Ajker Patrika

ঢাবির হলে হলে ছাত্রলীগের তল্লাশি, শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ

ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাবির হলে হলে ছাত্রলীগের তল্লাশি, শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ

কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হলে মারধর ও হলছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। 

সোমবার (১৫ জুলাই) রাত ১০টার পর থেকে বিজয় একাত্তর হল, স্যার এ এফ রহমান হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হলসহ বেশ কয়েকটি হলে ছাত্রলীগের তল্লাশি শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন চেক, কক্ষে কক্ষে গিয়ে তল্লাশি, মারধর এবং মারধর করে হলছাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

এদিকে, হলের ‘অবস্থা খারাপ’ হবে ভেবে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন বলে জানা গেছে। বিজয় একাত্তর হলের একাধিক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে জানান, হলের দিকে গেলে গেটে ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা মারধর শুরু করে। 

মারধরের শিকার সাতজনের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদক। এর মধ্যে বিজয় একাত্তর হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘টিএসসি থেকে হলে ফেরার সময় হল গেটে ছাত্রলীগ আমাকে উপর্যুপরি মারধর করে। পরে এক পরিচিত ভাই এসে আমাকে উদ্ধার করে ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করে।’ 

বিষয়টি জানালে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

স্যার এ এফ রহমান হলের এক শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে জানান, হলের ৮ জন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেছেন ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা। তিনজনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মারধরের শিকার ভুক্তভোগীরা হলেন—২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল বাসিত, শাখাওয়াত হোসেন সাকু, লিমন খান রানা, মোর্শেদ ইসলাম। ২০১৬–১৭ শিক্ষাবর্ষের ফারুক হোসেন ও তাওহীদ ইসলাম, ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষের হাসিবুল ইসলাম হাবিব, আনোয়ার হোসেন এবং ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের হেদায়েত হোসেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শাখাওয়াত ও বাসিতকে খুব বেশি মারা হয়েছে। শাখাওয়াতকে তাঁর কক্ষে গিয়ে মারা হয়েছে। আর বাসিত হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তখন তাঁর ফোন তল্লাশি করে বেধড়ক মারধর করা হয়। লিমন, শাখাওয়াত ও মোর্শেদকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আনোয়ার হোসেনের বেড, বই–খাতা বাইরে ফেলা দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে অবহিত করা হলে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রফিক শাহরিয়ার বলেন, ‘খোঁজ নিচ্ছি, বিষয়টি জানা নেই।’ 

বিজয় একাত্তর ও স্যার এ এফ রহমান হলই শুধু নয়, একই ধরনের ঘটনা মাস্টারদা সূর্যসেন হলেও ঘটেছে বলে জানা গেছে। একাধিক হলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা হল গেটে অবস্থান করছেন। যারা হলে ঢুকছেন তাঁদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চেক করা হচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কিনা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। 
 
বিভিন্ন হলে শিক্ষার্থীদের এভাবে মারধর করা হচ্ছে, বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালকে জানালে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি বিজয় একাত্তর হলে উপস্থিত হন। এ সময় উপ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্রও উপস্থিত ছিলেন। 

উপাচার্যকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা বিজয় একাত্তর হলে শিক্ষার্থীকে মারধরের ভিডিও দেখান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে উপস্থিত বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা সেটি অস্বীকার করেন। তখন উপাচার্য হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত