Ajker Patrika

কক্সবাজারে ইফতারের আগে যুবক খুনের ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারে ইফতারের আগে যুবক খুনের ঘটনায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

‘তাঁকে ওপরের নির্দেশে মেরে ফেলা হচ্ছে, কেউ তাকে বাঁচাতে আসবে না’—এভাবেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে মোর্শেদ আলীকে (৩৮) পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘর বাজারে দুর্বৃত্তরা মোর্শেদ আলীকে হত্যা করে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার নথি ও পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে একটি সেচ প্রকল্পের বিরোধ নিয়ে মোর্শেদ আলীকে হত্যা করা হয়। নিহতের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক, মাহমুদুল হক, চেরাংঘর বাজার কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলামসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও মামলায় ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন—চেরাংঘর বাজার কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলাম, মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মাহমুদুল হকের দুই ভাগনে জাহেদুল ইসলাম ও মো. ইয়াছিন। গত শুক্রবার রাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পিএমখালীর চেরাংঘর বাজারে ইফতারি কিনতে যায় মোর্শেদ আলী। এ সময় অভিযুক্তরা মোর্শেদকে রাস্তায় ফেলে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তাঁকে হত্যার করার সময় সিরাজুল মোস্তফা উপস্থিত লোকজনদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘তাঁকে মেরে ফেলার জন্য ওপরের নির্দেশ রয়েছে। কেউ কাছে আসবে না।’

এদিকে, মোর্শেদকে হত্যা করার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও থেকে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে শতাধিক মানুষের জটলা। কিন্তু সিরাজুল মোস্তফার ঘোষণার পর কেউই মোর্শেদ আলীকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেচ প্রকল্পের বিরোধেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফা, আবদুল মালেক, মাহমুদুল হকসহ অন্যান্য আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

মামলার বাদী ও নিহতের ভাই জাহেদ আলী জানান, সেচ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণের জন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাঁর ভাইকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফার নির্দেশে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক, মাহমুদুল হক, জয়নাল আবেদীন, কলিম উল্লাহসহ ৩৫ থেকে ৪০ জন তাঁর ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়।

জাহেদ আলী আরও জানান, ইফতারি কিনতে মোর্শেদ আলী চেরাংঘর বাজারে যান। রোজায় ক্লান্ত মোর্শেদের উপর যখন হামলা শুরু হয়, তখন হামলাকারীদের উদ্দেশে মোর্শেদ বারবার বলছিলেন, সারা দিন রোজায় তিনি খুব ক্লান্ত, মারলে যেন ইফতারের পরে মারেন। কিন্তু তাতেও তাঁদের মন গলেনি। ইফতারের আগমুহূর্তে বর্বরভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কেউই রক্ষা পাবে না। তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজদের জায়গা আওয়ামী লীগে নেই। অভিযুক্তদের দল থেকে বহিষ্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত