Ajker Patrika

পলিথিন বন্ধে সময় চান ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পলিথিন বন্ধে সময় চান ব্যবসায়ীরা

পলিথিন বন্ধে সময় চেয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, পলিথিনের ব্যবহার বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তার কোনোটাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করা হচ্ছে না। হুট করে নেওয়া সিদ্ধান্ত সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে প্লাস্টিক ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এ সব কথা বলেন। 

বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং, রোল ম্যানুফ্যাকচারিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু মোতালেব বলেন, ‘বারবার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো, বাড়ির মালিকদের ভাড়া বাড়ানো, আগের সরকারের সময়ের চাঁদাবাজি, সরকারের দ্বিমুখী সিদ্ধান্তের ফলে ব্যবসায়ীরা এমনিতেই ভালো অবস্থায় নেই। এর মধ্যে যদি ব্যবসার ওপর নতুন আঘাত আসে, তাহলে সরকারের ট্যাক্স কমে যাবে। ইন্ডাস্ট্রি নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়বে, বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই-তিনি পরিস্থিতি অনুধাবন করবেন। এর আগে যখন প্লাস্টিক বন্ধ হলো, তখন এই খাতের অনেক ব্যবসায়ী পথে বসে গিয়েছিল। ২০০২ সালে পাটকে উৎসাহিত করতে শপিং ব্যাগকে বন্ধ করা হলো। কিন্তু দেখা গেল, আদমজী জুট মিলস বন্ধ হয়ে গেছে। এখনকার উপদেষ্টার আগে থেকেই প্লাস্টিক খাতের ওপর ক্ষোভ ছিল। আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলি-বিকল্প চলে আসলে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধ হয়ে যাবে।’ 

ব্যবসায়ীরা বলেন, পলিথিনের বিকল্প ব্যবস্থা করে অন্তত ছয় মাস থেকে এক বছর সময় দিয়ে যদি এটা বন্ধের চিন্তা করা হয়, তাহলে বিষয়টা ভালো হবে এবং ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। আলোচনা না করে যদি সরকারের নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত প্লাস্টিক সেক্টরকে ক্ষতির মুখে ফেলে, তাহলে প্লাস্টিক খাতের ব্যবসায়ীদের রাস্তায় নামা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। 

লিখিত বক্তব্যে প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং প্লাস্টিক ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক সামিম আহমেদ বলেন, ‘যে লক্ষ্যে ২০০২ সালে প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ বন্ধ করে দেয়, তা গত ২২ বছরে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। সাশ্রয়ী মূল্য, গুণগত মান ও সহজে ব্যবহারযোগ্য শপিং ব্যাগের বিকল্প উৎপাদন ও সরবরাহ সম্ভব হয়নি। পরিবেশ বাঁচাতে হলে রিসাইকেল, রিইউজের পরিমাণ বাড়াতে হবে এবং ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী আয়োডাইজড লবণ প্লাস্টিক ছাড়া মোড়কীকরণ সম্ভব নয়। বর্তমান সরকার ভোজ্যতেলের সঙ্গে ভিটামিন-এ যুক্ত করতে চায়, যা প্লাস্টিক কন্টেইনার ছাড়া এটা সম্ভব নয়। তরল দুধ প্লাস্টিক প্যাকেজিং ছাড়া বাজারজাত সম্ভব নয়। এ ছাড়া গাছের চারা, টেক্সটাইল ও জুট প্যাকেজিং-সহ নানা কাজে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক দরকার।’ 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের তালিকায় এমন কিছু পণ্য আছে, যার সঙ্গে ১৩ লাখ ক্ষুদ্র বিক্রেতা জড়িত। এর মাধ্যমে সরকারের কোষাগারে প্রতি বছর ৪০ হাজার কোটি টাকা জমা হয়। পলিথিন বন্ধ হলে ১৩ লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কায় পড়বেন। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সমুদ্র দূষণের জন্য আমরা দায়ী না। ভারত, নেপাল, চীন থেকে ৫৪টি নদী বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়, প্রচুর প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ে আসে। এটা আমাদের নদ, নদী ও সমুদ্রে বর্জ্য সৃষ্টি করেছে। সুতরাং সব বর্জ্যের জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করা যুক্তিসংগত নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দিলেন প্রধান শিক্ষক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
এলোমেলোভাবে চুল কেটে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত
এলোমেলোভাবে চুল কেটে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহীর রুপাচরা উচ্চবিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান কাজল। এ ঘটনায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন অভিভাবকেরা। বিষয়টি শনিবার বিকেলে নিশ্চিত করেন অন্তত ১০ জন অভিভাবক। এর আগে বৃহস্পতিবার স্কুল চলাকালীন ৯ম ও ১০ম শ্রেণিকক্ষে এমন ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক কাজল চরশাহী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঢাকা ধানমন্ডি থানায় শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামিও এই প্রধান শিক্ষক।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান কাজল কারণে-অকারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এ ছাড়া নানা অজুহাতে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। কথা না শোনার অজুহাতে বৃহস্পতিবার স্কুল চলাকালীন ৯ম ও ১০ম শ্রেণিকক্ষে ঢুকে কাঁচি দিয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর মাথার চুল এলোমেলো করে কেটে দেন। এতে করে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।

তাদের অভিযোগ, এর আগেও প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান কাজলের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার কারণে এর প্রভাব পড়েনি। সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি রুপাচরা বিদ্যালয় মাঠে সভা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিএনপির পক্ষে স্লোগান দেয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন প্রধান শিক্ষক। এর জের ধরে শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে পাঁচ শিক্ষার্থী জানায়, কোনো কারণ ছাড়াই ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেন। এর আগেও প্রধান শিক্ষক কারণে-অকারণে শিক্ষার্থীদের মারধর করতেন। চুল কেটে দেওয়া শিক্ষার্থীরা লোকলজ্জার ভয়ে স্কুলে যাচ্ছে না।

অভিভাবক জামাল উদ্দিন বিপু ও আবদুল কাদের লিটনসহ অনেকেই জানান, প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমানের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের বিচার ও অপসারণের দাবি জানান তাঁরা।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘অনেক অভিভাবক বিদ্যালয়ে এসে বলেন সন্তানেরা কথা শুনে না। চুল বড় রাখে। তাই শিক্ষার্থীদের শাসন করতে ৯ম ও ১০ম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থীর মাথার কিছু চুল কেটে দিই। বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ফেরাতে এমন কাজ করছি। এটি দোষের কিছু নয়।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামশেদ আলম রানা বলেন, ‘বিষয়টি অভিভাবকেরা জানিয়েছেন। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেওয়া ঠিক হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে যুবকের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
লাশবাহী খাটিয়া নিয়ে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাশবাহী খাটিয়া নিয়ে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে হালিশহরে নিজ বাসার সামনে মো. আকবর (৩৫) নামে এক যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে হত্যা করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ শনিবার লাশ নিয়ে পরিবার ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে।

এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ নগরের হালিশহর থানার মাইজপাড়া এলাকায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে মো. সোহেল (৩০) ও মো. আরমান (২০) নামে দুজনকে আটক করেছে।

নিহত আকবর মাইজপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন বাড়ির কাছে মোটরসাইকেলে আসা চার থেকে পাঁচজন যুবক আকবরকে ধারালো দা ও চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ আকবরকে চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বোন মোছাম্মৎ সায়েমা আজকের পত্রিকাকে জানান, আকবর এলাকায় একটি ক্ষুদ্রঋণের সমবায় সমিতি চালাতেন। এলাকার মানুষ সমিতিতে সঞ্চয়ের টাকা জমা রাখতেন, ঋণও নিতেন। বছর দেড়েক আগে ওই সমিতি ছেড়ে দেন আকবর। কদিন আগে কয়েকজন ওই সমিতির কথা বলে চাঁদা দাবি করেন। সমিতি এখন বন্ধ হয়ে গেছে জানালেও তাঁরা চাঁদা দাবি করতেই থাকেন। আকবর চাঁদা দিতে রাজি না তারা তাঁকে হুমকি দিচ্ছিলেন। সায়েমা জানান, এ ঘটনায় কাশেম, সোহেল, আরমানসহ চারজনের নামে এবং অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনের নামে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আবছার বলেছেন, টাকাপয়সার লেনদেনের দ্বন্দ্বে আকবরকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করা হয়েছে।

স্থানীয় আরও দুজন জানিয়েছেন, টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে আকবরের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার সোহেল। একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সোহেল ফোন দিলে তাঁর পক্ষে তিনটি মোটরসাইকেলে করে এসে কয়েক যুবক এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

এদিকে চমেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে আকবরের লাশ হাসপাতাল থেকে এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে লাশবাহী খাটিয়া নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নিহতের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এ সময় খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানায় তারা। মিছিলটি নগরের হালিশহরে বিভিন্ন সড়কে প্রদক্ষিণ করে।

ওই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া নিহতের নিকটাত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, লাশ নিয়ে এলাকাবাসী একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলটি মাইজপাড়া এলাকা থেকে শুরু করে ফইল্যাতলী বাজার, হালিশহর থানা চত্বর, হালিশহর বি-ব্লক ঘুরে হালিশহর ১০ নম্বর লেনে গিয়ে শেষ হয়েছে। লাশ দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে বিএনপির সংঘর্ষের সময় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবক, ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় এক যুবকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই যুবকের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান আজ শনিবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি এবং খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষ এখনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন ওসি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলা সদরের ওয়াপদা মোড় এলাকায় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি থেকে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। ওই সময়কার ভিডিও ফুটেজে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি চায়নিজ কুড়াল, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র হাতে বেশ কয়েকজনকে দেখা গেছে।

আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত
আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শাহ মো. জাকারিয়া কাজী। ছবি: সংগৃহীত

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে ঝুনু সমর্থিত উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ ১৫টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। এ ছাড়া আশপাশের অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্ততপক্ষে অর্ধশত কর্মী-সমর্থকেরা আহত হন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রটি বের করার চেষ্টা করেন। তখন আরেকজন তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্রটি বের না করতে বলছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ওই যুবক হলেন খন্দকার নাসিরুল ইসলাম সমর্থক শাহ মো. জাকারিয়া কাজী (২৫)। তিনি গুনবহা ইউনিয়নের উমরনগর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা জিয়া প্রজন্ম দলের সাধারণ সম্পাদক। এদিকে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তাঁর আরও একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সাবেক সংসদ সদস্য ও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ভিডিওটি আমার সমর্থকদের রামদা কেড়ে নেওয়ার একটি দৃশ্য, আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না।’ পরে আবার তিনি বলেন, ‘আর যদি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই থাকে পুলিশ সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কিছু উপদেষ্টা স্পষ্ট পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, এটা আমরা বুঝতে পারছি: বাবর

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
সভায় ভিডিও কলে সংযুক্ত হন বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সভায় ভিডিও কলে সংযুক্ত হন বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষতার কথা বলছে; কিন্তু কিছু উপদেষ্টা স্পষ্ট পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, এটা আমরা বুঝতে পারছি। সামনে আমাদের একটা বড় সুযোগ আসতে পারে। ক্ষমতায় যাওয়ার সে সুযোগটা যেন আমরা নষ্ট না করি।’

আজ শনিবার দুপুরে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌর বিএনপির পরিচিতি সভায় ভিডিও কলে সংযুক্ত হয়ে বাবর এসব কথা বলেন। শহরের অডিটরিয়াম কাম মাল্টিপারপাস হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাবর বলেন, ‘এখনো কালো মেঘের ছায়া কিন্তু যায়নি, কালো মেঘ খুব ভালোভাবে রয়ে গেছে। অনেক ষড়যন্ত্র রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শেখ হাসিনার প্রথম মামলার রায় হবে। আওয়ামী লীগ এবং পাশের এক পরাশক্তির রাষ্ট্র সাংঘাতিকভাবে লেগে আছে, যেন রায় অথবা নির্বাচন বানচাল করা যায়। এর সঙ্গে কিছু রাজনৈতিক দলও জড়িত রয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় যাব—এটা নিশ্চিতভাবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। তবে আশা তো রাখতেই হবে। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল ও শিষ্টাচার আচরণ করতে হবে। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো সুযোগ নেই। কেউ শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না, এমনকি আমি করলেও না। সবারই রুজি দরকার, কিন্তু এর মানে এই নয় যে, যা খুশি তা করব। সেটা অবশ্যই হালাল পথে, ন্যায্যতার ভিত্তিতে হতে হবে।’

নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বাবর বলেন, ‘সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। ঐক্য ছাড়া কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাই সবাইকে সংগঠনের প্রতি অনুগত থেকে ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিতে হবে। আমরা চাই যেকোনোভাবে বিশৃঙ্খল এ সময়টা পার করে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে। সামনে অনেক বাধা-বিপত্তি আসবে। অনেক কিছু আপনারা দেখতে বা বুঝতে পারেন না; কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত তা মোকাবিলা করছি। সব কথা বলা যায় না, তবে জানিয়ে রাখছি, চ্যালেঞ্জ বড়।’

তরুণদের প্রতি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সময়টা তথ্যপ্রযুক্তির। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবাইকে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। না হলে এ কঠিন প্রতিযোগিতার যুগে টিকে থাকা সম্ভব নয়। সবাইকে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে এবং নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে হবে।’

সভায় মোহনগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সেলিম কার্নায়েন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম এরশাদুর রহমান, পৌর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী পুতুলসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত