Ajker Patrika

নির্বাচনী ইশতেহারে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি জরুরি: নারী অধিকার ফোরাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নির্বাচনী ইশতেহারে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি জরুরি: নারী অধিকার ফোরাম

ধর্ম, বিশ্বাস, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, চিন্তা ও আদর্শগত পার্থক্যের কারণে নারী অধিকার নিয়ে সারা বিশ্বে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান এবং মতপার্থক্য রয়েছে। এক পক্ষের কাছে যা অধিকার, অপর পক্ষের কাছে তা অনধিকার বলে বিবেচিত হয়। তবে বাংলাদেশের সংবিধানে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানের আলোকে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক সচেতনার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আন্তরিকতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি জরুরি।

আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘নির্বাচনী ইশতেহার ও নারী অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। নারী অধিকার ফোরাম বাংলাদেশ (অরফবি) এই সভার আয়োজন করে। সভায় বক্তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।

সভায় নারী অধিকার পরিষদের সভাপতি মাহমুদা খানম মিলি লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১০, ১৯, ২৭, ২৮ ও ২৯ নম্বর ধারাসমূহে জীবনের সবক্ষেত্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে। প্রশ্ন আসে, পরিবার থেকে প্রতিষ্ঠান, সমাজ থেকে রাষ্ট্রে আদৌ কি নারী অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে? রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সমঅধিকার নিশ্চিত করতে নারীকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?’

আমরা মনে করি, সংবিধানের আলোকে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন করে বা আইনের সাহায্যে সাংবিধানিক অধিকার বলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে বিরাজমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আন্তরিকতার সহিত দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে।

মানবাধিকার কর্মী খুশি কবীর বলেন, ‘প্রত্যেকটা দল যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, তাঁদের বলব নারী অধিকারের বিষয়টা যেন তাঁরা নির্বাচনী ইশতেহারে সামনে নিয়ে আসেন। যারা নির্বাচনে আসবেন না, তাঁরাও যেন এ বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়াতে নারীর অগ্রাধিকারের ব্যাপারে বেশ নাম করেছে, এটা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। কিন্তু তারপরও আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরছি। আমাদের সব রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার ছিল এবং আমাদের নির্বাচন কমিশনেরও অঙ্গীকার ছিল, এক তৃতীয়াংশ আসনে নারীদের নমিনেশন দিতে হবে। একটা সময়সীমাও দেওয়া ছিল। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি। এখনো আমরা দেখছি, ৩০০ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেটাও মাত্র ৮ শতাংশ। এটা আমাদের আরও বাড়াতে হবে।’

খুশি কবীর আরও বলেন, ‘নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন যেটা আছে, অন্য সংসদ সদস্যরা যারা ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসছে তাঁরা সমান দৃষ্টিতে দেখছে না। সংরক্ষিত আসন এবং সরাসরি নির্বাচিত আসনের মধ্যে যে পার্থক্যটা আছে, সেটা আমরা বারবার বলে আসছি–আমরা নারীদের কোটা সিস্টেম চাই অথবা কোনো ব্যবস্থা চাই। এখানে যেন কোনো ব্যবধান না থাকে।’

সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও খালেদ মোশাররফ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাহজাবিন খালেদ, আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, নারী নেত্রী মমতাজ লতিফ প্রমুখ।

সভায় বলা হয়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ঘোষণা করেছে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী দেশে নিবন্ধন করা রাজনৈতিক দল রয়েছে ৪৪ টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ৩০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি গঠন করেছে।

খুব শিগগিরই দেশ ও জাতির কাছে আগামীর বাংলাদেশ কীভাবে নির্মাণ করবে, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা কতটা নিশ্চিত করবে কিংবা উন্নয়নশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিকল্পনা ইশতেহারের মাধ্যমে তুলে ধরবে। নারী অধিকার ফোরাম মনে করে, নারীর অধিকার, নারীর শিক্ষা, চিকিৎসা, সুরক্ষাসহ সমঅধিকারের বিষয়গুলো রাজনৈতিক দলগুলোর তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতিবন্ধভাবে লিপিবদ্ধ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মোট ভোটারের অর্ধেক নারীদের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন। তাহলে নারী তাঁর অধিকারের ব্যাপারে শুধু সচেতনই হবে না, ভোট প্রদানেও তাঁর কাঙ্ক্ষিত মার্কা নির্বাচন করতে সক্ষম হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত