ একেবারে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল। শেখ হাসিনাকে তাড়ানোর ক্ষমতা এই আট-দশটা বাচ্চা ছেলের ছিল না। বিএনপি পারে নাই, জামায়াত পারে নাই, কিন্তু শেখ হাসিনার পতন হয়েছিল। আমি বিশ্বাস করি, এটা আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে। তিনি যে পরিমাণ অত্যাচার করেছেন, মানুষকে অসম্মান করেছেন, এর জন্য আল্লাহর তরফ থেকে তিনি পরাজিত হয়েছেন।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে অত্যাচার করেছেন, ব্যাটারিচালিত গাড়ি স্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে যে পরিমাণ চান্দা উঠিয়েছেন, তার ১০ গুণ এই ১২-১৪ মাসে অন্য দলেরা করেছে। শেখ হাসিনার পতনের সময় এক নম্বর দল ছিল ধানের শীষ। এখন তারা কিন্তু পেটের বিষ। এ কারণে আমি আগেও বলেছিলাম, যে কারণে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে শেখ হাসিনাকে সরিয়েছে, ঠিক একই কাজ করলে বিএনপিকেও মানুষের ভুলে যেতে কষ্ট হবে না।’

জনসভায় ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান সভাপতিত্ব করেন। এতে বক্তব্য দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সালেক হিটলু, উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব, কালিহাতী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক ইথার সিদ্দিকী, বাসাইলের সাবেক মেয়র রাহাত হাসান টিপু, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেন, আব্দুল্লাহ মিয়া, সহসভাপতি সানোয়ার হোসেন মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক জাহাঙ্গীর, আলমগীর সিদ্দিকী, আবু জাহিদ রিপন, দেলোয়ার হোসেন মাস্টার, আঁখি আতোয়ার প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত