Ajker Patrika

১৩ কিলোমিটার ঘিরে ভোগান্তির যত শঙ্কা

  • ঈদের সময় এই মহাসড়কে প্রতিদিন ২০-২৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে
  • উন্নয়নকাজ চলমান থাকায় এলাকায় যানজটের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে: বাসচালক
  • যানজটমুক্ত রাখতে ৭ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে: ট্রাফিক পুলিশ
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল 
প্রতিবছর উত্তরাঞ্চলের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক। যানজটে যানবাহন আটকে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে এবার স্বস্তির ঈদযাত্রা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি মহাসড়কের একটি অংশের চার লেনের নির্মাণকাজের ব্যস্ততা। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রতিবছর উত্তরাঞ্চলের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি বাড়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক। যানজটে যানবাহন আটকে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে এবার স্বস্তির ঈদযাত্রা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি মহাসড়কের একটি অংশের চার লেনের নির্মাণকাজের ব্যস্ততা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তির কারণ হতে পারে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের ১৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার অংশ। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ, আগে যাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা, চার লেনে আসা যানবাহন দুই লেনে প্রবেশ এবং চার লেনে উন্নীতকরণের কাজের ধীরগতির কারণে এ শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মহাসড়কের ওই অংশ পরিদর্শন করে সমস্যা চিহ্নিত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে রয়েছে ৬৫ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার প্রায় ১৫-১৬ হাজার যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে। ঈদের সময় তা ২০-২৫ হাজার অতিক্রম করে। মহাসড়কটির চন্দ্রা এলাকা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনে যানবাহন নির্বিঘ্নে যাতায়াত করে। বিপাকে পড়ে এলেঙ্গায় এসে। কারণ এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পূর্বপার গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়ক হলো দুই লেনের। অপর দিকে এই সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজের ধীরগতি, ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। আবার অনেক সময় দুর্ঘটনার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই মহাসড়কের ১৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনায়েম লিমিটেড। প্রায় ৬০১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের ১৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়কে ১টি ফ্লাইওভার, ৮টি ব্রিজ, ১০টি কালভার্ট, ২টি আন্ডারপাস ও ১টি সার্ভিস লেন নির্মাণের কথা। গত বছরের ডিসেম্বরে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা-সিরাজগঞ্জ চলাচলকারী একটি বাসের চালক রফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত নির্বিঘ্নে চলাচল করা যায়। কিন্তু এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতুর পূর্বপারে গোলচত্বর পর্যন্ত দুই লেন গাড়ি এক লেনে চলাচলের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয়।

জেনিন সার্ভিসের ভুট্টু মিয়া বলেন, ‘দূরপাল্লার গাড়ি পাল্লাপাল্লি করে এসে চার লেন থেকে দুই লেনে প্রবেশ করে। এ সময় গতি থেমে যায়। কোনো গাড়ি নষ্ট হলে সারতে সারতেই কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। আবার নির্মাণকাজ চলমান থাকায় অনেক জায়গায় এক লেনে চলাচল করতে হয়। তখন বাসের গতি একেবারেই নেমে যায় এবং বিপরীতমুখী গাড়ি অতিক্রম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। উন্নয়নকাজ চলমান এলাকায় যানজট-ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’

সড়ক ও জনপথ বিভাগ টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. সিনথিয়া আজমেরী খান জানান, ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য ঈদের ১০ দিন আগেই সব ধরনের নির্মাণকাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। শেষ না হলে চলাচলের উপযোগী করে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার রবিউল আওয়াল বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে যান চলাচলের জন্য চার লেন উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এ জন্য শ্রমিকেরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। যানজট দূর করতে চার লেন কিছুটা হলেও ভোগান্তি কমাবে।’

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান, ঈদে যানবাহনের বাড়তি চাপ সামলানোর জন্য টোল আদায়ের ৯টি অতিরিক্ত বুথ স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া মোটরসাইকেলের জন্যও ২টি বুথ থাকবে ভোগান্তি লাঘবের জন্য।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রাকিবুল হাসান রাসেল বলেন, গত ঈদযাত্রার দুর্বলতা চিহ্নিত করে বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সমন্বয় সভার মাধ্যমে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যানজটমুক্ত রাখার জন্য সাত শতাধিক পুলিশ সড়কে দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া আনসার বাহিনী কাজ করার পাশাপাশি শ্রমিক ফেডারেশন স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করবে। সড়কের চাপ কমানোর জন্য উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোর যমুনা সেতু গোলচত্বর থেকে ভূঞাপুর লিংকরোড ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত