Ajker Patrika

রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা: ১ বছরের প্রকল্প শেষ হয়নি ৫ বছরে, বাড়ছে মেয়াদ

  • ৩৮৮টি নয়, ঢাকার নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থায় প্রয়োজন ৫০ বাস রুট
  • মেয়াদের সঙ্গে প্রকল্পের খরচ ৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব
  • সংশ্লিষ্টরা বলছেন একক কোম্পানির অধীনে সব বাস চালু করতে বড় বাধা মালিকেরা
  • রাজধানীতে বাস রুট আছে ৩৮৮টি, অথচ দরকার মাত্র ৫০টি
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ২১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০৩০ সালের মধ্যে রাজধানীতে নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ঢাকা শহরের বাস রুট যৌক্তিকীকরণ এবং প্রতি রুটে অভিন্ন কোম্পানির অধীনে বাস সার্ভিস চালুর একটি উদ্যোগ নিয়েছিল বিগত সরকার। এজন্য ২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প শুরু করা হয় ২০২০ সালের ১ মার্চ। কথা ছিল ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পটি শেষ হবে। কিন্তু এক বছরের ওই প্রকল্প ৫ বছরেও শেষ হয়নি। মাঝে দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেনে নেওয়া হয়। তাতেও বাস রুট যৌক্তিকীকরণ ও একক কোম্পানির অধীনে সব বাস চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন প্রকল্পটির মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

জানা গেছে, সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি ভৌত অবকাঠামো বিভাগের বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় প্রকল্পের সময় বাড়ানোর সম্মতি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের (জ্যেষ্ঠ সচিব) এম এ আকমল হোসেন আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জনপ্রত্যাশা পূরণে কীভাবে মহানগরে বাস রুট যৌক্তিকীকরণ করা যায়, তার নীতিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন। তাই প্রকল্পের সময় বাড়ানোর বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছে।

‘প্রিপারেশন অব কনসেপ্ট ডিজাইন অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যান ফর বাস রুট রেশনালাইজেশন অ্যান্ড কোম্পানি বেজড অপারেশন অব বাস সার্ভিস ইন ঢাকা’ শীর্ষক ওই প্রকল্পের আওতায় বাসে র‍্যাপিড পাস চালু, বাস চলাচলের জন্য ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম (আইটিএস) সমন্বিত কন্ট্রোল সেন্টার গঠনের ধারণা এবং বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজ চালুর লক্ষ্যে ডিপিপি ও টেন্ডার ডকুমেন্ট প্রস্তুতসহ বেশ কিছু কার্যক্রম সম্পন্ন করার কথা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে পাঁচটি প্রতিবেদনের কাছ শেষ হয়েছে, বাকি রয়েছে আরও চারটি। এগুলো শেষ করতে আরও ৬ মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ২০২১ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হলেও কোভিডের কারণে কনসালট্যান্ট নিয়োগে বিলম্ব হয়েছে। কনসালট্যান্ট নিয়োগের পর মাঠপর্যায়ে উপাত্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে হয় ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের কারণে। পরে উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু হলেও জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের কারণে আবারও কিছুদিন স্থবিরতা নেমে আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের ট্রাফিক সার্ভে গত জানুয়ারিতে শেষ হয়েছে; কিন্তু ট্রান্সপোর্ট মডেলিংয়ের মাধ্যমে ট্রাফিক ফোরকাই ও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক প্রস্তুতের কাজ এখনো বাকি রয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় ঢাকা মহানগরীর প্রায় ১০০টি বাস রুটের ওপরে সার্ভে ও ৫ হাজার অফিসগামী যাত্রী (৫০টি অফিস), ১০ হাজার শিক্ষার্থী (৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ১০ হাজার মেট্রোরেল ব্যবহারকারীর ওপর সার্ভে করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

একটি লাভজনক রুটে ডিটিসিএর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ন্যূনতম ৬ মাসের জন্য পাইলট ভিত্তিতে বাসসেবা পরিচালনা করার বিষয়টি প্রকল্পে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ডিটিসিএ, বিআরটিএ ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘বাংলাদেশ টিন এয়ার প্রকল্প’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে ইলেকট্রিক বাস পরিচালনা ও তাদের জন্য ডিপো নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধিসহ প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পে নতুন করে কিছু বিষয় যোগ হয়েছে, সে কাজের জন্য ব্যয়ও বৃদ্ধি করতে হবে।

নিরাপদ গণপরিবহন ব্যবস্থায় যত বাধা

লক্কড়-ঝক্কড় বাস, যেখানে-সেখানে থেমে থেমে যাত্রী তোলা, প্রতিটি রুটে বিভিন্ন কোম্পানির বাসের অসুস্থ প্রতিযোগিতা—সব মিলিয়ে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে আছে ঢাকা শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থা।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার ভেতর চারটি বাস টার্মিনাল করার কথা ছিল; কিন্তু এখনো হয়নি। বিআরটিসির নতুন বাস এবং প্রাইভেট সেক্টরের রংচটা ফিটনেসবিহীন বাস একই ভাড়া আদায় করছে। ফলে বিআরটিসি অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে এবং অন্যরা পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ছাড়াই বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। ডিটিসিএ কর্তৃক নির্ধারিত ছয়টি ক্লাস্টারে রুট রেশনালাইজেশন একসঙ্গে চালু হওয়া প্রয়োজন।

বাস রুট যৌক্তিকীকরণ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা দেখেন, ঢাকা শহরে ৫০টির বেশি বাস রুট করার মতো জায়গা নেই। অথচ রুট রয়েছে ৩৮৮টি। এসব রুটে ১৮০০০ রুট পারমিট দিয়ে রেখেছে রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট কমিটি (আরটিসি), যদিও যেখানে ১০০টির বেশি রুট পারমিটের দরকার নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিরাপদ বাস সার্ভিস ব্যবস্থা চালুর জন্য সরকারের চেয়ে বাসমালিক ও শ্রমিকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে চলমান চুক্তিভিত্তিক বাস সার্ভিস ব্যবস্থা রয়েছে, তা বন্ধ করতে হবে। কারণ সব ধরনের জটিলতার উৎস হলো চুক্তিভিত্তিক সার্ভিস। এ কারণে কন্ডাক্টর ও চালক যাত্রী তোলা নিয়ে অসম প্রতিযোগিতা করেন। রাস্তার শৃঙ্খলা নষ্ট করে যানজটেরও সৃষ্টি করেন।

বিষয়টি সম্পর্কে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, এক রুটে একটি কোম্পানি থাকলে কোনো ধরনের সমস্যা হয় না। সে কারণে একটি রুটে পাইলট হিসেবে ৬ মাসের জন্য বাস পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে বাসমালিক-শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুল বাকী মিয়া বলেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মেট্রোরেল লাইনের স্টেশনভিত্তিক বাস রুট নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এ ছাড়াও ফিটনেসবিহীন বাসে স্থায়ীভাবে ‘রিজেক্টেড সিল’ স্টিকার লাগাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুর সিটির উন্নয়নে আসছে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প: নগর প্রশাসক

গাজীপুর প্রতিনিধি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠসহ মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।  ছবি: সংগৃহীত
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠসহ মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর অবকাঠামো, শিক্ষা ও জনসেবার মান উন্নয়নে শতকোটি টাকার একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠসহ মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

শরফ উদ্দিন বলেন, নগর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি আনতে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরের রাস্তা, ড্রেনেজ, জনস্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হবে।

এ সময় ইজতেমা ময়দানে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্মাণাধীন শেড, মেঘনা মাঠে স্কুল ও খেলার মাঠ নির্মাণের অগ্রগতি, এবং ‘প্রত্যাশা প্রকল্পে’র আওতাধীন বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নকাজ সরেজমিনে ঘুরে দেখেন প্রশাসক।

পরিদর্শন শেষে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজের মান বজায় রেখে দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ ও সুদীপ বসাক, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন ও জহিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সোহেল রানা এবং অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তারা।

পরে প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ তুরাগ নদের উত্তর তীরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং টঙ্গীর প্রস্তাবিত সিটি করপোরেশন স্কুল পরিদর্শন করেন। তিনি স্কুলটির নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরায় শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে ছাত্র রক্তাক্ত, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
ডাস্টারের আঘাতে আহত রাফিউর রহমান আহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডাস্টারের আঘাতে আহত রাফিউর রহমান আহাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরায় ক্লাসে শিক্ষক কর্তৃক ডাস্টার নিক্ষেপের ঘটনায় রাফিউর রহমান আহাদ (১৭) নামের এক ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে।

উত্তরার ‘উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে’ রোববার (৯ নভেম্বর) বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ছাত্রটিকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে তাকে চিকিৎসাধীন দেখা যায়।

ভুক্তভোগী ওই ছাত্র উত্তরা হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম (রিপ) প্রতিষ্ঠানটির পৌরনীতি বিষয়ের শিক্ষক।

আহত ছাত্র রাফিউর রহমান আহাদ আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘রফিকুল স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। ওই সময় আমার সামনের বেঞ্চে বসা এক ছেলে তার পাশের জনের সঙ্গে কথা বলছিল। তখন রফিক স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা ডাস্টার ছুড়ে মারে। পরে সামনের বন্ধুটি দেখতে পেয়ে সরে যায়। আর সেটি এসে আমার মাথায় লাগে।’

আহাদ আরও বলে, ‘আমি বেঞ্চ থেকে সেন্সলেস হয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম। হুঁশ ফিরলে দেখি, সামনের ব্যাগ রক্তে লাল হয়ে গেছে। মাথায় হাত দিয়ে দেখি, হাতও রক্তের ভিজে গেছে। পরে আমার শার্টসহ পরনের জামাকাপড় রক্তে একাকার হয়ে যায়। আমার বন্ধুরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করায়।’

আহত ছাত্রের বড় বোন খাদিজা রহমান হেরা বলেন, ‘আজকে আমার ছোট ভাই যথারীতি কলেজে যায়। ওর টিফিন টাইম আড়াইটায়। কিন্তু বেলা ২টায় ওর ফোন থেকে কল আসে। তারপর ওর বন্ধুরা বলে, আহাদ অনেক অসুস্থ, ওরে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি। আপনারা আসেন। হাসপাতালে এসে দেখি, ওর সারা শরীর রক্তে মাখা। মাথায় সেলাই চলছে।’

খাদিজা রহমান হেরা বলেন, ‘পরে জানতে পারলাম, রফিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক অন্য ছাত্র দুষ্টুমি করার অপরাধে আমার ভাইকে মারধর করেছে।’ ভাইয়ের ওপর আক্রমণের বিচার চেয়ে খাদিজা বলেন, ‘আমরা থানায় যাচ্ছি অভিযোগ দিতে।’

অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের করা যায়নি। তার ভাই আবু বক্কর জানান, রফিক সাহেব ফোনটি বাসায় রেখে বাইরে গেছেন।

শিক্ষকের মারধরে ছাত্র রক্তাক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলেই প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দেন, যদি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে তারাই বিচার করবে।

এ বিষয়ে উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষক রফিকুল এক ছাত্রকে ডাস্টার দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। এতে ওই ছাত্র আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমিও গিয়েছিলাম।’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষককে ক্লোজড করেছি। বিষয়টি চেয়ারম্যান স্যারকে অবগত করেছি। মোটকথা তাঁকে প্রতিষ্ঠান থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪০ বিএনপি প্রার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪০ বিএনপি প্রার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত) অংশ নেওয়া বিএনপির ৪০ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ রোববার (৯ নভেম্বর) দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপি ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল। কিন্তু বিএনপির ৪০ নেতা তাতে অংশ নেওয়ায় তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত নেতারা দলের হাইকমান্ডের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁদের সেই আবেদন ও দলের প্রতি তাঁদের অবদান বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ তৌফিকুল হাদী ও মুফতি কমর উদ্দীন কামু; ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান মিঠু; ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল মিয়া, খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন ও শাহেদ সিরাজ; ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরহাদ চৌধুরী শামীম; ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাঈদুর রহমান জুবের; ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহিম মতছির; ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম মুনিম; ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মুজিবুর রহমান; ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সালমান চৌধুরী শাম্মী; ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বদরুল আজাদ রানা; ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মামুনুর রহমান মামুন; ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন কবির সুহিন; ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ; ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের সেলিম আহমদ রনি; ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আব্বাস; ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা কামাল ও সাহেদ খান স্বপন; ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাবেদ আমিন সেলিম, রাজু মিয়া ও সানর মিয়া; ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আবদুল মুকিত; ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর ও দুলাল আহমদ; ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের গউছ উদ্দিন পাখী ও দেলওয়ার হোসেন নাদিম; ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের দিলওয়ার হোসেন জয়; ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের উসমান হারুন পনির; ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আলতাফ হোসেন সুমন; ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হাছিব এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের সুমন আহমদ সিকদার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টঙ্গীতে হাতের চারটি আঙুল কেটে নিল প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০১: ০৭
হাসপাতালে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
হাসপাতালে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে টঙ্গীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যের হাতের চারটি আঙুল কেটে নিয়েছে অন্য গ্রুপের সদস্য।

‎‎আজ রোববার (৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে টঙ্গীর ভরান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

‎‎আঙুল বিচ্ছিন্ন হওয়া ওই সদস্যের নাম তাসরিফ (২৫)। এ ঘটনায় একই গ্রুপের অপর দুই সদস্য আবির (২৪) ও সিয়াম (২৪) আহত হয়েছেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে পুলিশ জানায়, আজ রাত ৮টার দিকে টঙ্গীর ভরান এলাকায় দুটি কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্য জড়ো হয়। পরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে ‘ভরানের সৈকত বাহিনী’ নামের কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্য ‘তাসরিফ বাহিনীর’ প্রধান তাসরিফের বাম হাতের চারটি আঙুল কেটে নেয়। এ সময় আবির ও সিয়ামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় তারা।

‎ঘটনার একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে এলে আহত ওই তিন তরুণকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।

‎টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, দুটি কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা দুই দফায় সংঘর্ষে জড়ায়। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত