Ajker Patrika

৭ ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়ল ছাত্রদল, যান চলাচল স্বাভাবিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ১৯: ১৬
ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে সড়কে ছাত্রদল অবস্থান পালন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে সড়কে ছাত্রদল অবস্থান পালন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে দিনভর শাহবাগ মোড় থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এতে শাহবাগ মোড় ও আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকেন নগরবাসী।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকেই ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করেন। সকাল ১০টার দিকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। একই সময়ে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের নেতৃত্বে আরেক দল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে বসে পড়ে।

প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে চলে এই কর্মসূচি। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তাঁরা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

‘আর চাই না এনএসআইয়ের প্রক্টর’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ ঝোলে, প্রক্টর কী করে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’—এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো শাহবাগ এলাকা।

একদিকে ঝুমবৃষ্টি, অন্যদিকে ছাত্রদলের এই কর্মসূচির কারণে আশপাশের সড়কগুলোয় দেখা দেয় তীব্র যানজট।

শাহবাগ মোড়ে আটকে থাকা চাকরিজীবী এখলাস আহমেদ বলেন, ‘৭–৮ মাস ধরে শাহবাগ দিয়ে কোনো দিন ঠিক সময়ে যেতে পারিনি। আজও তিন ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। এত দাবি আর আন্দোলনের মাঝে আমরা সাধারণ মানুষ যেন আর মানুষই নই। আমাদের কথা কেউ ভাবে না।’

এদিকে সড়ক অবরোধের বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেন, ‘সাম্য হত্যাকাণ্ডে যাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তারা প্রকৃত আসামি নয়। প্রকৃত খুনিরা এখনো ধরা পড়েনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না। আমরা তাঁদের পদত্যাগ দাবি করছি।’

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো আশ্বাস বা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পাইনি। প্রশাসন আমাদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে।’

সরেজমিন দেখা যায়, শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। তবে ছাত্রদল ও পুলিশ—দুই পক্ষের কেউ কাউকে কিছু বলছিল না। মাঝেমধ্যে কোনো অ্যাম্বুলেন্স এলে নেতা-কর্মীরা নিজ উদ্যোগে সেগুলোকে পার করে দেন। তবে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারেননি।

শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ১৩ মে রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং এএফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায়।

এ ঘটনায় সাম্যের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ ওই মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে। তবে বাকি তিনজনের পরিচয় ও সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো স্পষ্ট তথ্য জানানো হয়নি।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র তালেবুর রহমান বলেন, পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে, তারাও কয়েকজনের নাম বলেছে, তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এ বিষয়ে পুলিশের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত