Ajker Patrika

ডিজিটাল পরিসরে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সুরক্ষা নিশ্চিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ : আর্টিকেল নাইনটিন

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৩০
ডিজিটাল পরিসরে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সুরক্ষা নিশ্চিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ : আর্টিকেল নাইনটিন

ডিজিটাল পরিসরে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে আছে। আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বিদ্যমান হুমকি মোকাবিলা ও ইন্টারনেট স্বাধীনতা প্রসারের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ইন্টারনেট স্বাধীনতা উদ্যোগ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। 

আজ রোববার ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২১ উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ওয়ার্কিং গ্রুপের ঘোষণা করা হয়। আর্টিকেল নাইনটিনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়, এই গ্রুপ দেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার ধারণাকে উৎসাহিত ও অগ্রসর করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি নীতি ও আইনের সংস্কারের জন্য সুপারিশ প্রদানের মাধ্যমে কাজ করবে। এ জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপ বিদ্যমান জাতীয় আইনি কাঠামোর বিশ্লেষণ, কৌশলগত অ্যাডভোকেসি এবং ক্যাম্পেইনও পরিচালনা করবে।

আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ও ওয়ার্কিং গ্রুপের অন্যতম সদস্য ফারুখ ফয়সল বলেন, ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্বিক লক্ষ্য হলো নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে দেশে অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রসার এবং তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করা। গ্রুপটি ইন্টারনেট স্বাধীনতার প্রসারে কাজ করে এমন নাগরিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে প্রাসঙ্গিক নীতি প্রণয়নে সরকারকে সহযোগিতা করবে।  এ ছাড়া ডিজিটাল অধিকার বাস্তবায়নে সহায়ক আইনি ও নীতিকাঠামোর প্রতি সমর্থন এবং অনলাইন স্বাধীনতার প্রতি হুমকির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখবে।

সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে একাধিক সভা ও ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে গ্রুপটি গঠন করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক, প্রযুক্তিবিদ, সাইবার বিশেষজ্ঞ, ডিজিটাল অধিকারকর্মী, শিক্ষার্থী, জেন্ডার অ্যাকটিভিস্ট এবং যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সুশীল সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধি যুক্ত ছিলেন। 

নবগঠিত এই ওয়ার্কিং গ্রুপের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, গত এক দশকে বাংলাদেশ ডিজিটাল পরিসরে ইন্টারনেটভিত্তিক নাগরিক পরিষেবার বিস্তারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এটি বহু মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। অথচ একই সময়ে সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকার যেমন—মত প্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্য জানার অধিকার এবং ডিজিটাল পরিসরে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পিছিয়ে আছে। 

বিশেষ করে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা ১৬তে, টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থার প্রচলন, সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করা এবং সকল স্তরে কার্যকর,  জবাবদিহিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণের কথা বলা হয়েছে। 

বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অঙ্গীকার করেছে। তবে ওয়ার্কিং গ্রুপ মনে করে, বিদ্যমান আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় নাগরিক অধিকার সীমিত করার বিস্তৃত সুযোগ রয়েছে এবং এই কাঠামো এসডিজি অর্জনে সরকারের যে অঙ্গীকার, সেটির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। 

এটা স্পষ্ট যে, বিদ্যমান আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দেশে ডিজিটাল বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যথেষ্ট নয়। এই ব্যবস্থায় অনলাইনে নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও অধিকার সুরক্ষাও কঠিন। 

এই প্রেক্ষাপটে এই ওয়ার্কিং গ্রুপ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশকে প্রকৃত অর্থে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তর করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা স্মরণ করিয়ে দিতে চায়। একই সঙ্গে ওয়ার্কিং গ্রুপ সরকারকে নাগরিকদের চাহিদা পূরণের জন্য একটি ব্যাপক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জাতীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার আহ্বান জানায়, যা আন্তর্জাতিক আইন ও মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হবে। যেখানে ইন্টারনেট হবে নাগরিকদের জন্য ভয়ভীতিহীন মত প্রকাশের একটি উন্মুক্ত ফোরাম। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত