Ajker Patrika

নিয়োগ নির্মাণ কেনাকাটায় প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ০২: ২৪
প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মজিদ মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মজিদ মোল্লা। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জ খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষায় ফেল করাদের টাকার বিনিময়ে উত্তীর্ণ করা, শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ, ভবন নির্মাণে দুর্নীতি, আসবাব কেনাকাটায় অনিয়মসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মজিদ মোল্লাকে দায়ী করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল করেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়া মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ বা বদলি না হলে ভবিষ্যতে তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘিওর উপজেলার পেঁচারকান্দার বাসিন্দা মজিদ চাকরিজীবন শুরু করেন বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে। সেখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের হাত করে ২০১২ সালে এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন এবং তাঁদের প্রশ্রয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। নিজের অবস্থান শক্ত করতে বিদ্যালয়ের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের প্রধান অতিথি করতেন। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকায় দৃষ্টিনন্দন বঙ্গবন্ধু কর্নার ও বঙ্গবন্ধুর মিনি ভাস্কর্য বানিয়ে আলোচনায় আসেন। তিনি জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সাততলা আবাসিক ভবন গড়ে তোলাসহ শহরের আশপাশে একাধিক স্থানে জমি কিনেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভয়ে মজিদ নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসছেন না। তিনি খণ্ডকালীন সহকারী শিক্ষক মো. কামাল হোসেন ও অফিস সহকারী রাজু আহমেদের মাধ্যমে এসএসসি টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় পাস করে দিচ্ছেন।

আরও অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক মজিদ অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করেন। বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া বেশ কয়েকটি শ্রেণিশাখা চালু এবং সেখানে অর্থের বিনিময়ে কয়েকজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেন। একইভাবে তিন কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। সেই সঙ্গে অনুদানের কম্পিউটার বাসায় নেওয়া, এসি ও জেনারেটর কেনায় অনিয়ম এবং ভবন নির্মাণে নিজের মতো করে বিল পরিশোধের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া স্টেশনারি সামগ্রী কেনা, ডায়েরি-ক্যালেন্ডার ছাপানো, ক্যানটিন ভাড়া ও কোচিং সেন্টার পরিচালনায় অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক মজিদ অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম করিনি। আমার সাততলা বাড়ি, সম্পত্তি নিজের টাকা এবং ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, দুর্নীতির বিষয়ে জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন ও ঘটনার সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত