Ajker Patrika

ভুয়া কোম্পানি খুলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, ২ জন কারাগারে 

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ১৫
ভুয়া কোম্পানি খুলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, ২ জন কারাগারে 

কিশোরগঞ্জে ভুয়া কোম্পানি খুলে ১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় দুজনকে কারাগারে এবং দুজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার কিশোরগঞ্জ আমলি আদালত-১–এ আসামিরা আত্মসমর্পণ করলে বিচারক পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।

আদালতের উপপরিদর্শক অজিত কুমার সরকার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন সদর উপজেলার স্বল্প মারিয়া গ্রামের মো. রায়হান পাঠান ও তাঁর ভাই সুমন পাঠান, বাবা আলাউদ্দিন ও স্ত্রী খাদিজাতুল কুবরা। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন আলাউদ্দিন ও খাদিজাতুল কুবরা।

এর আগে ৩ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–১–এ কোম্পানির সদর শাখার সহকারী ম্যানেজার মোছা. হাফসা আক্তার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানাকে মামলার এফআইআর দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যাংকের তিনটি করে খালি চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের বিনিময়ে ১১ জন মাঠকর্মী প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োগ পান। ২০২৪ সালের ২ জানুয়ারি থেকে তাঁরা সাপ্তাহিক ছুটি ব্যতীত ২০২৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে এফডিআর, ডিপিএস ও সঞ্চয় বাবদ মোট ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করে রায়হান পাঠানের কাছে জমা দেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে তাঁরা অফিসে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিজ নিজ এলাকায় চলে যান এবং মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম শেষ করে বিকেলে ফিরে দেখেন গেটে তালা ঝোলানো। মামলার বাদীর কাছে থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে দেখেন অফিসের সব কক্ষ খোলা ও এলোমেলো অবস্থায় আছে, কোনো লোকজন নাই।

এ ছাড়া অফিসের স্টিলের আলমারি ও বুক শেলফের মধ্যে থাকা কোম্পানির যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, জামানতের মূল চেক, স্ট্যাম্প ও মাঠকর্মীদের টেবিলের ড্রয়ারে রক্ষিত গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই।

এ বিষয়ে বাদী হাফসা আক্তার বলেন, ‘আসামিদের খোঁজ করলে জানতে পারি তারা গা ঢাকা দিয়েছে। পরে আমরা সঙ্গে সঙ্গে রায়হানের মোবাইল ফোনে কল দিলে বন্ধ পাই। একপর্যায়ে আমরা তার গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখি গ্রামের বাড়িও তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। গত ১ অক্টোবর মোবাইল ফোনে কল রিসিভ করলে তখন আমি তার পালিয়ে যাওয়ার কারণ এবং গ্রাহকদের ১২ কোটি টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “আমি ওই টাকার বিষয়ে কিছু বলতে পারব না এবং তোমাদের কোনো টাকা দিতে পারব না।” এই কথা বলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন। এর পর থেকে রায়হানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন বুঝতে পারি, আসামিরা গ্রাহকদের আমানতের টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে এই ভুয়া মাল্টিপারপাস নাম ব্যবহার করছে—তখন আদালতে মামলা দায়ের করি। প্রতারণার বিষয়ে আগে জানতে পারলে আসামির নিকট গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলন করে জমা দিতাম না।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালে জেলা শহরের বত্রিশ আমলিতলা এলাকায় আলোড়ন বাংলা নামে এ প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়। তারা সদস্য সংগ্রহ করে তাদের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ এবং বিভিন্ন মালামাল কিস্তিতে গ্রাহকদের মধ্যে প্রদান করত।

এ জন্য বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকের তিনটি করে চেক ও অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে প্রায় ৬০-৭০ জন মাঠকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। এ পর্যন্ত কাউকেই এসব ডকুমেন্টস ফেরত দেয়নি। এ ছাড়া যারা চাকরি ছেড়ে চলে গেছে, তাদেরও জামানতের টাকা, চেক ও অলিখিত স্ট্যাম্প ফেরত দেয়নি বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক কামরুজ্জামান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাল্টিপারপাসগুলো আমাদের কার্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ জেলা সমবায় অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাহানারা হাসিনও একই কথা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও মামলা প্রত্যাহার

ভারতকে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

প্লট–ফ্ল্যাট বরাদ্দে সচিব, এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিসহ যাঁদের কোটা বাতিল

জর্ডান-মিসরকে নিয়ে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করতে চান নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত