Ajker Patrika

রূপগঞ্জে বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২, আহত শতাধিক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২১, ২১: ৪৫
রূপগঞ্জে বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২, আহত শতাধিক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক শ্রমিক। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সোয়া আটটায় কারখানার ছাদে আটকে আছে দুই শতাধিক শ্রমিক। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।  

প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক আল আমিন জানান, কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কর্মচারী কাজ করেন। করোনার কারণে কয়েকটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের স্টোরেজ ও কার্টুন এবং ফুড সেকশনের ৬ তলা ভবনে ৪ শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টায় দোতলায় ফুড প্যাকেজিং করার সময় হঠাৎ নিচ থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখেন তিনি। পরে তিনি দোতলার গ্লাস ভেঙে নিচে লাফ দেন। তিনতলার কার্টুন সেকশন থেকে লাগা আগুন মুহূর্তে দোতলার টোস্ট সেকশন, তিনতলার লাচ্ছি ও  লিচু সেকশন, ৪ ও ৫ তলার স্টোর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কারখানার শ্রমিকেরা আতঙ্কে ছাদে আশ্রয় নেয়। ছাদ থেকে অনেকে লাফিয়ে পড়তে শুরু করে।     

হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসএ ঘটনায় স্বপ্না রানী (৪২) ও মিনা আক্তার (৪৪) নামের দুই নারী শ্রমিক নিহত হন। নিহত স্বপ্না রানী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গুলডুবা গ্রামের যতীর সরকারের স্ত্রী এবং নিহত মীনা আক্তার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার উত্তরকান্দা কুকিমাদল এলাকার হারুনের স্ত্রী। তারা দুজন দোতলার অডি সেকশনের ক্যাজুয়াল শ্রমিক বলে নিশ্চিত করেছেন সেই সেকশনের অপারেটর আজিজ মিয়া এবং তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন স্থানীয় ইউএস বাংলার চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন। এ ছাড়া এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইউএস বাংলা মেডিকেলে ১৭ শ্রমিকসহ রূপগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ঢাকায় শতাধিক শ্রমিককে ভর্তি করা হয়েছে। 

হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসপ্রতিষ্ঠানের অ্যাডমিন ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, সেখানে কর্মরত চারশো শ্রমিকের মাঝে অন্তত দুইশো শ্রমিক এখনো ছাদে আটকে আছে। তাদের উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবে তা কয়েক কোটি টাকা।   

নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আল আরিফিন গণমাধ্যমকে জানান, খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ, ডেমরা, কাঞ্চন ও পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে যাচ্ছে। তবে, গ্যাসের বয়লার বিস্ফোরণের ভয়ে সাবধান হয়ে কাজ করতে হচ্ছে, এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আগুনের সূত্রপাত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারেও তৎপর রয়েছে তারা।   

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত