Ajker Patrika

শেষ সময়ে পথে পথে কষ্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
শেষ সময়ে পথে পথে কষ্ট

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বিপুলসংখ্যক মানুষ একই সময়ে ঢাকা ছাড়ায় মহাসড়কগুলোতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কগুলোয় মাঝারি থেকে তীব্র যানজটের খবর পাওয়া গেছে।

গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গতকাল সকাল থেকেই যাত্রী ও যানবাহনের বাড়তি চাপ থাকায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে থেমে থেমে যানজট তৈরি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি দুর্ঘটনার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায় ৪০ মিনিট বন্ধ ছিল। এর প্রভাবে গতকাল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

 গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে গতকাল সকালে যানবাহনের ধীরগতি থাকায় টঙ্গী, মিলগেট, বোর্ডবাজার, ভোগড়া ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কের এ অংশে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় দুটি লেন বন্ধ রয়েছে। এর ফলেই জট তৈরি হয়েছে।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ উত্তরাঞ্চলের অগণিত মানুষ বিভিন্ন যানবাহনে চেপে ছুটে আসছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে। আরিচা-কাজীরহাট নৌরুটে ফেরিস্বল্পতায় যানবাহন পারাপারে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। গতকাল সকাল থেকে পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমসহ উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনসহ ঘরমুখী মানুষের বাড়তি চাপ দেখা গেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি) এ খবর নিশ্চিত করেছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেয়াজ জানান, পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের মুখে শতাধিক ছোট গাড়ি এবং টার্মিনালমুখী কয়েক শ যাত্রীবাহী পরিবহন পদ্মা পাড়ি দিতে অপেক্ষায় রয়েছে। অপেক্ষমাণ যানবাহনের সারি ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।

ফেরি পারের জন্য আসা যানবাহনের পাশাপাশি লঞ্চ টার্মিনালে  যাত্রীর চাপ চোখে পড়ার মতো। মহাসড়কে বাস ও কোচের স্বল্পতায় এসব যাত্রী ঢাকার গাবতলী এবং সাভারের নবীনগর এলাকা থেকে খোলা ট্রাক ও পিকআপে চেপে অতিরিক্ত ভাড়ায় ঘাটে আসছে।

ঢাকার যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তার মাওয়া বাসস্ট্যান্ডে গতকাল সকালে দেখা যায়, মানুষে গিজগিজ করছে। ক্রমে তা বাড়ছে। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। বেসরকারি চাকরিজীবী আরমান বলেন, ‘যাব নড়াইল। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে ছোট বাচ্চা নিয়ে বাসের জন্য বসে আছি। কিন্তু বাসও নাই, টিকিটও নাই।’

‘আপন’ বাসের মালিক বকুল জানান, সকালে কিছু বাস ছেড়ে গেলেও গাড়িগুলো যানজটের কারণে যথাসময়ে ঢাকায় ঢুকতে পারছে না।

দোলাইরপাড়ে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গগামী কয়েকটি বাস কাউন্টার। এখানে ইমাদ পরিবহনের সুপারভাইজার ইমন বলেন, ‘আমাদের পরিবহনের টিকিট বিক্রি শেষ। শুধু ১১ জুলাই তারিখের সিট খালি আছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এই চাপ কুমিল্লা অংশের দাউদকান্দি টোল প্লাজার দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকায় বেশি প্রভাব ফেলেছে।

ফলে বাস চলছে ধীরগতিতে। দাউদকান্দি টোল প্লাজায় টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে কুমিল্লা-ঢাকা লেনে জট শুরু হয়।

এই জট ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়ে যায়। এ জট আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।’

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লা অংশে কোনো যানজট নেই। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে যে চাপ ছিল, তা আমরা ভোরের আগেই কাভার করেছি।

আমি এখনো টোল প্লাজার সামনে বসে আছি। সামান্য চাপ আছে, কিন্তু যানজট নেই। ঈদ মৌসুমে মানুষ ঘরে ফেরে, তাই চাপটা একটু বেশি। আমরা মাঠে কাজ করছি।’

ঢাকার থেকে কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলে প্রবেশের মহাসড়ক মাত্র একটি। ফলে নরসিংদীর রায়পুরার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাহমুদাবাদ এলাকায় গতকাল তীব্র যানজট দেখা গেছে। বাস চলছে থেমে থেমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত