Ajker Patrika

শাহরাস্তিতে হারিয়ে যাচ্ছে তালের নৌকা

ফয়েজ আহমেদ, শাহরাস্তি (চাঁদপুর)
শাহরাস্তিতে হারিয়ে যাচ্ছে তালের নৌকা

“আমি মেঘনা পাড়ের ছেলে
আমি মেঘনা নদীর নেয়ে। 
মেঘনা নদীর ঢেউয়ের বুকে
তালের নৌকা বেয়ে
আমি বেড়াই হেসে খেলে-
আমি মেঘনা পাড়ের ছেলে”। 

কবি আহসান হাবীবের কবিতায় মেঘনা নদীর বুকে পাহাড়সম ঢেউয়ের মাঝে তালের নৌকা বেয়ে চলার কথা বলা হলেও মেঘনার পাড় চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীতে এখন আর তালের নৌকার দেখা মিলে না। একসময় বর্ষা কালে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল ও জলাশয়ে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি কিংবা হাটে যাওয়া, গরুর ঘাস সংগ্রহ, শাপলা তোলা ও বিল হতে তাল সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হতো তালের নৌকা। যুগের আধুনিকায়নের ফলে গ্রামীণ সড়কের উন্নয়নে সে দৃশ্য একেবারে নেই বললেই চলে। তালের নৌকা চালিয়ে যারা জীবিকা নির্বাহ করতেন তারাও যোগ দিয়েছেন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অন্য পেশায়।

উপজেলার রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের হাটপাড় শহীদ সিদ্দিক স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. বদরুদ্দোজা পাটোয়ারি ফারুক জানান, তালের নৌকা স্থানীয়ভাবে কোন্দা নামে পরিচিত ছিল। এক সময় উপজেলার ঠাকুর বাজার, ওয়ারুক বাজার, সূচীপাড়া বাজার, খিলা বাজার ও চিতোষী বাজারে তালের নৌকার হাট বসতো, আমরা বড়দের সঙ্গে হাটে গিয়ে এসব নৌকা ক্রয়-বিক্রয় হতে দেখেছি। আর এখন বর্তমান যুগের ছেলে মেয়েরা এসবের ছবি দেখেও চিনতে পারছে না। 

সূচীপাড়া ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী উম্মে হাবিবা সায়মা জানান, সে মাঠে তালের নৌকা দেখেছে, তবে কখনো তাতে চড়েনি।

পৌরসভার নোয়াগাঁও গ্রামের সিএনজি অটো চালক মীর হোসেন জানান, ডাকাতিয়া নদীতে ব্রিজ হওয়ায় পর ২৫ বছর ধরেই এ অঞ্চলে নৌকার কদর কমে গেছে। আগে তাদের বাড়ির অনেকেই তালের নৌকা ব্যবহার করতেন, এখন আর করেন না। নিজেও একসময় প্রতিদিন গরুর ঘাস কাটার কাজে এ নৌকা ব্যবহার করতেন।

উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের ঘড়িমন্ডল গ্রামের মোহাম্মদ হোসাইন জানান, তিনি এখনো ঘাস কাটা ও মাঠের মাঝখানের জমি দেখতে তালের নৌকা ব্যবহার করেন। আধুনিক যুগে এসেও পুরোনো এ বাহন চালানো তিনি বেশ উপভোগ করেন।

উপজেলার বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক, দেবকরা গ্রামের অধ্যাপক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটেছে। এক সময় শাহরাস্তি হতে বিভিন্ন এলাকায় মানুষ নৌকায় যাতায়াত করত। বর্তমানে উপজেলায় ডাকাতিয়ার ওপর ৫টি বড় ব্রিজ হয়েছে। যুগের আধুনিকায়নের ফলে মানুষ বিকল্প যানবাহন বেছে নিয়েছে। সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এসব জলবাহন।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের তিন পদে অতিরিক্ত: তিনজনে একজন বাড়তি

ট্রেনের কেবিনের বালিশ, চাদর, কম্বলের ভাড়া দ্বিগুণ করার চিন্তা

ভারতে পোশাকের অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা, বাংলাদেশ-ভিয়েতনামে কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ

মোবাইল-টাকা ছিনতাইয়ের পর দুই তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

ডোপ টেস্টে পজিটিভ, চবিতে শিক্ষকতা থেকে বাদ দুই প্রার্থী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত