Ajker Patrika

ভোটে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে ইসির তৎপরতা চায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভোটে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে ইসির তৎপরতা চায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনের আগে ও পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ চায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। আজ বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে এমন দাবি করে ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদল। 

বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘তাঁরা বলেছেন, বাংলাদেশে অনেক সময় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক সংঘাত ও সহিংসতা হয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা আগামীতেও এই ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বা সহিংসতা হতে পারে। আমাদের কাছে আবেদন রেখেছেন আমরা যেন বিষয়টা বিবেচনায় নেই, আমাদের দিক থেকে করণীয় যা আছে তা যেন করি। আমরা বিষয়টাকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। আমরা এটাও বলেছি যে, আমাদের আসলে বিষয়টা দেখবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠি দিয়ে, পত্র দিয়ে সরকারকে, সরকারের ডিসি-এসপিদের, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যারা যারা এর সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত তাঁদেরকে আমরা অবহিত করব; দেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত বা সহিংসতা যাতে না হয়।’ 

সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে সিইসি বলেন, ‘এটা কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়, এটা কখনো সভ্য আচরণ হতে পারে না। এটা অমানবিক একটা বিষয়। আমরা এই ধরনের অমানবিকতাকে কখনোই প্রশ্রয় দিই না। আমরা তাদেরকেও অনুরোধ করেছি যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আপনারা আপনাদের শঙ্কার কথা সেটা ব্যক্ত করে রাখেন।’ 

নির্বাচনোত্তর সহিংসতা রোধে পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি জানান, নির্বাচনের ১৫ দিন পর পর্যন্ত ইসির কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর থাকে, সেদিকে নজর রাখা হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্বাচনোত্তর হোক, নির্বাচনোত্তর না হোক দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সংঘাত যাতে না হয় এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাদের। যদি এটা না হয় এর দায় দায়িত্ব তারাই বহন করবে। 

বৈঠকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন। 

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও শঙ্কার কথা জানিয়েছি। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, আমরা সবাই মিলে ভোট দিতে চাই। কিন্তু ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বলেছি, আমরা সহিংসতামুক্ত নির্বাচন চাই। নির্বাচনী প্রচারণায় সাম্প্রদায়িকতার যে ব্যবহার, তার অবসান চাই।’ 

সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, গুজব ছড়িয়ে নির্বিঘ্নে ভোটদানের পরিবেশ বিঘ্নের অপচেষ্টা হয় তা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতীতেও নির্বাচনের আগে ইসির কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছি। কিন্তু আশ্বাস সময়-সময় আশ্বাসের মধ্যে থেকেছে, আমরা আশ্বস্ত হতে পারিনি। সিইসি আমাদের আশ্বাস ও আশ্বস্ত করেছেন। আমরা ইসি ত্যাগ করব, কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক নেতাদের ওপর আশা ও আস্থা কোনোটাই রাখতে পারছি না। আজ রাজনৈতিক দলগুলোয় সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন হত, যেটা অতীতেও হয়েছে; তারপরেও কিন্তু নির্বাচনী সহিংসতা হয়েছে। সমঝোতার কোনো আলামত লক্ষ্য করছি না। সমঝোতা হলেও বলতাম, নির্বাচনী সহিংসতা দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে বন্ধ করুন।’ 

এবারও সহিংসতার শঙ্কা করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আতঙ্কটা বেড়ে গেছে। আমাদের রাজনীতির দাবা খেলার ঘুঁটি হিসেবে রাজনৈতিক ময়দানে ব্যবহার করা হয়েছে। কেউ মনে করে ভোট দিতে এলে আমার বিপদ আবার কেউ মনে করে আমাদের ভোট না দিয়ে যাবে কোথায়।’ 

ইসির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার দাবিও জানিয়েছে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত