Ajker Patrika

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি নিহত

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৪, ১৬: ৪২
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি নিহত

সৌদি আরবের আল নাজাদ অঞ্চলের আপিপ শহরে কাজে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সৌদি সময় সকাল ৯টার দিকে আপিপ থেকে নির্মাণকাজে যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত ব্যক্তিদের নাম—সবুজ চৌকিদার (৩৮), মো. সাব্বির (২১) ও মো. রিফাত (২০)। তাঁদের মধ্যে সবুজ গাড়ির চালক ছিলেন। সবুজ চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদু খিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম বিশকাটালী গ্রামের জামাল চৌকিদারের ছেলে। সাব্বির পাশের হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের মো. ইসমাইল সৈয়ালের ছেলে ও রিফাত আলগী উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। 

আজ শুক্রবার সকালে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে মাতম। ঈদুল আজহা আসন্ন সময় এমন শোকাহত ঘটনা প্রত্যেক পরিবারের হৃদয়বিদারক অবস্থা তৈরি হয়েছে। 

জানা গেছে, রিফাত মাত্র তিন বছর আগে গেছেন ওই দেশে। ভবন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তার বাবা দেলোয়া হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। ছেলে যেন বাড়িতে এসে ঈদ করে এই আবদার ছিল। কিন্তু তা আর হলো না।’ 

রিফাতের প্রতিবেশী আল-আমিন খান বলেন, রিফাত খুবই কম বয়সী। এমন দুর্ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। সান্ত্বনা দেয়ার মতো কিছুই নেই। ছেলেটি তাদের সংসারের উপার্জনের হাল ধরেছিল। 

নিহত সাব্বিরের বাবা ইসমাইল সৈয়াল ও মা ফাতেমা বেগমের একটাই দাবি, তাঁদের সন্তানকে দেশে আনার জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতা পাওয়া। সাব্বিরের মা ফাতেমা বেগম ছেলের শোকে কথাও বলতে পারছেন না। অনেকটা বাকরুদ্ধ। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিয়েও মাকে বোঝাতে পারছেন না। কিছু সময় পর পর ছেলের নাম নিয়ে কেঁদে ওঠেন। 

সাব্বিরের ছোট বোন স্নেহা বলেন, ‘ভাই আমাকে ফোনে অনেক স্বপ্নের কথা বলতেন। দেশে আসলে কী কী করবেন। গত কয়েক দিন আগে কল করা হলে আমি দেশে আসার জন্য বলি। কিন্তু ভাইয়ের আর আসা হলো না।’ 

সাব্বির আর রিফাতকে সৌদিতে কাজের জন্য নিয়েছেন সবুজ চৌকিদার। তিনি তাঁদের নিয়ে আপিপ শহর ও আশপাশের এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজ কাঁতেন। নিজেদের গাড়িতে তাঁরা কাজে আসা-যাওয়া করতেন। গাড়ির চালক ছিলেন সবুজ। দুর্ঘটনার সময়ও গাড়ির চালক ছিলেন সবুজ বলে জানান তাঁর বাবা জামাল চৌকিদার। 

জামাল চৌকিদার বলেন, ‘সবুজ প্রায় ১৮ বছর ধরে সৌদিতে থাকে। বেশ কয়েকবার দেশে এসেছে। তার স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান আছে। তাদেরও ভ্রমণ ভিসায় কয়েকবার সৌদিতে নিয়েছে। সর্বশেষ দুই সপ্তাহ আগে দেশ থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সৌদিতে নিয়েছে। তারা এখন সৌদিতে আছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি সময় বিকেল ৪টায় সবুজসহ তিনজনের দুর্ঘটনার খবর পাই। রাত ১০টায় সেখানে অবস্থানরত স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারি দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।’ 

এদিকে সবুজের মৃত্যুতে তাঁর মা ও স্বজনেরা শোকাহত। ছেলের বউ ও নাতনিরা কেমন আছেন—তাদের কথা মনে করেই কেঁদে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই।’ 

এই তিন পরিবারের দাবি, তাদের সন্তানদের মরদেহ আনার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যাতে সহযোগিতা করে। 

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, ‘সৌদিতে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে আমাদের জানালে তাঁদের জন্য যেসব করণীয় আছে, সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

পাকিস্তানে হামলায় ভারত কি ‘ব্রহ্মস’ ছুড়েছিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত