Ajker Patrika

পটিয়ার ওসি প্রত্যাহারের পর এবার পুলিশের সংস্কারের দাবি তুলল বৈষম্যবিরোধীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর স্টেশনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ (বৈছাআ) কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর স্টেশনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ (বৈছাআ) কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এবার পুলিশের সংস্কারের দাবি তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ (বৈছাআ) কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর স্টেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।

এর আগে তাঁরা পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এরই মধ্যে বুধবার (২ জুলাই) রাতে পটিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে পুলিশে সংস্কারের দাবি সামনে আনেন তাঁরা।

এদিকে, পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহারের পর ভারপ্রাপ্ত ওসি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন চন্দনাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) যুযুৎ যশ চাকমা। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি দায়িত্ব বুঝে নেন।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপি ও বৈছাআ’র নেতারা বলেন, পুলিশের মধ্যে বর্তমানে নানা অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং জনভোগান্তি বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে এবং পুলিশের ওপর বিশ্বাস কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অবিলম্বে পুলিশের মধ্যে একটি যুগোপযোগী সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করা জরুরি।

তাঁরা বলেন, সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখনই উপযুক্ত সময় পুলিশের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার। যেন ভবিষ্যতে কেউ হয়রানি বা ভোগান্তির শিকার না হয়। জনগণের নিরাপত্তা ও স্বস্তি নিশ্চিত করতে পুলিশের সংস্কার প্রয়োজনীয়।

নেতারা আরও বলেন, পটিয়ার ঘটনায় থানার ওসিকে অপসারণ না করে তাঁকে রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এটি তাঁদের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাঁরা ওসিকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। বক্তাদের মতে, পুলিশের মধ্যে এমন আচরণ ও অনিয়মের সঙ্গে আপস করা হলে পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি ও কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক জোবাইরুল হাসান আরিফ, ইমন সৈয়দ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১ জুলাই) পটিয়া থানায় রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি দীপঙ্কর দেকে ধরে নিয়ে যান এনসিপি ও বৈছাআ নেতাকর্মীরা। তাঁরা দীপঙ্করকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তখন পুলিশ তাঁর নাম–ঠিকানা যাচাই করে কোনো মামলা না থাকায় গ্রেপ্তারে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে পটিয়া থানায় বিক্ষোভ করেন এনসিপি–বৈছাআ নেতাকর্মীরা। এ সময় থানার ভেতরে ব্যাপক হাঙ্গামা হয়। থানার সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই দৃশ্য ধরা পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২ জুলাই) সকালে পটিয়া থানা ঘেরাওয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। দীর্ঘ সাত ঘণ্টা ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। একই দিন দুপুরের পর চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানা এলাকায় অবস্থিত রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় ঘেরাও করা হয়। পাশাপাশি নগরের জাকির হোসেন রোডও অবরোধ করেন নেতাকর্মীরা। এই অবরোধ চলে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১০ বছরে বাবাকে হারাল, ১৭ বছরে নিজেই না ফেরার দেশে

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি      
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে ইয়ামিনের জানাজা। ছবি: আজকের পত্রিকা

অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাল রাজশাহীর বাঘায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কলেজশিক্ষার্থী মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিন (১৭)। আজ বৃহস্পতিবার বাঘা শাহদৌলা সরকারি কলেজমাঠে জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

নিহত ইয়ামিনের দাদা আব্দুর রহমান এছার ইমামতিতে জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, বন্ধু-বান্ধবসহ নানা শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় জানাজায় দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে অনেককে কাঁদতে দেখা যায়।

এর আগে গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাকিন আহমেদ ইয়ামিনের মৃত্যু হয়।

বাঘা ইসলামি একাডেমি উচ্চবিদ্যালয়, কারিগরি ও কৃষি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ামিন পৌরসভার (জিরো পয়েন্ট) মিলিকবাঘা গ্রামের মৃত ইউসুফ বিন মুসার ছেলে এবং বিএনপি নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুনের ভাতিজা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর বাঘা-আড়ানী সড়ক হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন ইয়ামিন। উপজেলার আমোদপুর জামে মসজিদের উত্তর বাঁকের সামনে পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক (খুলনা মেট্রো-ড, ১১-০৩৮৮) পাশ কাটিয়ে বের হওয়ার সময় ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় ইয়ামিন।

আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, পরে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল সিডিএমএ (আইসিইউসি) ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মুসার বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সাত বছর আগে ইউসুফ বিন মুসা এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে ৩৫ বছর বয়সে হৃদ্‌রোগে মারা যান। তখন ইয়ামিনের বয়স হয়েছিল ১০ বছর।

দুর্ঘটনার বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, ঘটনার পর ট্রাক রেখে চালক-হেলপার পালিয়ে যান। পরে ট্রাকটি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত
মেহেদী হাসান। ছবি: সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় মেহেদী হাসান নামের এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গিমাডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মেহেদীকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর।

স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানান, মেহেদী হাসান দৈনিক কালবেলা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল নবধারার সম্পাদক ও প্রকাশক। এ ছাড়া তিনি এর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।

ওসি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের পাকুড়তিয়া বাজারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ মশাল মিছিল বের করা হয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড দিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর ও রাস্তার পাশে থাকা পরিত্যক্ত টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় মেহেদী হাসানের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন টায়ারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ৫১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির কর্মী হাকিম হত্যার পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪, নেপথ্যে বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত
আবদুল হাকিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মদুনাঘাট সেতু এলাকায় রাউজানের ব্যবসায়ী ও বিএনপির কর্মী আবদুল হাকিম হত্যা (৬৫) মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মদুনাঘাটে গত ৭ অক্টোবর আবদুল হাকিম হত্যা মামলার সূত্র উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ। যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সময় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকন, মো. মারুফ, সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমান। সাকলাইন হোসেনকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৩১ অক্টোবর রাউজান থেকে আব্দুল্লাহ খোকন ওরফে ল্যাংড়া খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে ২ নভেম্বর রাউজানের চৌধুরীহাট থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মো. মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেন, যা সাকলাইন হোসেনের হেফাজতে ছিল। ৪ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়ায় সাকলাইন হোসেনের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর আগে হত্যার এ ঘটনায় এর মধ্যে জিয়াউর রহমানসহ চার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১০-১২ জন আসামির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে ব্যবসায়ী হাকিম নিজের গাড়িতে করে চট্টগ্রাম শহরে ফিরছিলেন। মদুনাঘাট সেতুর পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা অস্ত্রধারীরা তাঁর গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও হাটহাজারী থানা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে। হাকিম পাঁচখাইন এলাকার বাসিন্দা এবং রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মো. রাসেল বলেন, রাউজান এলাকার বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এই হত্যাকাণ্ডসহ জেলার অন্যান্য অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট, টহল ও রাত্রিকালীন তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান শুরু, অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরে শতাধিক অবৈধ ইটভাটায় অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রামগতি উপজেলার চর আফজাল এলাকা থেকে শুরু হয় এই অভিযান। দুপুর পর্যন্ত আমানত ইটভাটা, জেসমিন সারোয়ার, আবদুল ওয়াহাবসহ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

পাঁচটি ভেকু মেশিনের সাহায্যে ভাটার চুল্লি, চিমনি ও কাঁচা ইট বিনষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এরপর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় চৌধুরী বাজার এলাকায় রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।

এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকেন তাঁরা।

অভিযানে অংশ নেন রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক জমির উদ্দিন, ঢাকা কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান, রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেনসহ পুলিশ ও র‍্যাবের সদস্যরা।

রামগতি থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লক্ষ্মীপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন, রামগতি ও কমলনগরে ৫১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি ভাটা অবৈধ। জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এসব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। টানা সাত দিন অভিযান চলবে। অবৈধ ভাটা ভেঙে দেওয়ার পরেও যাতে চালু করতে না পারে, সে জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি জেলায় শতাধিক ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, শুধু লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ৫১টি ইটভাটার মধ্যে ৪৯টি ইটভাটার কোনো কাগজপত্র নেই। এগুলো পুরোপুরি অবৈধ। তাই এসব অবৈধ ইটভাটা কোনোভাবে চলতে দেওয়া হবে না। এগুলো সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো শক্তির কাছে মাথা নত করা হবে না।

ইউএনও মো. আমজাদ হোসেন বলেন, সকাল থেকে অভিযান চালিয়ে অবৈধ তিনটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরের পর অন্য ইটভাটায় অভিযানে যাওয়ার সময় শ্রমিকেরা রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত