Ajker Patrika

সরকারি হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ, উদ্বেগে শিশুর বাবা-মা

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১: ২৮
সরকারি হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ,  উদ্বেগে শিশুর বাবা-মা

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে দেড় বছরের এক অসুস্থ শিশুকে মেয়াদোত্তীর্ণ সরকারি স্যালাইন পুশ করার অভিযোগ উঠেছে। এতে শিশুটির পেট ফুলে গেছে এবং আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিশুটির বাবা মো. মিজানুর রহমান পাহাড়। 

শিশুটির পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার বার রাত পৌনে ৮টার দিকে আফিয়া সিদ্দিকা সাফা নামের ওই শিশুর ডায়রিয়ার চিকিৎসা করাতে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে পরিবার। স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে শিশুটিকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ সময় শিশুটিকে ৫০০ এমএল ডেক্সট্রোজ স্যালাইন দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তখন কর্তব্যরত নার্স মাহমুদা আফরোজ শিশুটির শরীরে ওই স্যালাইন পুশ করেন। স্যালাইনের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ শরীরে প্রবেশের পর স্যালাইনের মেয়াদ উত্তীর্ণের বিষয়টি নজরে আসে শিশুটির বাবা মো. মিজানুর রহমানের। তিনি দেখতে পান, পুশ করা স্যালাইনের মেয়াদ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হয়ে গেছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনলে তাৎক্ষণিক শিশুটির দেহে থেকে স্যালাইনটি অপসারণ করে নতুন স্যালাইন পুশ করেন কর্তব্যরত নার্স। 

মিজানুর রহমান বলেন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স মাহমুদা আফরোজ হাসপাতালে সংরক্ষিত সরকারি স্যালাইন পুশ করেন। স্যালাইন অর্ধেকের বেশি শেষ হওয়ার পরে লক্ষ্য করি স্যালাইনটির মেয়াদ দুই মাস আগে শেষ হয়ে গেছে। পরে স্যালাইন খুলে ফেলা হয়। এ অবস্থায় আমরা মেয়ের জন্য খুব চিন্তায় আছি। আগের চেয়ে খুব দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং পেট ফুলে গেছে। নার্স মেয়াদের তারিখ না দেখেই স্যালাইন পুশ করে। সে তার দায়িত্বে অবহেলা করেছে। আর কোনো রোগীর সঙ্গে যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে জন্য প্রতিকার এবং বিচার চাই।' 

এই বিষয়ে নার্স মাহমুদ আফরোজের সঙ্গে কথা বলতে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে সেলফোনে তাঁকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি জবাব দেননি।

মেয়াদোত্তীর্ণ ডেক্সট্রোজ স্যালাইন। এটিই সাফার শরীরে পুশ করা হয়েছিল।ঘটনার সম্পর্কে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মুনির আহমদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিশুটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি জেনেছি। বিগত দুই তিন মাস হাসপাতালে কোনো সরকারি স্যালাইন ছিল না। কিছুদিন আগে আমাদের সরকারি বরাদ্দ এসেছে। সে বরাদ্দ থেকে একটি কার্টন খোলা হয়েছে, সেই কার্টন থেকে ৪ থেকে ৫ জনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই কার্টনের মধ্যে মাত্র একটি মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন ছিল। যেটা ওই রোগীকে পুশ করা হয়। ওষুধটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল কি-না এটা দেখার দায়িত্ব ছিল কর্তব্যরত নার্সের। কিন্তু নার্স মাহমুদা আফরোজ এই বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। স্যালাইনের মেয়াদ আছে কি-না তিনি সেটা না দেখেই বাচ্চাটিকে স্যালাইন পুশ করেন। 

বিষয়টি সিভিল সার্জন ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জানিয়েছেন শিশুর স্বজনেরা। এরই মধ্যে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ওই নার্সকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির অবস্থা এখন স্বাভাবিক রয়েছে। তার সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত