Ajker Patrika

১৮ বছর পর মাদারীপুরে হত্যা মামলার ৪৪ আসামির সবাই খালাস

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ২০: ০৪
১৮ বছর পর মাদারীপুরে হত্যা মামলার ৪৪ আসামির সবাই খালাস

১৮ বছর ধরে বিচার কার্য চলার পর মাদারীপুরে আশরাফ আলী বেপারী হত্যা মামলায় ৪৪ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় দেন। 

এ সময় ৯৫ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত বলেন, পূর্বের শত্রুতা ও পুরোনো চারটি মামলা থেকে মুক্তি পেতে এই হত্যা মামলায় আসামিদের জড়ানো হয়েছে। যা সমাজের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। বাদীপক্ষে সাক্ষীর কেউই ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। 

এমনকি নিহতের স্ত্রীও তার সাক্ষীতে তিন রকম কথা বলেছেন। আদালত সবকিছু বিবেচনা করে দেখেছে এই হত্যাকাণ্ড এজাহারনামীয় আসামিদের মাধ্যমে সংগঠিত হয়নি। এই ঘটনায় অন্যরা দায়ী, যা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। তাই সব আসামিই খালাস পেয়েছে। 

এর আগে ২০০৫ সালের ১২ মার্চ পূর্ব শত্রুতার জেরে মাদারীপুর সদর উপজেলার আমড়াতলা গ্রামের বাসিন্দা আশরাফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনায় পরদিন নিহতের ভাই সিদ্দিকুর রহমান বেপারী বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-২২ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জাফর আলী মিয়া বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে আসামিপক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে। আশরাফকে হত্যা করা হলেও মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা জড়িত ছিলেন না। পূর্ব শত্রুতার বশেই এই মামলায় আসামিদের নাম দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন আসামিরা এই মামলায় হয়রানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন। তবে, এ রায়ে আসামিরা সন্তুষ্ট।’ 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও অতিরিক্ত পিপি গোলাম আজম শামীম গৌড়া বলেন, ‘এই রায়ের বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ আপিল করবে। বাদীপক্ষ মামলায় যথেষ্ট সাক্ষ্য ও প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করেছে। তাই রায় নিয়ে বাদীপক্ষ ক্ষুব্ধ।’ 

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে গত ২০০৫ সালের ১২ মার্চ সকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের আমড়াতলা গ্রামের হামিদ বেপারীর ছেলে আশরাফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় পরদিন নিহতের বড় ভাই সিদ্দিকুর রহমান বেপারী বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-২২ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

এরপর ২০০৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহ নেওয়াজ খালেদ ৪৬ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ সময় এজাহারনামীয় চার আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলেও উল্লেখ করেন। পরে বিভিন্ন সময় আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসারসহ ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দোষ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত এজাহারনামীয় সব আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। 

এদিকে রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত এলাকায় নেওয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 

মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের রায়কে ঘিরে পুরো আদালত জুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। রায়ের আগে আদালত পাড়া থেকে অপরিচিত লোকজন ও আদালতের কাজে সংশ্লিষ্ট নয়, এমন সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আসামিদের আদালতে হাজির করা ও রায় শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত